তীব্র ঢেউয়ে কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভের দুই অংশে ভাঙন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সমুদ্রে জোয়ারের ঢেউয়ের আঘাতে কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভের টেকনাফে দুই অংশে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। এতে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে সড়কটি। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. এরফান হক চৌধুরী এতথ্য নিশ্চিত করেছেন। ইউএনও বলেন, সিত্রাংয়ের কারণে সমুদ্রের জোয়ারের পানি স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে বেশি ছিল। এতে গত সোমবার রাতে জোয়ারের সময় ঢেউয়ের আঘাতে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের বাহারছড়ায় শ্মশান এলাকায় মেরিন ড্রাইভের দুটি অংশে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের ৬-৭ হাত করে ভেঙে গেছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাহিদ ইকবাল বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে উপকূলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। চিংড়ি ঘেরের অনেক বাঁধ ভেঙে গেছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে কক্সবাজারের উপকূল এলাকায় ছয় থেকে সাত ফুট উচ্চতায় প্লাবিত হয়েছে। জেলার কুতুবদিয়া, মহেশখালীর ধলঘাটা, সদর উপজেলার কুতুবদিয়া পাড়া, সমিতিপাড়ায় জোয়ারের পানি ঢুকেছে। বিশেষ করে টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপে স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি উচ্চতায় দ্বীপের চারপাশ প্লাবিত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের প্রাথমিক হিসেব মতে, কক্সবাজার জেলার ৪৭টি ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ইউনিয়নের দু’শত গ্রামেরও বেশি জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। দুর্গত এলাকার অনেকেই এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি নিশ্চিত করে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. আবু সুফিয়ান জানান, প্রাথমিক তথ্য মতে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে জেলার ৪৭টি ইউনিয়নের পাঁচ হাজার ঘরবাড়ি আংশিক এবং ১৪ শ’ ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় দুই লাখ মানুষ। তিনি বলেন, সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্ট, ডায়াবেটিস পয়েন্ট, হিমছড়ি ইনানী এবং টেকনাফের কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. হাবিব খাঁন জানান, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি উচ্চতায় পানি উঠেছে। সাগর সংলগ্ন দ্বীপের চারদিকে সবকটি স্থাপনা পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও ঢেউয়ের তোড়ে দ্বীপে যাতায়াতের একমাত্র জেটিটির বিভিন্ন অংশে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া জোয়ারের পানিতে ভেঙে গেছে দ্বীপের চারপাশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *