কুলাউড়া প্রতিনিধিঃ কুলাউড়ায় নিখোঁজের চারদিন পর আব্দুল মনাফ (৩২) নামে এক ব্যবসায়ীর গলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনার সাথে জড়িত ৬ জনকে গ্রেফতার করে বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহত আব্দুল মনাফ উপজেলার ভূকশিমইল ইউনিয়নের মীরশংকর গ্রামের বাসিন্দা মৃত ইয়াকুব আলীর ছেলে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই আজির উদ্দিন ঘটনার সাথে জড়িত ৭ জনকে অভিযুক্ত করে বুধবার সকালে কুলাউড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন ভূকশিমইল ইউনিয়নের মীরশংকর গ্রামের মৃত মাহমুদ আলীর ছেলে ও নিহত মনাফের চাচাতো ভাই শাহিনুর রহমান শাহিদ (৪০), মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে নিহত মনাফের খালাতো ভাই সামছুদ্দিন (৪২), মৃত মাহমুদ আলীর ছেলে আতিকুর রহমান চান মিয়া (৫০), মোঃ ফজলু মিয়া (৪৫), ফজলু মিয়ার ছেলে ফয়েজ আহমদ (২২), মৃত চুনু মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (২৩)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১২ ডিসেম্বর শনিবার কুলাউড়া পৌর শহরের মিলিপ্লাজার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল মনাফ নিখোঁজ হন। পরে তাঁর পরিবারের স্বজনরা আত্মীয়-স্বজনসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরবর্তীতে অনেক খোঁজাখুঁজির পর মনাফের কোন খোঁজ না পাওয়ায় তাঁর ভাই আজির উদ্দিন কুলাউড়া থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী করেন।
এরপর কুলাউড়া থানা পুলিশ সোর্সের দেওয়া তথ্য মতে মামলার প্রধান আসামী শাহিনুর রহমানের বসত ঘরের পিছনের টয়লেট ট্যাংকির ভেতর থেকে নিহত মনাফের ব্যবহৃত ম্যানিব্যাগ, জাতীয় পরিচয়পত্রসহ কিছু আলামত উদ্ধার করে পুলিশ। তখন সন্দেহজনক ভাবে প্রধান আসামী শাহিনুর রহমানকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ব্যবসায়ী মনাফকে হত্যার কথা স্বীকার করে জানায়, ঘটনার দিন শনিবার রাত আনুমানিক ১০টায় মনাফের বাড়ির সম্মুখে তারা সকলে মিলে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মনাফের মাথায় স্বজোরে আঘাত করলে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মনাফের চাচাতো ভাই শাহিনুর রহমানের দেয়া তথ্যমতে রাত সাড়ে ১১টার দিকে মনাফের বাড়ির পাশে একটি টয়লেট ট্যাংকির পাশ থেকে গর্তের মাটি সরিয়ে তাঁর গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সফি আহমদ সলমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) সাদেক কাওসার দস্তগীর, কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিনয় ভূষণ রায়, ওসি (তদন্ত) আমিনুল ইসলামসহ থানা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
কুলাউড়া থানার অফিসার্স ইনর্চাজ বিনয় ভূষণ রায় জানান, নিহত মনাফের সুরতহাল শেষে লাশ ময়না তদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৭ জনকে অভিযুক্ত করে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ৬ আসামীকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামীকে ধরতে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।