কলেজ শিক্ষিকাকে মারধরের ঘটনায় সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ  কুলাউড়ার লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজ

মাহফুজ শাকিল : মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক নাজমা বানুকে মারধর করা হয়েছে। বাসার মালিকের সাথে পানির সমস্যাকে কেন্দ্র করে ওই বাসার মালিকের ছোটভাই রাশেদ আহমদ চৌধুরী (৪০) অধ্যাপক নাজমা বানু ও তাঁর স্বামী অবসরপ্রাপ্ত যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আব্দুল মতলিবকে মারধর করে। এই ঘটনার জের ধরে বিক্ষুব্ধ হয়ে কলেজের শিক্ষার্থীরা শনিবার ক্লাস বর্জন করে হামলাকারী রাশেদকে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে কলেজ সম্মুখে কুলাউড়া-রবিরবাজার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এসময় সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে সাবেক সংসদ সদস্য নওয়াব আলী আব্বাছ খাঁন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান খোন্দকার ও কুলাউড়া থানার ওসি মো: আব্দুছ ছালেক, ওসি (তদন্ত) মো: আমিনুল ইসলাম ঘটনাস্থলে ছুটে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে পুলিশ দুপুরে উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের পালগ্রাম থেকে রাশেদকে গ্রেপ্তার করলে শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেয়।

১৩ আগস্ট শনিবার সকালে অধ্যাপক নাজমা বানু বাদী হয়ে রাশেদ আহমদ চৌধুরীকে অভিযুক্ত করে কুলাউড়া থানায় একটি মামলা (নং-১৩) দায়ের করেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজের যুক্তিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাজমা বানু কলেজের সম্মুখে পৃথিমপাশা ইউনিয়নের মুদিপুর এলাকায় মৃত আব্দুল কাদিরের ছেলে শামীম আহমদ চৌধুরী বাসায় দীর্ঘ ছয় বছর ধরে ভাড়া থাকতেন। মাস খানেক পূর্বে শামীম চৌধুরী প্রবাসে চলে যাওয়ায় ওই বাসা দেখাশুনা করতেন তাঁর ছোটভাই রাশেদ। সম্প্রতি অধ্যাপক নাজমা বানুর বাসার খাবার পানির লাইন বন্ধ করে দেয় রাশেদ। সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য রাশেদের মামা আমুদ মিয়াকে বিষয়টি শুক্রবার নাজমা বানুর স্বামী কুলাউড়া উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আব্দুল মতলিব অবহিত করেন। এতে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে ক্ষিপ্ত হয়ে নাজমা বানুসহ তার স্বামীকে মারধর করে বাসায় অবরুদ্ধ করে রাখেন রাশেদ আহমদ চৌধুরী। খবর পেয়ে পুলিশ নাজমা বানুকে উদ্ধার করে কুলাউড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন।

শিক্ষিকা নাজমা বানু শনিবার বিকেলে গণমাধ্যমকে বলেন, তিনি স্বামীসহ দীর্ঘ ৬ বছর ধরে এখানে বসবাস করছেন। রাশেদ বাসায় খাবার পানির লাইন বন্ধ করে দেয়। এ ঘটনায় রাশেদের পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনকে অবগত করার জেরে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার অসুস্থ স্বামীকে গালাগালি ও কিল-ঘুষি মারে মাটিতে ফেলে দেয়। আমি বাঁধা দিতে গেলে সে আমাকেও মাথায় আঘাত করলে আমি অচেতন হয়ে পড়ি।

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো: আতাউর রহমান বলেন, কলেজের শিক্ষিকার ওপর বাসার মালিকের হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ শুরু করলে প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনি। হামলাকারী রাশেদকে আটক করার পর পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে।

কুলাউড়া থানার ওসি মো: আব্দুছ ছালেক বলেন, কলেজ শিক্ষিকা নাজমা বানুকে মারধর করে আসামী রাশেদ আত্মগোপনে চলে যায়। শনিবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *