হাকালুকির হাওরের বিভিন্ন বিলে শীতে পাখি কমে গেছে

আব্দুর রব : প্রতি বছর শীতের শুরুতেই দেশের সর্ববৃহৎ হাওর হাকালুকির বিভিন্ন বিল (জলাশয়) অতিথি পাখির কলকাকলিতে মূখর হয়ে উঠে। কিন্তু এবার ঘটেছে এর ব্যতিক্রম। ভর মৌসুমেও হাওরের কোন বিলেই নেই অতিথি পাখির দেখা। বিশেষজ্ঞদের মতে অসাধুদের বিষটোপ, ফাঁদ পেতে শিকার ও ইঞ্জিন নৌকার অবাধ চলাচলে সৃষ্ট মারাত্মক শব্দ দুষণের কারণে অতিথি পাখিরা হাকালুকির প্রতি বিমূখ হয়েছে।

জানা গেছে, দেশের যে কয়টি স্থানে অতিথি পাখির সমাগম ঘটে তার মধ্যে হাকালুকি হাওর অন্যতম। এখানে রয়েছে প্রায় পৌনে ৩শ’ মৎস্য বিল। একেকটি জলাশয়ের আয়তন ৫ একর থেকে ২ হাজার একর পর্যন্ত। প্রতিবছরের মধ্য অক্টোবর থেকে অতিথি পাখির আগমন শুরু হয় হাকালুকি হাওরের বিলগুলোতে। তখন সাইবেরিয়া, চীন, তিব্বতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ছুটে আসা হাজার হাজার অতিথি পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুখর হয়ে উঠে হাওর এলাকা। কিন্তু এবার ঘটেছে এর ব্যতিক্রম। শীত শুরুর প্রায় ১ মাস অতিবাহিত হলেও হাওরের বিলগুলোতে নেই কোন অতিথি পাখি।

৪ ডিসেম্বর শুক্রবার হাকালুকির জলা, বালিজুরি, পলোভাঙ্গা, গোটাউরা হাওরখাল (বদ্দ) ও পোয়ালা বিল ঘুরে   কোথাও অতিথি পাখির দেখা মিলেনি। অথচ প্রতি বছর শীত শুরু হলেই খাদ্যের সন্ধানে এসব বিলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ছুটে আসা নানা প্রজাতির রঙ বেরঙের লাখো অতিথি পাখির সমাগম ঘটতো। পাখিগুলোর অবাধ বিচরনে অন্যরকম সৌন্দর্য ফুঠে উঠে হাওরের বিলগুলোতে। এবার এখনও অতিথি পাখির আগমন না ঘটায় উদ্বিগ্ন পাখি প্রেমীরা। বড়লেখা সরকারী কলেজের সহযোগি অধ্যাপক নিয়াজ উদ্দীন জানান, অসাধুদের বিষটোপ আর পাতানো ফাঁদে মারা পড়ে হাজার হাজার পাখি। ফলে প্রতি বছরই পাখির সমাগম হ্রাস পাচ্ছে। বিপন্ন হয়ে পড়ছে নানা প্রজাতির দেশি বিদেশী পাখি। কিন্তু এবার শীত শুরুর ২০-২৫ দিন পরও অতিথি পাখি না আসা পরিবেশের অসনি সংকেত হতে পারে। হাওরে ইঞ্জিন নৌকার চলাচল অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে মারাত্মক শব্দ দুষণ হচ্ছে। হাকালুকির প্রতি অতিথি পাখির বিমূখ হওয়ার এটিও অন্যতম কারণ বলে মনে করেন এনজিও কর্মী জেরিন বেগম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *