কুলাউড়া প্রতিনিধি : কুলাউড়ায় ক্যান্সার আক্রান্ত রোগি হাফিজ হেলাল আহমদ তার ডাক্তারি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও চিকিৎসা তহবিলের টাকার হিসাব চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
এছাড়াও আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে তার হিসাব নিকাশ ও ডাক্তারের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র অভিযুক্তরা যদি না দেয় তাহলে দীর্ঘ অনশনের হুমকি দিয়েছেন তিনি।
০৭ ডিসেম্বের সোমবার দুপুরে স্থানীয় একটি রেস্তোরায় স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি এ দাবী তুলে ধরেন। এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মা-বাবা ছাড়াও ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম ।
হাফিজ হেলাল আহমদ জানান, ২০১৬ সালে তার শরীরে ক্যান্সার রোগ ধরা পড়ে। পরে ডাক্তাররা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু অসহায় দরিদ্র হেলাল অর্থের অভাবে তার পক্ষে বাহিরে গিয়ে চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়ে উঠেনি। এক পর্যায়ে তার চিকিৎসার জন্য সে নিজে স্থানীয় সম্মানিত ব্যাক্তিবর্গের দারস্থ হয়। পরে গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সিদ্ধান্তক্রমে হেলাল আহমদ চিকিৎসা তহবিল নামে একটি ব্যাংক একাউন্ট যার নং-১৮৫১৯০৬ ইসলামী ব্যাংক কুলাউড়া শাখায় খোলা হয়। সবার মতামতের বৃত্তিতে আব্দুল ওয়াহিদ আবুল মিয়ার নামে ও ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম আবুলকে নমিনি করে এই একাউন্টটি চালু করা হয়। এবং তার চিকিৎসা তহবিল গঠনের জন্য দেশ বিদেশ থেকে অর্থ সংগ্রহের দায়িত্ব দেয়া হয় আতিকুর রহমান আখই,হাফিজ বদরুল ইসলামকে। হেলালের দাবী বিভিন্ন দাতাদের কাছ থেকে দায়িত্ব¡প্রাপ্তরা তার চিকিৎসা তহবিল গঠনের জন্য ব্যাংক একাউন্ট,গোপন পিন কোডের মাধ্যমে মোট ১৮ লক্ষ ৪৭ হাজার ৭ শত ৩৭ টাকা অর্থ সংগ্রহ করা হয়। আমি চিৎিসা নিতে বিভিন্ন সময়ে ভারতে অবস্থানকালীন এসব টাকা কোথায় কিভাবে খরছ হয়েছে তা শুধু তারাই বলতে পারবে। একপর্যায়ে ভারতে দীর্ঘ ৫ মাস চিকিৎসার পর ডাক্তারের পরামর্শে ২০১৬ সালের ১৬ নভেম্বর দেশে ফিরলে পরের দিন অনেকটা তড়িঘড়ি করে বদরুল ও আখই গংরা আশেকানে ফুলতলীর ব্যানারে আমাকে দিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করে। তাদের লিখিত একটি কাগজে অর্থের হিসাব দেখানো হয় মোট ৯ লক্ষ ২০ হাজার টাকা তহবিলে জমা হয়েছে। সেখান থেকে আমার চিকিৎসা ব্যয় ৮ লক্ষ ৫৩ হাজার টাকা দেখানো হয়। আমি দেশে আসার পর বিভিন্ন প্রবাসীদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে জানতে পারি কে কতো টাকা দিয়েছে। সেই হিসাবে আমার চিকিৎসা তহবিলের নামে টাকার যে হিসাব পেয়েছি সেখানে বড় ধরনের গড়মিল দেখা যায়। কিছুদিন পর ডাক্তারের পরামর্শে আমার আরেকটি অপারেশনের প্রয়োজন পড়ে। এরমধ্যে একাউন্ট পরিচালনাকারী আব্দুল ওয়াহিদ আবুল মিয়া মারা যান। একপর্যায় ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম,আতিকুর রহমান আখই ও বদরুল ইসলামের কাছে থাকা চিকিৎসকের কাগজপত্র ও টাকা দেওয়ার জন্য যোগাযোগ করলে তারা তা দিতে টালবাহানা শুরু করেন। এনিয়ে কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি/সম্পাদকের কাছে গত ১৩ সেপ্টেম্বর তাদের বিরুদ্ধে একটি লিখিত আবেদন করলে তারা ০৪ অক্টোবর বিবাদিদেরকে নিয়ে একটি বৈঠক করেন। কিন্তু তাতে কোন সুষ্ট সমাধান পায়নি হেলাল। বরং ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা চিকিৎসা তহবিলের ব্যাংক লেনদেন যাচাই করতে একটি স্টেটম্যান্ট তুলেন সেখানে দেখা যায় ওই একাউন্টে ১১ লক্ষ ৪৯ হাজার ১ শত ৫২ টাকা জমা হয়েছে। এছাড়াও বিকাশ (০১৭১২৭৮০৫৩২) নাম্বার সহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্টান থেকে তহবিলের নামে উত্তোলিত টাকার হিসাব তিনি এখনও পাননি। তিনি তার চিকিৎসার জরুরী কাগজপত্র ও চিকিৎসার নামে আসা অর্থ তহবিলের সঠিক হিসাব নিকাশ পাওয়ার জন্য সকলের সহযোগীতা কামনা করেন।
ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম আবুল জানান,টাকা পয়সার কোন লেনদেন আমার মাধ্যমে হয়নি। একাউন্ট পরিচালনাকারী আব্দুল ওয়াহিদ আবুল মিয়া সম্পর্কে হেলালের নানা। তিনি সব লেনদে করেছেন। টাকা লেনদেনের বিষয়ে আমি অবগত নয়। হাফিজ বদরুল ইসলাম জানান, হেলাল আমাদের কাছে দাবী করে তার আজীবন চিকিৎসার দায়িত্ব আমরা নিতে। সে বর্তমানে ক্যান্সার মুক্ত। আমরা তার এই অযৌক্তিক দাবী মেনে নেইনি। যার কারনে সে আমাদের বিরুদ্ধে এখন এসব কুৎসা রটাচ্ছে। আতিকুর রহমান আখই জানান, টাকা পয়সার লেনদেনের বিষয় আমি জানি না। একাউন্ট আমার নামে নয়। যার নামে একাউন্ট তিনি ভালো বলতে পারবেন।