কামরুল হাসান নোমান : মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে প্রায় তিন বছর আগে ৩১শয্যা থেকে ৫০শয্যায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু ৫০ শয্যার জন্য যে সকল জনবল প্রয়োজন তা দেওয়া হয়নি। হাসপাতালটি চলছে ৩১ শয্যার জনবলে। যেখানে ৩১ শয্যার জনবলেই রয়েছে সংকট। জনবল সংকটের এ ঘাটতি নিয়ে জোড়াতালি দিয়ে উপজেলা বাসীর সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টম্বরে হাসপাতালটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করে প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু করা হলেও তার আলোকে এখনো পর্যন্ত পদ সৃজন করা হয়নি। বর্তমানে ৩১ শয্যার আলোকেই লোকবলের প্রকট সংকট রয়েছে। বিশেষ করে চিকিৎসক ও নার্স সংকট বেশী। হাসপাতালে করোনা রোগীর জন্য ১০ বেডের আইসোলেশন ইউনিট চালু করা হলেও জনবল সংকটের কারনে সেখানে একই সাথে সাধারন ও করোনা রোগীর চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে না। শুধুমাত্র হাসপাতালে করোনা রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে নিজ নিজ বাড়ীতে আইসোলেশনে পাঠানো হয়। এজন্য করোনা ইউনিটের বেডগুলো খালি পড়ে আছে। এ অবস্থায় করোনা রোগীরা পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। হাসপাতালটিতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও জনবলের অভাবে অপারেশন থিয়েটার (ওটি) চালু করা যাচ্ছে না। এতে ওটির যন্ত্রপাতি দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত থাকায় নষ্ট হচ্ছে। হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) একজন থাকার কথা থাকলেও পদটি শূণ্য রয়েছে। জুনিয়র কনসালটেন্ট ৪ জনের মধ্যে রয়েছেন ১ জন। তিনিও প্রেষণে মৌলভীবাজারে থাকেন। হাসপাতালটিতে মেডিকেল অফিসার রয়েছেন মাত্র ২জন। নার্স ১৪ জনের মধ্যে রয়েছেন ৪ জন বাকী ১০টি পদই শূণ্য। নার্সিং সুপারভাইজার ১ জন থাকার কথা থাকলেও সেটিও খালি। উপসহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার (স্যাকমো) ৫ জনের জায়গায় আছেন ১ জন। সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ৬ জনের মধ্যে রয়েছেন ৩ জন, স্বাস্থ্য পরিদর্শক ৩জনের একজনও নেই, মিডওয়াইফ ৪ জনের মধ্যে ৩ জন রয়েছেন। হাসপাতালটিতে ৮-১০ জন আয়া থাকার কথা থাকলেও একজনও নেই। বর্তমানে স্বেচ্ছাশ্রমে একজন পরিচ্ছন্নতার কাজটি করছেন। হাসপাতাল ল্যাবের মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট পদটিও খালি রয়েছে। এছাড়াও হাসপাতালে ১৭টি অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ১টি এক্সরে মেশিন রয়েছে। তবে বর্তমানে সেটা শুধুমাত্র যক্ষা রোগ নির্ণয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে। মেশিনটি পরিচালনার জন্য আইইডিসিআর প্রকল্পের অধীনে অস্থায়ীভাবে একজন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (রেডিওগ্রাফি) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
জনবল সংকটের ঘাটতির কথা নিশ্চিত করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সমরজিৎ সিংহ বলেন, ৫০ শয্যার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল এখনো দেওয়া হয়নি। কিন্তু হাসপাতালটির কাজ হচ্ছে ৩১ শয্যার জনবল দিয়ে। ৩১ শয্যার জনবলেও সংকট আছে। জনবলের ঘাটতি নিয়েও আমরা মানুষকে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। যদি ৫০ শয্যার জনবল দেওয়া হয় তাহলে উপজেলাবাসীকে ভালো চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।