কুলাউড়ায় দুর্গতদের মাঝে সেনাবাহিনীর ত্রাণ বিতরণ

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

১৭ পদাতিক ডিভিশন ও সিলেট সেনানিবাসের এরিয়া কমান্ডার (জিওসি) মেজর জেনারেল চৌধুরী মোহাম্মদ আজিজুল হক হাজারী বলেছেন, সেনাবাহিনী সবসময় জনগণের কাছে ছিল। বন্যার শুরু থেকে সেনাবাহিনী বন্যার্তদের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের সেনাপ্রধানের নির্দেশে আমাদের চলমান যে মোতায়েন ছিল এর বাইরে অতিরিক্ত হিসেবে বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছি।

২৪ আগস্ট শনিবার দুপুরে কুলাউড়া উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নে সেনাবাহিনীর উদ্যোগে মেডিকেল ক্যাম্প ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। এরআগে তিনি ইউনিয়নের বন্যাদুর্গত কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করে দুর্গত মানুষের খোঁজখবর নেন।

ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শেষে তিনি বলেন, গত একমাসেরও বেশি সময় ধরে আমাদের প্রস্তুতি ছিল অন্য একটি অর্পিত দায়িত্ব। যেটা গত ১৭ জুলাই থেকে আপনারা দেখে আসছেন। শঙ্কাটা ছিল সিলেট-সুনামগঞ্জ নিয়ে। কিন্তু হঠাৎ করে বন্যাটি চলে আসে হবিগঞ্জ-মৌলভীবাজারে। বিশেষ করে কুলাউড়ায় বেশি প্লাবিত হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি যতটুকু পরিদর্শন করে দেখেছি, পানি অনেকটা কমে গেছে। এখন শঙ্কার কোন কারণ নেই। কুলাউড়ায় পানিবন্দি প্রায় ৩৫ হাজার ছিল। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন, ছাত্র সমন্বয়ক ও স্বেচ্ছাসেবীদের সহায়তায় ৯ হাজারের মতো মানুষকে বন্যাকবলিত এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে ২ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে এবং বাকি ৭ হাজার তাদের আত্মীয় স্বজনদের বাসা ও নিরাপদ স্থানে রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সার্বিক যোগাযোগ রাখছি।

মেজর জেনারেল চৌধুরী মোহাম্মদ আজিজুল হক হাজারী বলেন, আমাদের সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ও সৈনিকদের খাবারের একটা অংশ থেকে এ ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি আজ আমিও ৫০০ প্যাকেট ত্রাণ নিয়ে এসেছি। আমার স্ত্রীসহ আমরা দুর্গত মানুষের মাঝে সেই ত্রাণ বিতরণ করেছি। এ কার্যক্রম যতদিন না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে ততদিন চলবে। বন্যাকবলিত এলাকায় সেনাবাহিনীর মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে। শুক্রবার প্রায় আড়াই শতাধিক মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছে। এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। শুনেছি, বন্যায় দুর্গত মানুষের পাশে প্রবাসীসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করছেন। স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয় রেখে যাদের ত্রাণ প্রয়োজন সেইসকল দুর্গত মানুষকে যেন ত্রাণ দেয়া হয়। অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা লাগলে সেনাবাহিনী সেটা করবে। সকলকে স্ব স্ব অবস্থান থেকে সাধ্যানুযায়ী বন্যার্তদের পাশে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে তিনি বলেন, বন্যায় যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের পুনর্বাসনের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে সরকারের পক্ষ থেকে যে সামগ্রী আসবে সেটি আমাদের সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ কোয়ালিটি মেইনটেইন রেখে তৈরি করা যায় সেটি আমরা নিশ্চিত করবো।

ত্রাণ সামগ্রী বিতরণকালে তাঁর সাথে ছিলেন সিলেট সেনানিবাসের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কবির, লেফটেন্যান্ট কর্ণেল সাজ্জাদুল আহসান, মেজর রিয়াদ, ক্যাপ্টেন আদনান, কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) দীপংকর ঘোষ, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহুরুল হোসেন, ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ শিমুল আলী, ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালিক প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *