আল আমিন আহমদ: মৌলভীবাজারের জুড়ীতে এক সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল মতিন কুটিমুটি ও তার শালী আয়া বেগম-এর হামলা-মামলাসহ বিভিন্ন উৎপাত থেকে রক্ষার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। বুধবার সকালে উপজেলা সদর জায়ফরনগর ইউনিয়নের মনতৈল বজিটিলায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মনতৈল গ্রামের বাসিন্দা ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন- গ্রামের বাসিন্দা ডাকাতি মামলা, বড় ভাই হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন মামলার আসামী আব্দুল মতিন কুটিমুটি ও তার শালী এলাকায় মামলাবাজ মহিলা হিসেবে পরিচিত আয়া বেগম এবং তাদের বাহিনী দারা দীর্ঘ দিন থেকে গ্রামের নিরীহ মানুষের উপর মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে আসছে। মামলা দিয়ে পরে আপোষের জন্য ২/৪ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে আবার মামলা দেয়া, চাহিত চাঁদা পেয়ে মামলা তুলে নেয়া, জায়গা দখল, দিনে-রাতে রাস্তায়-বাড়িতে প্রাণঘাতী অস্ত্র নিয়ে ঘুরাফেরা, হত্যার হুমকী প্রদান ইত্যাদি কারণে গ্রামের মানুষ অতীষ্ট হয়ে পড়েছেন। ইলিয়াছ মিয়া (কাজল) বলেন- আব্দুল মতিন কুটিমুটি-এর ভাই আব্দুল আইয়ুব জীবিতাবস্থায় আমার নিকট ৫ শতক জমি বিক্রি করেন। এই জমি কেনায় আব্দুল মতিন আমার উপর ৮টি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। এর ৫টি থেকে আমি খালাস পাই, বাকী তিনটি মামলা চলমান। গিয়াস উদ্দিন বলেন- ২০১৮ সালে আমার উপর মিথ্যা মামলা করে আয়া বেগম। পরে ইলিয়াছ মিয়া (কাজল)-এর একটি মামলায় স্বাক্ষী হওয়ায় আমার উপর আরো দুইটি মিথ্যা মামলা দেয়া হয়। মর্তুজ আলী বলেন- আয়ার নিকট আমি এক শতক জমি বিক্রি করেছিলাম। কিন্তু সে আমার টাকা দেয়নি এবং জোর করে দুই শতক জমি দখল করে রেখেছে। মজমিল আলী বলেন- আমার উপর দুইটি মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। জলিকা বেগম বলেন- আমি গিয়াস ও তার ভাই সিরাজ থেকে ৮ শতক জমি কিনেছিলাম। কিন্তু এ জমি আয়া দখল করে রেখেছে।
তারা বলেন- মানিক মিয়ার প্রায় ১৮ শতক, জয়নালের প্রায় ১৫ শতক, গিয়াসের ১ শতক জমি আব্দুল মতিন ও আয়া গং দখল করে রেখেছে। কুটিমুটি তার ভাই আব্দুল আইয়ুবকে হত্যা করে তার ছেলেদের উপর মামলা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে দখল করে রেখেছে। ডাঃ আবু তাহেরের সাড়ে ৬ শতক জমি দখল করে রেখেছে। উত্তরাধীকারী সনদ জাল করেছে। তারা পঞ্চায়েত মানে না, ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মানে না। তাদের ভয়ে কেহ কথা বলে না। পুলিশ মামলা বা জিডি নেয় না। কোন মামলায় কেহ স্বাক্ষী হলেই তার উপর কয়েকটি মিথ্যা মামলা দেয়া হয়। এ ঘটনায় ইলিয়াছ মিয়া (কাজল) এলাকাবাসীর স্বাক্ষরসহ চলতি বছরের ০৮ মে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ও ০৯ মে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আয়া বেগম বলেন- গিয়াস ও সিরাজ আমার স্বামীর ভাই। তারা দুইজন জলিকার নিকট জমি বিক্রি করেন। জলিকাকে তারা তাদের জমি থেকে জমি সমঝিয়ে দিবেন। কিন্তু তারা তা না করে জোর করে আমার স্বামীর জমি দখল দিতে চান। আমি তাতে বাধা দেই।
আব্দুল মতিন কুটিমুটি বলেন- আমি একটি মামলায় জেলে ছিলাম। তখন আমার ভাই আব্দুল আইয়ুব জাল দলিল তৈরি করে এ দলিল থেকে ইলিয়াছ মিয়া (কাজল)-এর নিকট ৫ শতক জমি বিক্রি করেন। আমি জেল থেকে এসে দেখি কাজল আমার জমি দখল করে ঘর তৈরি করে আছে। এনিয়ে আমি আদালতে মামলা করি।
জানতে চাইলে জুড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন- এ বিষয়ে থানায় কোন অভিযোগ পাই নি। পুলিশ সুপার বরাবরে দেয়া একটি অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।