মাহফুজ শাকিল : “স্মার্টফোনে আসক্তি! পড়াশোনার ক্ষতি” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে (৫-৬ জানুয়ারি) দুইদিন ব্যাপী ৪৩তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ সম্পন্ন হয়েছে। উপজেলার ১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নিজেদের তৈরি পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন উদ্ভাবন মেলায় প্রদর্শন করে।
বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) নবীন চন্দ্র সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক মো. সুহেল আহমদের পরিচালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সফি আহমদ সলমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আনোয়ার, কুলাউড়া সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আব্দুল হান্নান, লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আতাউর রহমান, বরমচাল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফজলুল হক, একাডেমীক সুপারভাইজার মো. শফিকুল ইসলাম, নবীন চন্দ্র সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোবারক হোসেন, কুলাউড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. জসিম উদ্দিন প্রমুখ। অনুষ্ঠান শেষে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, বিচারকদের পর্যালোচনার মাধ্যমে ১২টি স্টলের মধ্যে সিনিয়র গ্রুপে সেরা হয়েছে লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজ। জুনিয়র গ্রুপে প্রথম হয়েছে নবীন চন্দ্র সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, দ্বিতীয় হয়েছে কুলাউড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও তৃতীয় হয়েছে মহতোছিন আলী উচ্চ বিদ্যালয়।
সরেজমিন দেখা গেছে, নবীন চন্দ্র সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় দল পরিবেশের মাধ্যমে পরিত্যক্ত জিনিস ব্যবহারের মাধ্যমে পেট্রোলিয়াম, গ্যাস ও বিদ্যুৎ উৎপাদন, পানির পুনঃ ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন, লাভজনক মৎস্য চাষ প্রকল্প, ডিজিটাল শহর পরিকল্পনা প্রনয়ন, কুলাউড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় দল কোভিড-১৯ সুরক্ষা সিটি ও গ্রিন ইলেকট্রিসিটি, লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজ দল সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে স্ট্রিট লাইটের ব্যতিক্রমী ব্যবহার ও ঘরোয়া পদ্ধতিতে ওয়াটার ফিল্টার তৈরি, অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয় দল করোনা আইসোলেশন সেন্টার, হিঙ্গাজিয়া উচ্চ বিদ্যালয় দল পলিথিন পুড়িয়ে পেট্রোল ও গ্যাস উৎপাদন, টিলাগাঁও এ এন উচ্চ বিদ্যালয় দল টারবাইন ঘুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ বিভিন্ন ব্যতিক্রমী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উদ্ভাবন প্রদর্শন করেন। এই উদ্ভাবনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেখা গেছে। তারা প্রত্যেকই একেকজন ক্ষুদে বিজ্ঞানী হতে চান বলে জানান।
এদিকে বিজ্ঞান বিষয়ক বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় (“স্মার্টফোনে আসক্তি! পড়াশোনার ক্ষতি”) বিষয়ে সিনিয়র গ্রুপে প্রথম হয়েছে লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী মার্জিয়া আক্তার, দ্বিতীয় নন্দিতা পাশি ও তৃতীয় তানিয়া তাবাসুম। জুনিয়র গ্রুপে প্রথম হয়েছে কুলাউড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তূর্ণা দে, দ্বিতীয় হয়েছে মহতোছিন আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আল মুমিন জাকির ও তৃতীয় হয়েছে কুলাউড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুরাইয়া ফেরদৌস।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আনোয়ার বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্টপোষকতায় ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের তত্ত্বাবধানে দুইদিনব্যাপী অনুষ্ঠানে উপজেলার ১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। করোনার কারণে নির্দেশনা থাকায় সীমিত পরিসরে মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
