এম. অাতিকুর রহমান অাখই : সাম্প্রতিক সময়ে সড়ক দুর্ঘটনা মহামারী অাকার ধারণ করেছে।প্রতিদিনই খালি হচ্ছে কোন না কোন মায়ের বুক। অকালে জীবন দিচ্ছেন, কিশোর যুবক বৃদ্ধ সহ নানা বয়সের মানুষ। বিশেষ করে সড়ক দুর্ঘটনায় উটতি বয়সের ছেলেদের প্রাণ যাচ্ছে অনায়াসে। স্কুল কলেজের ছাএরা বেপরোয়া মটর সাইকেল চালাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বেপরোয়া গতিতে যানবাহন চালানো, বিপজ্জনক ওভারটেক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন, অদক্ষ ও মাদকাসক্ত চালক কর্তৃক গাড়ি চালানো, রাস্তাঘাট নির্মাণে ত্রুটি, পথচারী-সেতু ব্যবহার না করা, ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা পারাপার ও আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। দুর্ঘটনার এত সব কারণ জানা থাকা সত্ত্বেও শৃঙ্খলা ফেরে না সড়কে, যা খুবই দুঃখজনক। ২০১৮ সালে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে প্রধানমন্ত্রী দূরপাল্লার বাসযাত্রায় বিকল্প চালক রাখা, পাঁচ ঘণ্টা পরপর চালক পরিবর্তন করা, চালক ও সহযোগীদের প্রশিক্ষণ, চালক ও যাত্রীদের সিটবেল্ট রাখা এবং মহাসড়কের পাশে চালকের জন্য বিশ্রামাগার রাখা—এই পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন। বলতে গেলে সেগুলোও মানা হয় না, যা অনাকাঙ্ক্ষিত সড়ক দুর্ঘটনা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো কঠিন নয়, দরকার শুধু আমাদের প্রয়োজনীয় কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন। অনাকাঙ্ক্ষিত সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে নিচের পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।
১. সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিআরটিএ থেকে দুর্নীতি সমূলে উৎপাটন করার বিকল্প নেই।
২. চালকদের বেপরোয়া প্রতিযোগিতার মনোভাব ও গতি রুখতে সচেতনতা ও প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিতে বলা হলেও কর্তৃপক্ষ বরাবরই যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়। সুতরাং কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগ নিতে হবে।
৩. লাইসেন্স ও ফিটনেসবিহীন গাড়ির চলাচল নিষিদ্ধ করতে হবে এবং নতুন করে যেন লাইসেন্সবিহীন ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল করতে না পারে, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
৪. নির্মাণ ত্রুটির কারণে সড়কে যে দুর্ঘটনাপ্রবণ মোড় রয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত সংস্কার করতে হবে।
৫. ট্রাফিক আইনকে কার্যকর করা, ঘুষমুক্ত রাখা ও চালকদের ট্রাফিক আইন সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকা জরুরি। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমগুলোতে ট্রাফিক আইন সম্পর্কে এমনভাবে প্রচারণা করতে হবে, যাতে সবার দৃষ্টিগোচর হয়।
৬. সড়কে পুলিশ ও মোবাইল কোর্টকে আরও বেশি সক্রিয় করে তুলতে হবে।
এম. অাতিকুর রহমান অাখই-বার্তা প্রধান, কেবিসি নিউজ