অনলাইন ডেস্ক :
‘ব্যাচেলর ইন ট্রিপ’ নামের সিনেমা নির্মাণের শুরু থেকেই বির্তক তৈরি হয়। প্রথমে নবাগত নায়িকা রাজ রিপাকে চুক্তিবদ্ধ করিয়ে টাকা না দেয়ার অভিযোগ উঠে। আর এবার শিল্পীদের রেখে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ নির্মাতার বিরুদ্ধে। বির্তক পিছু ছাড়ছে না সিনেমাটির। তরুণ নির্মাতা নাসিম সাহনিক নির্মাণ করছেন ‘ব্যাচেলর ইন ট্রিপ’।সিনেমাটিতে জুটি বেধে অভিনয় করছেন এ প্রজন্মের চিত্রনায়িকা শিরিন শিলা ও চিত্রনায়ক কায়েশ আরজু। গত ২২ ডিসেম্বর পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় শুটিংয়ে অংশ নেন সিনেমার নায়িকা শিরিন শিলাসহ বেশ কয়েকজন শিল্পী। সেখানে পাঁচদিনের শুটিংয়ের কথা থাকলেও নামেমাত্র দুই দিন শুটিং করে ঢাকায় ফেরার পথে ইউনিটের সবাইকে ফেলে পালিয়ে যান সিনেমার নির্মাতা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিনেমাটির নায়িকা শিরিন শিলা। জানা যায়, কুয়াকাটার লোকেশনে পাঁচ দিনের শুটিং শিডিউল ছিল। ১৯ ডিসেম্বর দিবাগত ভোর রাতে গিয়ে ইউনিট সেখানে পৌঁছায়। যাওয়ার পর থেকে শুটিং ইউনিটে অগোছালো অবস্থা নজরে আসে শিল্পীদের। নায়ক-নায়িকাসহ শিল্পীদের থাকা, খাওয়া-সবকিছুতেই অব্যবস্থাপনা ছিল বলে তাদের দাবি। এতে ইউনিটে অসন্তোষ তৈরি হয়। শিরিন শিলা বলেন, যাওয়ার পর আমাদের যে হোটেলে রাখা হয়েছিল, সেই রুমের অবস্থা খুবই নাজেহাল ছিল। সেখানে ঠিকমতো খাবার পানি পাওয়া যায়নি। খাবারও মানসম্মত ছিল না। প্রথম দিন থেকেই নাকি বাজেট সমস্যা। পাঁচ দিনের শিডিউলের কথা বলা হয়েছিল। কোনোমতে দুই দিন শুটিং করে ঢাকায় ফিরছিলাম আমরা। তিনি আরও বলেন, ফেরার পথে আমাদের জন্য দুটি মাইক্রোবাস ও ইউনিটের জিনিসপত্র বহনের জন্য একটা পিকআপ ভ্যান ছিল। দুপুরে রওনা দিয়ে বরিশাল এসে রাত আটটা বাজে। আমাদের সঙ্গে পরিচালকও ছিলেন। মাইক্রোর ড্রাইভার পথে গাড়ির তেল কেনা, ব্রিজের টোলের টাকা চাইলে পরিচালক দিতে পারেননি। গাড়িও বরিশাল থেকে আর ছাড়তে চাননি ড্রাইভার। একটা সময় পরিচালক আমাদের রেখে পালিয়ে যান। পরে সিনেমার এক শিল্পী ঢাকায় ফোন করে তার কোনো এক আত্মীয়ের কাছ থেকে বিকাশে টাকা আনায় আমরা ঢাকাতে ফিরতে পেরেছি। তবে পথে যে কষ্ট করেছি আমার সিনেমার জীবনে এমন ঘটেনি। এমন সব অব্যবস্থাপনার মধ্যে শুটিং লোকেশন থেকে নিজ খরচে ঢাকায় ফিরেছেন মুকিত জাকারিয়া, কচি খন্দকারসহ সিনেমার আরও কয়েকজন শিল্পী। এমনকি সেখানে নিজেদের খরচে থেকেছেন ও খেয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানান জ্যেষ্ঠ এই শিল্পীরা। এসব অভিযোগের সঙ্গে সিনেমার নায়ক কায়েস আরজু আরও অভিযোগ করে বলেন, এসব বাদই দিলাম। আমাকে ৩৫ হাজার টাকার একটি চেক দিয়েছিল প্রযোজক, সেটিও ডিজঅনার হয়েছে। এটি ভালো পরিচালকের কাজ নয়। শুটিংয়ের শিডিউল নিয়েও নয়ছয় করেছে। এরা আসলে সিনেমা করতে আসেনি। এদিকে, শুটিং থেকে ফেরার পথে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন নির্মাতা নাসিম সাহনিক। উল্টো তিনি পাঁচজন শিল্পীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেন, তিনজন মেয়ে ও দুইজন পুরুষ শিল্পী শুটিং রেখে পালিয়েছেন। আপাতত তাদের নাম বলছি না। সময় হলে বলব। আমি অসুস্থ অনুভব করলে অন্যভাবে ঢাকায় ফিরি। পালিয়ে আসার মতো ঘটনা ঘটেনি। তবে কায়েস আরজুর চেক ডিজঅনারের বিষয়টি স্বীকার করেছেন তিনি। জানান, এটি প্রযোজক দিয়েছেন। এর আগে প্রতারণার অভিযোগ এনে এই নির্মাতার বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন নবাগত চিত্রনায়িকা রাজ রিপা। ২৯ নভেম্বর দিবাগত রাতে রমনা থানায় জিডি করেন তিনি (জিডি নং ১৭৬৪)।