কর্মধা ইউপি চেয়ারম্যানকে আ.লীগের প্রার্থীতা না দিতে মনগড়া অভিযোগ! নেতাকর্মীদের প্রতিবাদ

কুলাউড়া প্রতিনিধি : কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যানকে (নৌকার) প্রার্থীতা না দিতে ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজে প্রার্থী হতে কৌশলে মনগড়া অভিযোগ তোলার খবর পাওয়া গেছে।

বিষয়টি খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আসন্ন কর্মধা ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সদস্য, সাবেক ছাত্রনেতা এম এ রহমান আতিক, সংগঠনের ইউপি শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আপ্তাব আলীসহ আরো একজন। ইউপি নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান এম এ রহমান আতিককে দলীয় মনোনয়ন না দিতে ও ইউপি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আপ্তাব আলীকে দলীয় প্রার্থী করতে গোপনে গত জুলাই মাসে একটি সভার আয়োজন করা হয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ইউপি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আপ্তাব আলীর বাড়িতে। সভা আয়োজনের বিষয়ে সংগঠনের অনেক সদস্যকে অবগত করা হয়নি। এতে দলের নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সভায় বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যানকে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ার জন্য একটি মনগড়া অভিযোগ তোলা হয়। ওই সময় সংগঠনের অনেক নেতৃবৃন্দের অজ্ঞাতে অভিযোগটি জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের কাছে দেওয়া হয়। বর্তমান চেয়ারম্যান এম এ রহমান আতিক দলীয় মনোনয়নের জন্য উপজেলা আওয়ামীলীগের নিকট তাঁর জীবন বৃত্তান্ত জমা দেন।
১৭ অক্টোবর মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে দলীয় মনোনয়ন প্রদানে এক বর্ধিত সভা আয়োজন করা হয় কুলাউড়া পৌরসভার হলরুমে। এম এ রহমান আতিকের সমর্থনকারী স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দরাও সেখানে উপস্থিত হোন। এরপর গোপনে অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে মনগড়া ওই পুরাতন অভিযোগ কয়েকটি স্থানীয় অনলাইনে প্রকাশিত হয়। তখন বিষয়টি এম এ রহমান আতিকসহ তাঁর সমর্থনকারী দলীয় নেতাকর্মীরা দেখে বিস্মিত হোন। অথচ দলের সভা আয়োজন করে সিদ্ধান্ত ও অভিযোগ দেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে তাঁরা কিছুই জানেনা। নেতাকর্মীরা সোমবার সন্ধ্যায় কর্মধায় স্থানীয় এক বাড়িতে ওই মনগড়া অভিযোগের প্রতিবাদে এক সভ্ াআয়োজন করে উক্ত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
সভায় উপস্থিত ছিলেন কর্মধা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস শহীদ দুদু, সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক পিন্টু দেবনাথ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবুল কাশেম মিন্টু, কোষাধ্যক্ষ আতাউর রহমান, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক কৃষ্ণ অলমিক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মুজিবুর রহমান, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক স্বপন নাইডু, ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রমেশ নাইডু, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য আব্দুর রশীদ, সবুর মিয়া, মবু মিয়া, মতিউর রহমান, ইউনিয়ন শ্রমিকলীগের সভাপতি তাজুল ইসলাম লাল, ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর ইসলাম সায়েদ, ২নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, আব্দুল হান্নান, ৭নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি জুবের হান্নান, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ছানু মিয়া, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম রুবেল, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নৃত্য মল্লিক, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সদস্য আহনাফ আবিরসহ অসংখ্য নেতাকর্মী।

নেতাকর্মীরা বলেন, এম এ রহমান আতিক কর্মধা ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রথমবার আওয়ামীলীগ দলীয় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান চেয়ারম্যান এম এ রহমান আতিকের জনপ্রিয়তায় ইর্ষান্বিত হয়ে প্রতিপক্ষ প্রার্থীরা নানা ভাবে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছেন। তাঁর সময়কালে কর্মধায় অনেক উন্নয়ন কাজ হয়েছে। মনগড়া একটি অভিযোগ লিখে দলের ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদককে নৌকার প্রার্থী করতে তারা এমন অভিযোগ তুলেছেন। নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী ও দলের সাধারণ সম্পাদক আপ্তাব আলীর নেতৃত্বে যুগ্ম সম্পাদক আশফাক আলী গোপনে গোপনে নেতাকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান এম এ রহমান আতিক যাতে নৌকা প্রতীক না পান সেজন্য তারা একটি লিখিত অভিযোগে নেতাকর্মীদের স্বাক্ষর নিয়েছেন কিন্তুু ইউনিয়ন কমিটির কার্যকরী সদস্যসহ ইউনিয়ন যুবলীগ, শ্রমিকলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সিংহভাগ নেতারা এই অভিযোগের বিষয়ে কিছুই জানেন না। বর্তমান চেয়ারম্যান ৬ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি, কর্মধা উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি, কর্মধা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি, সিলেট মদনমোহন কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এরপর উপজেলা আওয়ামীলীগের বিগত কমিটির সাবেক সদস্যও ছিলেন। তৃণমূল থেকে আওয়ামী ঘরণার রাজনীতি করা এম এ রহমান আতিককে পুনরায় নৌকার কান্ডারী হিসেবে দেখতে চাই।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কর্মধা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মছদ্দর আলী ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আপ্তাব আলী বলেন, কয়েক মাস আগে আমরা একটি সভার আয়োজন করি। ওই সময় সভায় সিদ্ধান্তক্রমে দলীয় নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করায় বর্তমান চেয়ারম্যান এম এ রহমান আতিককে দলীয় মনোনয়ন না দেয়ার জন্য জেলা ও উপজেলা আ’লীগ নেতৃবৃন্দের কাছে একটি অভিযোগ জমা দেই। ওই সময় সভায় কার্যকরী কমিটির সিদ্ধান্তের কপি রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তারা বলেন, এখন এটি দেখাতে পারবো না। এম এ রহমান আতিককে দলীয় মনোনয়ন না দেয়ার বিষয়টি জানালে জেলা নেতৃবৃন্দরা জানান এম এ রহমান আতিক বর্তমান দলীয় চেয়ারম্যানকে বাদ দিয়ে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকা দেয়া সম্ভব নয়। এখন মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকায় উনার নাম রয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কর্মধা ইউপি চেয়ারম্যান এম এ রহমান আতিক বলেন, আমার অজ্ঞাতে গোপনে কয়েক মাস আগে একটি মনগড়া, উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত অভিযোগ করা হয়। আমার জনপ্রিয়তায় ইর্ষান্বিত হয়ে ও মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকায় আমার অবস্থান দেখে প্রতিপক্ষ প্রার্থীরা উপজেলার বর্ধিত সভার পর ওই ভিত্তিহীন অভিযোগের বিষয়টি কয়েকটি স্থানীয় অনলাইনে প্রকাশ হয়। এতদিন পর গোপন সভার বিষয়টি প্রকাশ নিঃসন্দেহে একটি অপপ্রচার। আমি উক্ত বিষয়ের সাথে ভিন্নমত পোষণ করছি। আমি শতভাগ আশাবাদী, তৃণমূল থেকে রাজনীতি করে বেড়ে ওঠা আ’লীগের একজন কর্মী হিসেবে গত নির্বাচনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়েছিলেন। নৌকা নিয়ে বিজয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিয়েছি এবারও আমাকে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন দিলে আমি প্রধানমন্ত্রীকে বিজয় উপহার দিবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *