বন্যায় শেরপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলের পানিতে দ্বিতীয় দফায় বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে শেরপুরের ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী ও শ্রীবরদী উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। এতে ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি, সোমেশ্বরী, ভোগাই, চেল্লাখালি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে তিন উপজেলা ৪০ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সৃষ্ট বন্যায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, শুক্রবার বিকাল ৩টার দিকে নালিতাবাড়ীতে চেল্লাখালি নদী বিপদসীমার আড়াই মিটার এবং ভোগাই নদী এক মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এদিকে ভোগাই নদীর পানি ঢুকে নাকুগাঁও স্থলবন্দর সড়ক ডুবে গেছে। এতে পৌর শহরের গড়কান্দা, শিমুলতলা, নীচপাড়াসহ দুইটি ইউনিয়নের কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশী এবং সোমেশ্বরী নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সদর, ধানাশাইল, গৌরীপুর, হাতিবান্দা ও মালিঝিকান্দাসহ পাঁচ ইউনিয়নের ২৫ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার রামেরকুড়া, দিঘীরপাড়, চতল এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে উপজেলা সদর এবং আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে। মহারশি নদীতে ঢলের পানির চাপে শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে রামেরকুড়া গ্রামের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ বাড়ি ও পোলট্রি খামার ভেসে গেছে। সেই সঙ্গে ওই গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়ির মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ায় স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা তাদের উদ্ধার করে।

শ্রীবরদী উপজেলায় ও সোমেশ্বরী নদীর ভাঙ্গনের অংশ দিয়ে পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবেশ করায় পাঁচ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী মো.শাহজাহান জানায়, উজানে ভারতের মেঘালয় ও আসামে গত দুই দিন ভারী বর্ষণ হওয়ায় সীমান্তের নদ-নদীগুলোতে পাহাড়ি ঢলের প্লাবন দেখা দিয়েছে। তাছাড়া নালিতাবাড়ি ভোগাই নদী পয়েন্টে ১১৫ মিলিমিটার এবং শেরপুর সদর পয়েন্টে ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

তিনি জানান, সীমান্তের পাহাড়ি নদীর সবগুলোতেই বিপদসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় তিন উপজেলার বেশ কিছু এলাকা বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে।

ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আল মাসুদ জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল থেকে দ্বিতীয় দফায় উপজেলা সদরে ও বিভিন্ন গ্রামে পানি আসতে শুরু করেছে। বৃষ্টি দীর্ঘস্থায়ী হলে বন্যা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে প্রথম দফায় বন্যার্তদের মাঝে জেলা প্রশাসনের বরাদ্দের ১৫ মেট্রিক টন চাল মধ্যে থেকে ১০ মেট্রিক টন বিতরণ করা হয়েছে। বাকি চাল বিতরণ করা হবে। এছাড়া বর্তমানে যারা পানিবন্দি হয়ে রয়েছে তাদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।

—-ইউএনবি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *