আঞ্চলিক প্রতিনিধি, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের দৌলতপুরের আবু জাফর (৩০) নামের এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে দৌলতপুরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরুল হাসানের বিরুদ্ধে। সোমবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন নিহতের ভাই সালাউদ্দিন ঠাণ্ডু। নিহত আবু জাফর দৌলতপুরে বাচামারা ইউনিয়নের বাচামারা এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে। তিনি স্থানীয় বাচামারা বাজারে বিকাশ ও ফ্রিজের দোকান করতেন। অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, করোনাকালীন সময়ে গেল বছর ২০২১ সালের ৬ জুলাই সন্ধ্যায় উপজেলার বাচামারা বাজারে আনসার সদস্যদের সঙ্গে অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরুল হাসান। এ সময় বিকাশ ও ফ্রিজ ব্যবসায়ী আবু জাফরের দোকান খোলা পায় এবং তাকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন তিনি। জরিমানার শেষে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। পরে ক্ষিপ্ত হয়ে একপর্যায়ে আনসার সদস্যের বন্দুক দিয়ে তাকে পেটাতে থাকেন। এ সময় আবু জাফরের বড় ভাই সালাউদ্দিন ঠাণ্ডু এগিয়ে এলে তাকেও মারধর করেন এবং ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার। এ ঘটনার পর আবু জাফর গুরুতর আহত হয়ে পড়েন এবং দীর্ঘ ৯ মাস ১৬ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাড়িতে মারা যান।
নিহতের ভাই সালাউদ্দিন ঠাণ্ডু জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ভয়ে এত দিন অভিযোগ করতে পারিনি। আগে দেখা হলে মাঝেমধ্যে হত্যার হুমকি দিত। কিন্তু ভাই মারা যাওয়ার পর ছোট ভাতিজা ও ভাতিজির কথা ভেবে এবং আমার বাবা-মা নিহত জাফরের জন্য কান্নাকাটি করায় বাধ্য হয়ে ভাইয়ের বিচারের জন্য অভিযোগ করছি।
তিনি আরো জানান, ওই নির্যাতনের কারণে আমার ঘাড়ের হাড় ভেঙে গেছে, আমি পঙ্গু হয়ে গেছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের জন্য আমার পাঁচ বছরের ভাতিজা আলামিন ও এক বছরের ভাতিজি তাহমিনা এতিম হয়েছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই। একজন সরকারি কর্মচারী আমার ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করল। এটার কি কোনো বিচার হবে না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরুল হাসান বলেন, যেহেতু অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে, এ কারণে তদন্ত চলার সময় কিছু বলব না।
মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, লিখিত অভিযোগের পর তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।-কালের কন্ঠ