১৪ বছর বয়সে ইলন মাস্কের স্পেসএক্সে যোগ দিলেন মৌলভীবাজারের কায়রান

জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার:
মৌলভীবাজারের কায়রান কাজী মাত্র ১৪ বছর বয়সে ইলন মাস্কের মহাকাশবিষয়ক প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দিয়েছে। স্পেসএক্সের ‘প্রযুক্তিগতভাবে চ্যালেঞ্জিং’ ও আনন্দঘন সাক্ষাৎকার সফলতার সঙ্গে এই চাকরি পেয়েছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এ কিশোর। যে স্টারলিংক দলে কায়রান কাজী কাজ করবে, সেটি মূলত স্পেসএক্সের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান।
কায়রান কাজী যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় পরিবারের সঙ্গে বসবাস করে। কায়রানের বাবা মোস্তাহিদ কাজী ও মা জুলিয়া চৌধুরী কাজী। তাঁর মা মৌলভীবাজার শহরের জুলিয়া শপিং সিটির স্বত্তাধিকারী। তাঁর নানা মৌলভীবাজারের প্রবীণ রাজনীতিবিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মরহুম গজনফর আলী চৌধুরী আর নানী সাবেক মহিলা এমপি সৈয়দা হাছনা বেগম। তাদের একমাত্র নাতি কায়রানের নামানুসারে মৌলভীবাজারে প্রতিষ্ঠা করা হয় কায়রান রেষ্টুরেন্ট।
চাকরি পাওয়ার পর সামাজিক মাধ্যম লিঙ্কডইনে কায়রান লিখেছে, ‘পৃথিবীর সেরা কোম্পানিতে আমি প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দিতে যাচ্ছি; কোম্পানির স্টারলিংক প্রকৌশলী দলে যোগ দিচ্ছি আমি। এরা বিশ্বের সেই বিরল কোম্পানিগুলোর একটি, যারা বয়সের মতো পুরনো মানদন্ড দিয়ে সক্ষমতা ও পরিপক্বতা বিবেচনা করেনি।’
যুক্তরাষ্ট্রের সান্তা ক্লারা ইউনিভার্সিটির স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে পাস করার কিছুদিন আগেই কায়রান কাজী এ চাকরি পেয়েছে। সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে সে এই ডিগ্রি নিয়েছে। এখন সে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে মাকে নিয়ে ওয়াশিংটন রাজ্যে চলে আসার পরিকল্পনা করছে, যেখানে তাকে কাজ করতে হবে।
জন্মের দুই বছর বয়স থেকেই প্রতিভার ঝলক দেখিয়ে আসছে কায়রান। সেই বয়সেই সে পূর্ণাঙ্গ বাক্যে কথা বলতে পারত। কিন্ডারগার্টেন স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর সে রেডিওতে শোনা গল্প বন্ধুদের কাছে বলত। লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসের সূত্রে সিএনবিসি এ তথ্য দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় তার যখন মনে হয় স্কুলের পড়াশোনা অতটা চ্যালেঞ্জিং নয়, তখন তার মা-বাবা ক্যালিফোর্নিয়ার এক কমিউনিটি কলেজে তাকে ভর্তি করে দেন। তখন তার মনে হয়, সেই বয়সে যা শেখা দরকার, সে তখন তাই শিখতে পারছে। এরপর ১১ বছর বয়সে সে সান্তা ক্লারা বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হয়।
কায়রান কাজীর লিঙ্কডইন প্রোফাইলের তথ্যানুসারে, গত বছর সে ব্ল্যাকবার্ড ডট এআই নামের এক সাইবার ইন্টেলিজেন্স ফার্মে চার মাস মেশিন লার্নিংয়ের ইন্টার্ন হিসেবে কাজ করে। সেখানে সে সামাজিক মাধ্যমের আধেয় ভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে কি না, তা শনাক্তের পরিসংখ্যানগত পদ্ধতি তৈরি করে।
যুক্তরাষ্ট্রের এবিসি ৭ নিউজকে কায়রান কাজী বলেছে, ‘অনেকে মনে করে, আমি শৈশব থেকে বঞ্চিত হচ্ছি; কিন্তু আমার মনে হয় না বিষয়টি ঠিক। সেই মনোভাব থাকলে আমি এত দিনে মাধ্যমিক স্কুলে থাকতাম।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *