সুলতান মনসুরকে বিষেদাগার করলেন সাংসদ নেছার

বিশেষ প্রতিনিধি : মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নেছার আহমদ কুলাউড়ার সাংসদ সুলতান মনসুরকে বিষেদাগার করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা সুলতান মনসুরকে এক সময় ছাত্রলীগের সভাপতি, আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ডাকসুর ভিপিসহ অনেক কিছু বানিয়েছেন কিন্তুু তিনি দলছুট হয়ে নেত্রী ও দলের ঘোর বিরোধীতা করেছেন। তিনি বেঈমান ও মীরজাফর। ১০ ফেব্রুয়ারি বুধবার দুপুরে কুলাউড়া পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলারদের দায়িত্বভার গ্রহন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথাগুলো বলেন।
সাংসদ নেছার আহমদ বলেন, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া মৌলভীবাজার জেলায় চারটি পৌরসভার মধ্যে তিনটি পৌরসভায় রিটানির্ং অফিসার দেয়া হয়েছে মৌলভীবাজার থেকে। কিন্তুু কুলাউড়া পৌর নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করতে বিএনপি সরকারের আমলে অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শুকুর মাহমুদ মিঞাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে স্থানীয় সাংসদ সুলতান মনসুরের ইন্ধনে। ১/১১ সরকারের সময় প্রায় শতাধিক কর্তার নিয়োগ বাতিল হয়। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে শুকুর মাহমুদের চাকুরী বহাল থেকে যায়। পূর্বপরিকল্পিতভাবে সুলতান মনসুর ঢাকায় অবস্থান করে রিটার্নিং অফিসার শুকুর মাহমুদকে দিয়ে কুলাউড়া পৌরনির্বাচনে নৌকার প্রার্থীকে হারানোর ষড়যন্ত্র করলেও কুলাউড়ার ভোটাররা সেই ষড়যন্ত্রকে প্রত্যাখান করে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করেছে। সেই জন্য কুলাউড়ার সম্মানিত ভোটারদের আমরা শ্রদ্ধা করি।
নেছার আহমদ আরো বলেন, দীর্ঘ ২১ বছর পর কুলাউড়ায় নৌকার বিজয় হয়েছে। এটা আওয়ামীলীগের ঐতিহাসিক বিজয়। জেলার মধ্যে সবচেয়ে রাজনৈতিক সচেতন জায়গা হল কুলাউড়া। অধিক সচেতন হওয়ার পরে এই যে (সামনে নৌকা পেছনে বিরোধীতা) আত্মগাতী ব্যবহার সেটা আর সহ্য করা যাচ্ছেনা। আমরা চাই কম সৈনিক নিয়েও উন্নয়নের স্বার্থে যুদ্ধ করতে রাজি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, কিন্তুু বেঈমানদের সাথে রাখতে রাজি নই। আমরা আগামী দিনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই দেশে উন্নয়নের যে গতিধারা চলছে তাঁর নির্দেশে কুলাউড়ার রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করা হবে।
জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নেছার আহমদ হতাশা প্রকাশ করে বলেন, কুলাউড়া পৌরসভা নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামীলীগের দুই চারজন গুরুত্বপূর্ণ পদধারী নেতা কেন গোপনে গোপনে নৌকার বিরোধিতা করলো সেটা আমরা খুঁজে পাচ্ছিনা। তারা সামনে নৌকা ও পেছনে নৌকার শত্র“তা করেছেন। সেটা কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের নেতারা সেই বিরোধীতার সুস্পষ্ট কারণ জানতে কাজ করছেন। তবে কুলাউড়ায় যারা নৌকার বিরোধীতা করেছেন তারা যেমন নিজেরা ক্ষতিগ্রস্থ হলো তেমনি তাদের ভবিষ্যৎ রাজনীতির অনেক ক্ষতি হলো। কুলাউড়ায় এখনো আমাদের আওয়ামীলীগের গুটিকয়েক নেতৃবৃন্দের সুলতান মনসুরের সাথে যোগসাজশ রয়েছে। আমরা অনেক চেষ্টা করেছি তাদের সেই মীরজাফরের কাছ থেকে দূরে সরানোর জন্য। কিছু বেঈমানদের কারণে নৌকার পরাজয় সবসময় হতো। সকলের সহযোগিতায় নবনির্বাচিত মেয়র সিপার উদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে কুলাউড়া পৌরসভাকে একটি উন্নতমানের ও মডেল পৌরসভা গঠন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কুলাউড়া পৌরসভার আয়োজনে আলোচনা সভায় নবনির্বাচিত মেয়র অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে ও উপজেলা স্কাউট্স সম্পাদক সোহেল আহমদের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান, জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব এম আব্দুর রউফ, মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র মোঃ ফজলুর রহমান, কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সফি আহমদ সলমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেনু, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আসম কামরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) সাদেক কাওসার দস্তগীর, কুলাউড়া থানার অফিসার ইনর্চাজ বিনয় ভূষণ রায়, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি খুরশেদ আলী, সাধারণ সম্পাদক গৌরা দে, কাউন্সিলর জয়নাল আবেদীন বাচ্চু, আতাউর রহমান চৌধুরী ছোহেল প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন পৌরসভার সচিব শরদিন্ধু রায়। এসময় উপস্থিত ছিলেন বরমচাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম খান সুইট, হাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত বাচ্চু, ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মমদুদ হোসেন, কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ রহমান আতিক, ভাটেরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ একেএম নজরুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রলীগ সম্পাদক আবু সায়হাম রুমেল প্রমুখ। দায়িত্বগ্রহণ করে মেয়র অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ বলেন, সকলের সহযোগিতায় কুলাউড়া পৌরসভাকে আধুনিক, নিরাপদ ও পরিকল্পিত নগরায়ন বিনির্মাণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *