শেষ মূহুর্তে জমে উঠেছে কুলাউড়া পৌর নির্বাচন মা-চাচিগো আমার লাগি দুয়া করিও তোমরার দুয়া ছাড়া কুন্তা অইতো নায়

বিশেষ প্রতিনিধি : শেষ মূহুর্তের প্রচারণায় বেশ জমে উঠেছে কুলাউড়া পৌরসভার নির্বাচন। আর মাত্র ১ দিন পর ১৬ জানুয়ারী ২০ হাজার ৭ শত ৫৯ জন ভোটার আগামী ৫ বছরের জন্য কুলাউড়ার এ গ্রেড পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত করবেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে মেয়র, কাউন্সিলর, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরা মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন ভোটারদের মন জয় করতে। নির্ঘূম প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। পোষ্টারে পোষ্টারে ছেয়ে গেছে পৌরসভার সমস্ত অলিগলি। পোষ্টার আর মাইকিং এর শহরে পরিণত হয়েছে কুলাউড়া পৌর এলাকা। প্রচন্ড শীতকে উপেক্ষা করে রাত বিরাতে ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্র“তি। শুনাচ্ছেন আশার বাণী। রাত বিরাতে গ্রামে গ্রামে ছুটে বয়স্ক মহিলাদের পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে বলছেন ‘ মা-চাচিগো আমার লাগি দুয়া করিও তোমরার দুয়া ছাড়া কুন্তা অইতো নায়’। শহরের প্রতিটি হোটেলসহ এলাকার প্রতিটি চায়ের দোকানে চলছে নির্বাচনী আলাপন। সবার মুখে একটাই কথা কে হচ্ছেন এবার পৌরসভার মেয়র। তবে সাধারন ভোটারদের দাবি, এবার যোগ্য প্রার্থীকেই তারা পৌর পিতা হিসেবে নির্বাচিত করবেন। বিশেষ করে মেয়র পদে ৪ প্রার্থী পৌরসভাকে আধূনিক, পরিকল্পিত নগরায়ন প্রতিষ্টা করতে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা ভোটারদেরকে কাছে তুলে ধরছেন।
মেয়র পদে নির্বাচন করছেন বর্তমান মেয়র ও আওয়ামীলীগের মনোনয়ন বঞ্চিত আলহাজ্ব শফি আলম ইউনুছ ও বিএনপি মনোনীত সাবেক মেয়র কামাল উদ্দিন আহমদ জুনেদ। তাছাড়া আ’লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে প্রথম বারের মতো মেয়র পদে লড়ছেন সাবেক ছাত্রনেতা অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ। অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রবাসী ব্যক্তিত্ব শাজান মিয়া এবার মেয়র পদে লড়ছেন। সবমিলিয়ে ৪ জনই মেয়র পদে নির্বাচিত হতে বিভিন্ন কর্মপরিকল্পার কথা ভোটারদের কাছে উপস্থাপন করছেন।

আ’লীগ প্রার্থী সিপার উদ্দিন আহমদ :
কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র পদে নির্বাচন করতে বিগত ৫ বছর থেকে মাঠে কাজ করে আসছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক, সাপ্তাহিক কুলাউড়া সংলাপ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক, ভাটেরা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ। তিনি ২০১৫ সালের পৌর নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দাবি করেন। কিন্তু মনোনয়ন বঞ্চিত হন। তবে সেই নির্বাচনে তিনি বিদ্রোহী প্রার্থী হননি। পুরো ৫ বছর হাটে, ঘাটে, মাঠে চষে বেড়িয়েছেন। এবার দলের কাছে মনোনয়ন চাইলে নিরাশ হননি। মনোনয়ন প্রত্যাশী তিন প্রার্থীর মধ্য থেকে তাকে চূড়ান্তভাবে দলীয় প্রার্থী নির্বাচন করেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মনোনয়ন পেয়েই প্রচার প্রচারণা ও মানুষের কাছে আরো ব্যাপক ভাবে ছুটে চলেছেন সিপার উদ্দিন আহমদ। দলীয় নেতাকর্মীরা তাঁর সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকাকে বিজয়ী করতে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রচারণাকালে পৌরবাসী তাঁর মত একজন সৎ, আদর্শবান ও জনবান্ধব নেতা পাওয়ায় সাদরে গ্রহন করছেন এবং তাকে আগামী নির্বাচনে বিজয়ের মালা উপহার দিতে নৌকার পক্ষে জনমত তৈরি হচ্ছে বলে তাঁর সমর্থক ও দলীয় নেতাকর্মীদের দাবি।
সিপার উদ্দিন আহমদ উপজেলা ও পৌর আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে প্রতিদিন কোন না কোন এলাকায় চালাচ্ছেন নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা, যাচ্ছেন ভোটারদের বাড়ী বাড়ী। তাদের সাথে মতবিনিময় সভা করছেন নিয়মিত। তিনি “পরিবর্তন উন্নয়ন, পরিকল্পিত নিরাপদ নগরায়ন” এই শ্লোগান নিয়ে একটি আধুনিক পৌরসভা গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। সর্বদা মানুষের পাশে থেকে তাদের সেবা করাটাই তার লক্ষ্য।
সিপার উদ্দিন আহমদ বলেন, পারিবারিকভাবেই আমি আওয়ামীলীগ। আমার জীবনের সবটা সময় উৎসর্গ করেছি আওয়ামীলীগের রাজনীতির পেছনে, জনগণের কল্যাণে। ২০০৪ সালে উপজেলা ছাত্রলীগের সর্ববৃহৎ সম্মেলনের মাধ্যমে ছাত্রলীগ থেকে বিদায় নেওয়ার পর ১৬ বছর ধরে পদবিহীন রাজনীতি করে আসছি। করোনা পরিস্থিতিসহ সকল পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে ছিলাম। কুলাউড়া পৌরবাসী এবার পরিবর্তন চায়। আসন্ন পৌর নির্বাচনে আমার পক্ষে মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করছেন। সিপার উদ্দিন আহমদ রাজনীতি ও শিক্ষকতা পেশা ছাড়াও তিনি অসংখ্য সামাজিক ও ক্রীড়া সংগঠনের সাথে জড়িত।
তিনি কুলাউড়া উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। বাংলাদেশ স্কাউটস মৌলভীবাজার জেলা রোভার’র সহকারি কমিশনার। দীর্ঘদিন থেকে তিনি শ্রমিক রাজনীতির সাথে জড়িত। কুলাউড়া উপজেলা শ্রমিকলীগের যুগ্ম আহবায়ক, জেলা শ্রমিকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। বিগত পৌর নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত মানায় দলীয়নেতাকর্মী ও ভোটারদের কাছে আস্থাশীল হয়ে উঠছেন। তাঁর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে একটি আধুনিক কুলাউড়া পৌরসভা গড়ে তুলবেন বলে ভোটাররা মনে করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে সিপার উদ্দিন আহমদ বলেন, “আমার চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। জনসেবাকে ইবাদত মনে করে পৌরবাসীর কল্যানে নিজেকে উৎসর্গ করেছি। পৌরবাসীর উন্নয়নে একটি মাস্টারপ্ল্যান করবো। স্বাধীনতা সৌধ প্রাঙ্গণকে আধুনিকায়ন, পথচারীরা নিরাপদে চলাচলের জন্য মূল সড়ক থেকে ফুটপাত উঁচু করবো, আউটারে রেল লাইনের পাশের খাল খনন করে বিনোদনের ব্যবস্থা করে দেয়া হবে। বর্তমানে পৌরসভার সম্মুখসহ পৌর এলাকার অসংখ্য স্থানে সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। আমি মেয়র নির্বাচিত হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ড্রেনেজ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করে জলাবদ্ধতা নিরসন করবো। এছাড়াও শিশুদের বিনোদনের জন্য শিশুপার্ক, যানজট নিরসনে বিকল্প সড়ক নির্মাণসহ পৌরবাসির নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি জীবনমান উন্নয়নে প্রতিটি ওয়ার্ডের মানুষের সাথে আলাপ আলোচনা করে একটি আধুনিক পৌরসভা প্রতিষ্টা করাই আমার মূল লক্ষ্য।”

আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী প্রার্থী শফি আলম ইউনুছ :
বর্তমান মেয়র তিনি। গত নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করেও ৪ হাজার ২ শত ৩০ ভোট পেয়ে মেয়র পদে নির্বাচিত হয়ে চমক দেখিয়েছিলেন। তিনি মেয়র পদে অধিষ্টিত হয়েই প্রথমে পৌরসভাকে বি গ্রেড থেকে এ গ্রেডে উন্নীতকরন করেন। এর পর পৌরভবনকে ২য় তলায় রূপান্তরিত করে একটি সিটি কর্পোরেশনের আদলে পৌরভবনকে আধুনিকায়ন করেন।
শফি আলম ইউনুছ বলেন, ‘২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে পৌরবাসী যে আশা আকাংখা নিয়ে আমাকে নির্বাচিত করেছিলেন, আমি সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে পৌরবাসীর ভোটের আমানত রক্ষা করতে সর্বদা সচেষ্ট ছিলাম। তিনি বলেন, পৌরবাসীর অর্পিত দায়িত্বকে আমি ইবাদত মনে করে তা কাঁধে তুলে নিয়ে ছুটে বেরিয়েছি পথে-ঘাটে, মসজিদ-মন্দিরে, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা এমনকি খেলার মাঠেও। তিনি বলেন, ৫ বছর পৌরসভার কাংখিত উন্নয়নের জন্য যথেষ্ট নয়। আমি সাধ্যের সবটুকু উজাড় করে দিয়ে ইবাদত গন্যে আপনাদের জন্য কাজ করার চেষ্টা করেছি। তারপরও এখনো পৌর এলাকার উন্নয়নের অনেক কাজ বাকি রয়েছে। তবে ২৪ বছরের কুলাউড়া পৌরসভার আমার মেয়াদের আগের ১৯ বছর এবং আমার সময়ের ৫ বছরের তুলনামূলক মূল্যায়নের ভার পৌরবাসীর উপর। পৌরবাসীর পবিত্র ভোটের আমানতে পূনরায় নির্বাচিত হলে পৌরসভার কোন কাজ বাকি থাকবে না ইনশাল্লাহ। শফি আলম ইউনুছ বলেন, সারা জীবন নিজের জীবন গড়ার পিছনে থেকে শেষ বয়সে জনসেবাকে ইবাদত মনে করে আমি আপনাদের নিকট বিগত সময়ে ভোট প্রার্থী হয়েছিলাম। আপনাদের পবিত্র ভোটের আমানত আমাকে দেয়ায় জীবনের সর্বোচ্চ সম্মান আপনাদের নিকট হতে পেয়েছি। এর জন্য আমি পৌরবাসীর নিকট কৃতজ্ঞ ও চিরঋণী। জীবন সায়াহ্নে আমি আরো একবার আপনাদের পবিত্র রায়ের প্রত্যাশায় দু’হাত পেতে আপনাদের সামনে দাঁড়িয়েছি। আমার ভালো কাজের পুরস্কার যদি মহান রবের নিকট গৃহিত হয় তাঁর অংশীদার পৌরবাসী সকলেই হবেন।

বিএনপি প্রার্থী কামাল উদ্দিন আহমদ জুনেদ :
বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকে মেয়র পদে নির্বাচন করছেন কামাল উদ্দিন আহমদ জুনেদ। তিনি কুলাউড়া পৌরসভার ২য় নির্বাচনে অর্থাৎ ২০০৪ সালে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচিত হন। পরের নির্বাচনে পুনরায় নির্বাচিত হয়ে একটানা ১২ বছর তিনি পৌরসভার নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, তিনি যখন দায়িত্ব নেন তখন শহরে স্যানিটেশন ব্যবস্থা ছিল অপর্যাপ্ত। জলাবদ্ধতা ছিল পৌরবাসীর দূর্ভোগের কারন। রাস্তাঘাট ছিল নাজুক। তিনি প্রথমবার চেয়ারম্যান হয়েই ১ বছরের মধ্যে পৌরসভায় শতভাগ স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করেন। এর পরে জলাবদ্ধতা দূরীকরনে ব্যাপক প্রকল্প গ্রহন এবং বাস্তবায়ন করে জলাবদ্ধতা নিরসন তাঁর আমলের একটি ব্যাপক সফলতা। তিনি বলেন, যখন তিনি দ্বায়িত্ব নেন তখন শহরে মাত্র ২০ টি লাইট ছিল। তিনি ১২ বছরে পৌরসভার সমস্থ সড়কে সড়ক বাতি স্থাপন করেন। এছাড়াও শোভা বর্ধনের জন্য ফুলসহ বিভিন্ন প্রজাতীর গাছের চারা লাগিয়েছিলেন। পৌরসভার দরিদ্র মানুষ মেয়ের বিয়ে, গরীব শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার যে বা যাহারা পৌরসভায় এসেছেন তাদের সকলকে পৌরসভার তহবিল কখনও নিজের পকেট থেকে অনুদান প্রদান করেছেন। এক প্রশ্নের জবাবে কামাল আহমদ জুনেদ বলেন, রাজনীতি আমার পেশা নয়, নেশা। প্রথমে জাসদ ছাত্রলীগ করে পরে জাতীয় পার্টির রাজনীতি দীর্ঘদিন করলেও দল সঠিকভাবে মূল্যায়ন না করায় তিনি বিএনপির রাজনীতিতে যোগদান করেন এবং দীর্ঘদিন উপজেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বলেন, ‘তিনি দুই মেয়াদের মেয়র থাকাকালে দলমতের উর্ধ্বে থেকে সাধারন মানুষের জন্য কাজ করেছেন। সবার জন্য পৌরসভা ছিল উম্মুক্ত। পৌরবাসী কোন ধরনের বাধা বিপত্তিতে না পড়ে আমার কাছে এসেছেন। যতটুকু পেরেছি সমাধান করেছি। গত ২০১৫ সালের নির্বাচনে সামান্য ভোটে পরাজিত হলেও আমার বিশ্বাস আমার অতীত কর্মকান্ড মূল্যায়ন করে পৌরসভার সম্মানিত জনগন তাদের খেদমতের জন্য এবারও আমাকে বিপুলভোটে মেয়র নির্বাচিত করবেন ইনশাল্লাহ।’
কামাল উদ্দিন আহমদ জুনেদ বলেন, ‘গত নির্বাচনে ৫৪ ভোটে আমি পরাজিত হই। কিন্তু আমার শূন্যতা পৌরবাসী মর্মে মর্মে টের পেয়েছেন। তবে গণতান্ত্রিক ভাবে জয় পরাজয় মেনেই সকলকে চলতে হয়। আমিও আমার পৌরবাসীকে বলেছি, নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস শান্তিপূর্ণ, দলীয় প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আমার বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবেনা। তিনি বলেন, আমার পরিকল্পনার মধ্যে ছিল পৌরবাসীর মধ্যে বিশুদ্ধ পানির স্থায়ী সমাধান করা এবং পৌরবাসীর বাড়ির সংযোগ সড়ক পাকাকরন করাসহ যেসকল রাস্তার করুণ দশা সেগুলি দ্রুত সংস্কার করে পৌরবাসীকে সাচ্ছন্দে চলাচলের সুব্যবস্থা নিশ্চিত করব।’ তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তির এযুগে পৌর এলাকাকে ফ্রি ইন্টারনেটের আওতায় আনা, ব্যবসায়ী সমিতির সাথে একাত্ম হয়ে ব্যবসায়ীদের কল্যানে কাজ করাসহ আধূনিক শান্তি ও নিরাপদ পৌরসভা গঠনই আমার মূল লক্ষ্য। ক্ষেত্রে তিনি প্রশাসন, সাংবাদিক, প্রবাসীসহ সর্বোপরি পৌরবাসী সকলের সার্বিক সহযোগীতা কামনা করেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী শাজান মিয়া :
প্রবাসী প্রার্থী হিসেবে শাজান মিয়া মেয়র পদে এবারের পৌর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া জুগিয়েছেন ভোটারদের মধ্যে। ইতোমধ্যে তিনি পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করেছেন। গত করোনার সময়ে পৌরসভার সকল ওয়ার্ডে গরীব অসহায় মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অনুদান পৌঁছে দিয়েছেন নিজের হাতে করে। পৌর এলাকায় সাধারণ মানুষের পানীয় জলের সমস্যা নিরসনে বেশ কয়েকটি টিউবওয়েল দিয়েছেন। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে গরীব দুঃখী মানুষের জন্য আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন থেকে কাজ করে আসছি। কিন্তু মানুষের ব্যাপক আকারে কল্যাণ করার অভিপ্রায় নিয়ে আমি মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছি।
শাজান মিয়া বলেন, ‘১৯৯২ সাল থেকে প্রবাসে রয়েছি।প্রবাসে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত ছিলাম। বিশেষ করে কুলাউড়া ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশস কাতারের তিন বারের সভাপতি হিসাবে কুলাউড়াবাসী প্রবাসীদের কল্যাণে বিগত ৬/৭ বছর থেকে অবদান রেখে আসছি। এছাড়া জালালাবাদ এসোসিয়েশন কাতারের সহ-সভাপতি হিসাবেও প্রবাসীদের কল্যানে কাজ করে আসছি। তিনি বলেন,আমার পিতা হাজী আপ্তাব আলী গ্রাম সরকার ছিলেন। পিতার জনসেবা দেখে অনুপ্রানিত হয়ে এবং মায়ের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে আমি কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছি। বিশেষ করে আমার পিতা হাজী আপ্তাব আলী কল্যাণ ট্রাষ্টের মাধ্যমে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি মানুষের অনেক চাওয়া। কাজেই সরকারী কোন দায়িত্বে থাকলে মানুষের সেবা বৃহৎ পরিসরে করা যায়। জেলাব্যাপী শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে অনুপ্রেরণা যোগাতে আমার মায়ের নামে হাজী আক্তারুন নেছা মেধা বৃত্তি প্রকল্প চলমান রয়েছে। তাই আমার পৌরবাসীর প্রতি আবেদন; আমাকে মূূল্যায়ন করা হলে আমি আপনাদের ভোটের আমানত রক্ষা করব। ’
শাজান মিয়া বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ঘুরে দেখেছি কিভাবে একটি শহর পরিষ্কার পরিছন্নভাবে সাজানো গোছানো। আর আমি পেশায় একজন ইন্টিরিয়র ডেকোরেশন ব্যবসায়ী। কাজেই আমার কাজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কুলাউড়া পৌরসভাকে একটি ব্যবহার উপযোগী, আধূনিক মানসম্মত, ক্লিন এবং যানজটমুক্ত পৌরসভা উপহার দিতে চাই। এতে আমি সকলের সহযোগীতা কামনা করি। তিনি বলেন, আমি মেয়র নির্বাচিত হলে কুলাউড়া পৌরসভাকে যানজটমুক্ত করব। ড্রেনেজ ব্যবস্থা সম্প্রসারন, ৯ টি ওয়ার্ডে সাপ্লাই সিষ্টেমের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা গ্রহন, ফুটপাতের হকারদের পূণর্বাসন করে ফুটপাত দখলমুক্ত করা, আরও পরিছন্নতাকর্মী নিয়োগ করে প্রতিদিনের ময়লা আবর্জনা প্রতিদিন অপসারন নিশ্চিত করা এবং কুলাউড়ার দুইটি বাজার ২য় তলায় রূপান্তরিত করা সহ শিশুদের চিত্তবিনোদনের জন্য একটি শিশু পার্ক প্রতিষ্টা করার স্বপ্ন নিয়ে আমি কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। সর্বোপরি কুলাউড়া পৌরসভাকে বিদেশের আদলে সুন্দর, পরিছন্ন আধুনিক একটি পৌরসভা প্রতিষ্টা করাই মূল লক্ষ্য। আর লক্ষে আগামী ১৬ জানুয়ারী পৌরবাসীর মূল্যবান ভোট প্রার্থনা করেন উদিয়মান দানশীল এ তরুন ব্যক্তিত্ব শাজান মিয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *