এক পায়ে ১ কিলোমিটার হেঁটে স্কুলে যায় ১০ বছরের মেয়েটি

অনলাইন ডেস্ক : অন্য অনেক শিশুর মতো ১০ বছর বয়সি সীমাও স্কুলে যায়। তবে, সে কোনো সাধারণ মেয়ে নয়। এক পায়ে হেঁটে প্রতিদিন এক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে স্কুলে যেতে হয় সীমাকে। পড়ার প্রতি সীমার এ আগ্রহ প্রতিবন্ধী অনেক শিশুর কাছে এখন অনুপ্রেরণার উৎস। সীমার বাড়ি ভারতের বিহারের মাওবাদী আক্রান্ত জামুই জেলায়। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই বছর আগে এক সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারায় সীমা। কিন্তু, নিজের সাহস হারায়নি। এক পায়ের সাহায্যেই রোজ স্কুলে পৌঁছে যায় সে। সেখানে নিয়মিত ক্লাস করে। জামুই জেলার খাইরা ব্লকের ফতেহপুর গ্রামের একজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, তাঁদের রাজ্য চরমপন্থিদের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এর মধ্যেও এক পায়ে এক কিলোমিটার হেঁটে স্কুলে যাওয়ার মেয়েটির যে অদম্য ইচ্ছা, তা সবাইকে অবাক করে দেয়। সীমা জানায়, সে শিক্ষক হয়ে আশপাশের এলাকার লোকদের শিক্ষিত করতে চায়। সীমার বাবা খিরান মাঞ্জি একজন অভিবাসী শ্রমিক। তিনি প্রতি মাসে যে সামান্য পরিমাণ পাঠান, তা দিয়ে পুরো পরিবারের খরচ চলে। সীমার মা বেবী দেবী জানান, সীমা তার ছয় সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয়। সীমার শিক্ষক শিবকুমার ভগত জানান, সীমাকে কখনোই দুর্ঘটনায় তার পা হারানোর জন্য ভেঙে পড়তে দেখেননি। ববং তিনি তার মধ্যে সবসময় এক ধরনের আত্মবিশ্বাস দেখেছেন। সীমার পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ় সংকল্পে খুশি গ্রামবাসীও। স্থানীয় বাসিন্দা করণ মাঞ্জি জানান, সীমা তার বয়সি অনেক মেয়ের কাছে এখন রোল মডেল। তাঁরা মেয়েটির পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি। সীমার এক পায়ে হেঁটে স্কুলে যাওয়ার একটি ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায় ওই ভিডিও। অনেকেই তার অদম্য লড়াইয়ের প্রশংসা করেছেন। এদিকে, ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পর বিহারের সরকারি কর্মকর্তারা সীমার স্কুলে যান এবং তাকে একটি তিন চাকার সাইকেল উপহার দেন। এখন তিন চাকার সাইকেলে বসা সীমার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *