নতুন ভাবে শুরু করলেন লিটন

অনলাইন ডেস্ক :

সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিমরা এশিয়া কাপের জন্য নিজেদের নিয়মিত ঝালিয়ে নিচ্ছেন মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে। তাদের সঙ্গী হতে পারতেন লিটন কুমার দাসও। কিন্তু একই আঙিনায় শুরু হলো তার অন্য লড়াই। এশিয়া কাপের প্রস্তুতি নয়, স্টাইলিশ এই ব্যাটসম্যান শুরু করলেন ফিট হয়ে মাঠে ফেরার প্রক্রিয়া। গত ৫ অগাস্ট জিম্বাবুয়ে সফরে প্রথম ওয়ানডেতে ৮১ রানে খেলার সময় ডান পায়ের পেশিতে টান লাগে লিটনের। হারারেতে সেদিন তিনি মাঠ ছাড়েন স্ট্রেচারে করে। আর মাঠে ফেরা হয়নি তার। পরে বিসিবি জানায়, গ্রেড টু মাসল স্ট্রেইন তাকে ছিটকে দিয়েছে মাঠের বাইরে। তিনি ফিরে আসেন দেশে। এরপর কিছুদিন ছিল বিশ্রাম। অবশেষে মঙ্গলবার থেকে শুরু হলো তার পুনর্বাসন প্রক্রিয়া। প্রথম দিনে জিমে তার কসরতের ছবি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিটন লিখেছেন, “এই শুরু হলো আমার অন্য ভ্রমণ।” ব্যাট হাতে বোলারদের বিপক্ষে নয়, তার এই লড়াই নিজের শরীরের সঙ্গে। প্রথম দিনে বিসিবির ফিজিও বায়েজিদুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় লিটনের পুনবার্সন প্রক্রিয়া। নানা সময়ে জাতীয় দলে দায়িত্ব পালন করা বিসিবির এই ফিজিও বললেন, লিটনের চোটের অবস্থা বুঝে ধাপে ধাপে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। “দেশে ফেরার পর আমরা লিটনের আরেক দফা এমআরআই করিয়ে নিশ্চিত হয়েছি যে গ্রেড টু টিয়ারই এটা। প্রাথমিকভাবে ১০ দিন ছিল ওর বিশ্রাম। সেই ধাপ শেষে থেকে আমরা আমাদের কাজ শুরু করলাম। এখন ধাপে ধাপে রিহ্যাবের বিভিন্ন পর্যায় আসবে।” “কবে থেকে রানিং বা ব্যাটিং এসব শুরু করতে পারবে, এখনই নির্দিষ্টভাবে কিছু বলার উপায় নেই। মাত্র শুরু হলো। দুই সপ্তাহ পর শরীর কীভাবে সাড়া দেয়, তিন সপ্তাহ পর কেমন অবস্থা থাকে, এসব দেখে আস্তে আস্তে বোঝা যাবে। এখন যে কাজ শুরু হলো, এটা তিন-চারদিন চলবে। তার পর উন্নতি হলেই পরের ধাপে চলে যাব। এভাবে ধাপে ধাপে এগোতে থাকব আমরা।” লিটন চোট পাওয়ার দিন জাতীয় দলের ফিজিও বলেছিলেন, তিন থেকে চার সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। তবে তার এই পেশিতে চোট লেগেছিল সাত বছর আগেও। তাই বেশ সাবধানতায় পুনবার্সন প্রক্রিয়া চালানো হবে। বায়েজিদুল ইসলামের ধারণা, সময়টা আরেকটু বেশি লাগবে। “সাধারণত এই ধরনের ইনজুরি সারতে চার থেকে ছয় সপ্তাহ সময় লাগে (চোট পাওয়ার দিন থেকে)। তবে ওর এই মাসলেই আগে আরেকবার ইনজুরি হয়েছিল, ২০১৫ সালে। যদিও সেবার আঘাত অন্যদিকে ছিল, তবে একই মাসলে। এজন্য ধারণা করছি, ওর ক্ষেত্রে পুরো ছয় সপ্তাহই লাগবে।” ছয় সপ্তাহ লাগলেও সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ নাগাদ ফিট হয়ে উঠতে পারেন তিনি। সেক্ষেত্রে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে নিউ জিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ ও পরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে ওঠার সময় পাবেন তিনি। চোট পাওয়ার আগ পর্যন্ত দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন লিটন। গত দেড় বছরে তিন সংস্করণ মিলিয়ে দেশের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটসম্যান তিনি। গত বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫ সেঞ্চুরিতে ২ হাজার ৪৫৪ রান তার। বাংলাদেশের আর কারও নেই ২ হাজার রান, কারও নেই ৩টির বেশি সেঞ্চুরি। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বর্তমান চক্রে ৪৯.০৫ গড়ে ৮৮৩ রান করে রান স্কোরারদের তালিকায় তিনি আছে পাঁচে, বাংলাদেশের শীর্ষে। চোটের কারণে আপাতত শুধু জিম্বাবুয়ে সিরিজের দুই ওয়ানডে ও এশিয়া কাপ মিস করতে হচ্ছে তাকে। নভেম্বরের আগে এই সময়ে বাংলাদেশের আর কোনো টেস্ট বা ওয়ানডে নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *