মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : মৌলভীবাজার সদরের চৌমুহনী পয়েন্টে কাজের উদ্দেশ্যে আসা মাটিকাটার শ্রমিকদের মাঝে বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে শুকনো খাবার বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান। এসময় উপস্থিত ছিলেন রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর অর্ণব মালাকার, সহকারী কমিশনার সৈয়দ সাফকাত আলী, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ছাদু মিয়া প্রমুখ।
এসময় প্রায় ২০০ জন শ্রমিকের মাঝে ২০০ প্যাকেট খাবার বিতরণ করা হয়। প্রতি শুকনো খাবারের প্যাকেটে ছিল চাল-১০ কেজি, ডাল- ১ কেজি, লবণ- ১ কেজি, চিনি- ১ কেজি, চিড়া- ২ কেজি, সয়াবিন তেল- ২ কেজি, নুডুস- ০.৫ কেজি।
জানা গেছে, মৌলভীবাজার চৌমুহনীতে নিয়মিত কাজের সন্ধানে ছুটে আসা মাটি কাটার শ্রমিকদের হাট বসে। এরা সবাই মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকার। প্রতিদিন কয়েকশত শ্রমিক মাটি কাটার কোদাল ও টুকরি নিয়ে বসে পড়েন। এসময় যাদের কাজের প্রয়োজন সেই সকল ব্যক্তি শ্রমিকদের সাথে দৈনিক মজুরি ৫৫০-৮০০ টাকা ভিত্তিতে নির্ধারণ করে শ্রমিক নেন। দুইবছর আগে ৩৫০-৪০০ টাকা ছিল কাজের মজুরী, এখন ৮০০ টাকা মজুরী পেলেও শ্রমিকদের পুষেনা, কারণ তাদের পরিবারে সদস্য সংখ্যা অনেক বেশি। জিনিসপত্রের দামও বেশি। এরমধ্যে কেউ কাজ পায় আবার কেউ কাজ না পেয়ে হতাশায় বাড়ি ফিরে যায়। অবশেষে তাদের পাশে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন।
শ্রমিক জালাল মিয়া বলেন, মৌলভীবাজার চৌমুহনীতে তিনদিন ধরে সকাল ৬টা থেকে কোদাল আর টুকরি নিয়ে অপেক্ষা করছিলাম কাজের জন্য, কিন্তু কোন কাজ পাইনি। ছয় সদস্যের পরিবারে কাজ না করলে আমরা খাবো কি। এই কষ্টের কথা শুনে ডিসি স্যার আমাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে খাবার নিয়ে এসেছেন। এখন না হয় কিছুদিন ছেলে-
মেয়েদের নিয়ে খেতে পারবো, রোজা রাখতে পারবো।

আরেক শ্রমিক দুলাল মিয়া বলেন, ভোর বেলায় বের হই কাজের সন্ধানে, কিন্ত কাজ নেই, তারপরও রমজানে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে অনেক। জেলা প্রশাসন আমাদের দিকে ফিরে তাকাইছেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে খাবার দিয়েছেন, এই খাবার পরিবারের আমাদের কষ্ট কিছুটা লাঘব করবে।
জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে জেনেছি মৌলভীবাজারের চৌমুহনী পয়েন্টে কাজের সন্ধানে শত শত শ্রমিক জড়ো হন। কেউ কাজ পায় আবার কেউ পায়না। এটা খুবই মানবিক বিষয়। স্বচক্ষে আজ তাদের বিষয়টি দেখতে গিয়েছি। এসময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ২শত শ্রমিকদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করি। পর্যায়ক্রমে অপেক্ষামান আরো শ্রমিকদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হবে।