শারীরিক প্রতিবন্ধী রহিমা বেগমের চোখে মুখে অন্য রকম একটা হাসির ঝিলিক। কারণ সব প্রতিকূলতাকে জয় করে তিনি এখন ব্যাংক কর্মকর্তা। দেশের বেসরকারি খাতের বৃহত্তম ব্যাংক পূবালী ব্যাংক লিমিটেড তার হাতে তুলে দিয়েছে জুনিয়র অফিসার পদের নিয়োগপত্র। (৮ ডিসেম্বর) বৃহস্পতিবার ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসের মহাব্যবস্থাপক আবু লাইছ মো. সামসুজ্জামান রহিমা বেগমের হাতে এই নিয়োগপত্র তুলে দেন। এসময় ব্যাংকের সিলেট প্রিন্সিপাল অফিসের এজিএম ইসফাকুর রহমান কোরেশী এবং সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার খায়রুল আলম উপস্থিত ছিলেন। নিয়োগপত্র হাতে নিয়ে রহিমা পূবালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, পূবালী ব্যাংক তার জীবন পাল্টে দিয়েছে। পিতৃহীন অভাবের এক সংসারে একমাত্র মাকে নিয়ে তার কষ্টের জীবন হয়তো সুখের আবহে রুপ নেবে। তার প্রবল ইচ্ছাশক্তি, মায়ের সহযোগিতা এবং স্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতার কারণে তিনি এ পর্যন্ত এসে পৌছেছেন। মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ জ্রোতিরবন্দ নামে এক অজোপাড়াগাঁ থেকে উঠে এসে রহিমা বর্তমানের সিলেট এমসি কলেজের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। কোনো প্রকার শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তার চলার পথে বাধা হতে পারে নি। এদিকে পূবালী ব্যাংক সিলেট প্রিন্সিপাল অফিসের জিএম আবু লাইছ মো. সামসুজ্জামান জানান, পূবালী ব্যাংক এ পর্যন্ত চারজন প্রতিবন্ধী তরুণ-তরুণীকে ব্যাংকে কর্মকর্তা পদে চাকুরী প্রদান করেছে। সামাজিক দ্বায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ এমন মহতি উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। যাতে করে প্রতিবন্ধীদের সমাজের বোঝা না ভেবে তাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে সম্পদে রূপান্তরিত করা যায়। তিনি জানান, ব্যাংকের সিলেট স্টেডিয়াম শাখায় সালামত রাজা চৌধুরী নামে একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, শাহী ঈদগাহ শাখায় সানজিদা রহমান নামে একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং জকিগঞ্জ উপজেলার কালিগঞ্জ শাখায় আল-আমিন একজন বাঁক-প্রতিবন্ধী কর্মরত রয়েছেন। সর্বশেষ আজ বৃহস্পতিবার আমরা ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রহিমা বেগমের হাতে প্রধান কার্যালয়ের নিয়োগপত্র তুলে দিলাম।