চলতি গ্রীষ্মে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা অস্বাভাবিক বৃষ্টি ও বন্যার কবলে পড়ে ভুগছে চীন। গত দুই দিন ধরে দেশটির উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় হুনান প্রদেশে ভারি বৃষ্টি হয়েছে, পরিস্থিতি নাজুক হওয়ায় তিন হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, শনি ও রোববার প্রদেশটির সাংঝি, শিমেন ও ইয়ংশুন কাউন্টিতে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। এরমধ্যে সাংঝিতে চলতি বছরের সবচেয়ে ভারি বৃষ্টিপাতের রেকর্ড হয়েছে। গত শনিবার রাত থেকে রোববার রাতভর সাংঝিতে সর্বোচ্চ ২৫৬ মিলিমিটার (১০ দশমিক ০৭ ইঞ্চি) বৃষ্টি হয়েছে, জানিয়েছে চায়না সেন্ট্রাল টেলিভিশন (সিসিটিভি)। ১৯৯৮ সালের পর থেকে এটি সাংঝিতে সবচেয়ে প্রবল ও ব্যাপক বৃষ্টি বলে জানিয়েছে তারা।
সোমবার (২৮ আগষ্ট) চীনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সতর্ক করে বলা হয়েছে, আগামী দুই দিন ধরে বেশ কয়েকটি প্রদেশে প্রবল বৃষ্টি হতে পারে, এর ফলে হড়কা বান দেখা দিতে পারে। জুলাইয়ের শেষ দিকে চীনে টাইফুন ডকসুরির প্রভাবে এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টির রেকর্ড হয়, এর মধ্যে রাজধানী বেইজিং ১৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি দেখে। তারপর থেকে অবিরাম বর্ষণে দেশটি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে। এদিকে দক্ষিণ চীন সাগর ধরে সেওলা নামের আরেকটি টাইফুন চীনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার টাইফুনটি চীনের গুয়াংডং প্রদেশের উপকূল দিয়ে স্থলে উঠে আসতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে চীনের সরকার বন্যার বিরুদ্ধে আরও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছে, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের। রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম পিপলস ডেইলি জানিয়েছে, চীনের রাষ্ট্রীয় বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও খরা ত্রাণ সদরদপ্তর এবং দুর্যোগ মোকাবেলা মন্ত্রণালয় শনিবার একটি ভিডিও সম্মেলন করেছে। এতে ভারি বৃষ্টি দেশের বিভিন্ন অংশে ভূতাত্ত্বিক বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে। বলা হয়েছে, পর্বতে হড়কা বান এবং ছোট ও মাঝারি আকারের নদীগুলোতে বন্যা দেখা দিতে পারে।
চীনের আবহাওয়া প্রশাসন জানিয়েছে, টাইফুন সেওলার আগমণ পথ নিয়েও অনিশ্চয়তা আছে, কিন্তু এটি বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ফুজিয়ান ও ঝেজিয়াং প্রদেশসহ উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ব্যাপক বৃষ্টি বয়ে নিয়ে আসবে। টাইফুন সেওলার মোকাবেলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে ফুজিয়ানের কর্তৃপক্ষ। বুধবার দুপুরের মধ্যে উপকূলে থাকা মাছ ধরার নৌকাগুলোকে আশপাশের বন্দরে ফিরে আসার ও সেগুলোতে থাকা সব লোকজনকে উপকূল থেকে সরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।