শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আমাদের করনীয়

চন্দন রবিদাস : বাংলাদেশ সরকার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যেমাত্রা অর্জনে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। এসডিজিতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবুও সমাজে শিশুর প্রতি সহিংসতা বেড়েই চলেছে। শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে আগে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। বাবা মার পরেই রয়েছে শিক্ষকদের স্থান। শিক্ষার্থীরা যাতে শিক্ষককে নিরাপদ মনে করে, তাদের সমস্যা ও ইচ্ছার কথা মন খুলে জানাতে পারে, সে পরিবেশ শিক্ষকদেরই তৈরি করতে হবে। হাফিজা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা মাধুরী মজুমদার বলেন, বাবা মায়ের পরেই আমরা জানি যে, শিক্ষকদের অবস্থান। সেই গুরুদায়িত্বটি নিয়েই আমাদের অবস্থান। আমরা শিক্ষার্থীদেকে এই সহিংসতা প্রতিরোধে  প্রথমত সচেতন করতে হবে বলে আমি মনে করি এবং এ সম্পর্কে ওদের জানাতে হবে তারা যেন কোনো রকম সহিংসতার শিকার না হয় সেজন্য তাদের কে সচেতন করতে গিয়ে আমরা ওদেরকে শিখাতে পারি গুড টাচ ব্যাড টাচ কি,শিশুশ্রম কি। শিশুদের প্রতি কোন আচরনগুলো সহিংসতার মধ্যে পরে সে বিষয়গুলো নিয়ে আমরা তাদের সচেতন করতে পারি। যৌন শোষণ শিশুর ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে যৌন ব্যবসায় লিপ্ত করা,প্রলোভন ,ভয় দেখিয়ে যৌন সর্ম্পকে লিপ্ত করা ইত্যাদি আচরণ শোষণের মধ্যে পড়ে । লালসাপূর্ণ দৃষ্টিতে শিশুকে দেখা অশালীন কথা বলা,জোর করে শিশুর স্পর্শকাতর অঙ্গে স্পর্শ করা,পর্নোগ্রাফি দেখানো বা দেখতে বাধ্য করা,অশ্লীল ছবি বা ভিডিও প্রেরণ করা ইত্যাদি শিশুর যৌননিপীড়ন। শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে কি ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত সে সম্পর্কে জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন মাসুদ বলেন, শিশুর প্রতি সহিংসতা যতই দিন যাচ্ছে ততই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। আমরা এই করোনাকালীন সময়টা পার করছি,এই সময়ে অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন,অনেকে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছেন। কিন্তু সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমাদের শিশুরা। কারন বাংলাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিলো প্রায় দেড় বছর। আর এই দেড় বছরে শিশুরা অনেক ট্রমার ভিতর দিয়ে গিয়েছে। দীর্ঘ একটা ট্রমার ভিতর দিয়ে কাটাতে গিয়ে তারা তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে পর্যন্ত বিভিন্ন সময় নাজেহাল হয়েছে। বিভিন্ন রুক্ষ কথার সম্মুখীন হয়েছে। তারা শুধু যে কথা শুনেছে,গালিগালাজ শুনেছে তাই শুধু নয় তারা বিভিন্নভাবে সহিংসতার শিকার হয়েছে। এই সহিংসতা শুধু করোনকালীন সময়ে নয় করোনকালীন সময় ছাড়াও আমাদের শিশুরা সহিংসতার সম্মুখীন হচ্ছে। করোনাকালীন সময়ে সবাই ঘরে ছিলো তখন কিন্তু বাল্যবিয়ে হয়েছে এটাও কিন্তু সহিংসতা।

এগুলোর সমাধানের পথ আমাদেরকে খুজতে হবে। যারা শিক্ষক আছেন তারা তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিশুদেরকে এসব ব্যাপারে সচেতন করবেন। কেন তারা সহিংসতার শিকার হয়,কিভাবে তারা এ থেকে বাঁচবে,তাদেরকে আমরা জ্ঞান দিতে পারি স্কুলে বা অভিভাবক যারা আছি। আমরা যারা সেবাদানকারী আছি আমরা যেন তাদেরকে সঠিক তথ্যটা দিতে পারি। শিশু তার জীবনকে চিনতে শুরু করে মা-বাবার চোখ দিয়ে,ভালো-মন্দ বুঝতে শেখে মা-বাবার নীতিবোধ দিয়ে । মা-বাবাই পারেন সন্তানকে নৈতিক শিক্ষা দিতে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শিশুদের জন্য নিরাপদ আবাস গড়ে তোলা সম্ভব ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *