কুলাউড়ায় স্বেচ্ছাশ্রমে মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ সংস্কার

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের আলীনগর ও ধলিয়া গ্রামে মনু নদীর প্রতিরক্ষা বেলরতল বাঁধটি স্বেচ্ছায় সংস্কার কাজ করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সামাজিক সংগঠন ও শিক্ষার্থীবৃন্দ। আর এ কাজের জন্য স্বেচ্ছায় এক লক্ষ টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেন স্থানীয় সমাজসেবক ডাঃ মনিরুল ইসলাম সোহাগ।

জানা গেছে, গত কয়েকদিনের অবিরাম বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলের পানির কারণে মনু নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। টিলাগাঁও ইউনিয়নের হাজীপুর, মিয়ারপাড়া ও চক সালন গ্রামে নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙ্গন দিলে পুরো টিলাগাঁও ইউনিয়নের প্রায় ৩৫টিরও বেশি গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে যায়। একইসাথে পৃথিমপাশা ইউনিয়নে মনু নদীর তীরবর্তী ঝুঁকিপূর্ণ বেলরতল বাঁধটিও ভেঙ্গে যাওয়ার লক্ষণ দেখা দেয়। তাৎক্ষণিক গত মঙ্গলবার রাত দেড়টায় স্থানীয় এলাকার যুবক ইয়াসিন আলী, ফয়জুল হক সহ কয়েকজন ব্যক্তি দ্রুত বাঁধে এসে বালুর বস্তা দিয়ে বাঁধটির সুড়ঙ্গ বন্ধ করার চেষ্টা করেন। পরে সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ আব্বাছ আলী, উম্মর আলী, জুম্মা আহমদসহ আরো অনেকেই ঝুঁকিপূর্ণ এই বাঁধকে রক্ষা করতে কাজ করেছেন।

স্থানীয় লোকজন জানান, এই এলাকায় প্রায় চার হাজার মানুষের বসবাস। ইউনিয়নে প্রায় চল্লিশ হাজার মানুষের বসবাস। যদি এই বেলরতল বাঁধটিতে ভাঙ্গন দেখা দিত তাহলে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হত। এতে দুর্ভোগে পড়তেন উপজেলার প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। বিগত ২০০৪ সালে বেলরতল বাঁধে ভাঙন দিলে মানুষের ঘরবাড়ি, গবাদি পশু, কৃষি জমি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন কৃষকরা। এইসব অসহায় মানুষদের পানিবন্দি অবস্থায় থেকে বাঁচানোর জন্য রাতভর এই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধকে বস্তা দিয়ে সংস্কার করে স্থানীয় এলাকাবাসী।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ সংস্কারের জন্য স্বেচ্ছায় স্থানীয় লোকজন বস্তা ও মাটি দিয়ে বাঁধ সংস্কার কাজ করছেন। বিশেষ করে স্থানীয় এলাকাবাসী, স্টুডেন্ট সোসাইটি রবিরবাজার, লংলা শতাব্দী রেলওয়ে মুক্ত স্কাউট গ্রুপ, রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি সবাই একত্রিত হয়ে বাঁধের সংস্কার কাজ করছেন। এসময় কাজে সহযোগিতা করেন সাবেক ইউপি সদস্য আব্বাছ আলী, ইউপি সদস্য কবির হোসেন, রবিরবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু মোঃ নাসির উদ্দিন, সাংবাদিক হাসান আল মাহমুদ রাজু, যুবদল নেতা তারেক আহমদ, সমাজকর্মী ফয়জুল ইসলাম, আকুল মিয়া, উম্মর আলী, জুম্মা আহমদ, আনসার মিয়া, কাদির মিয়া প্রমুখ।

সাবেক ইউপি সদস্য আব্বাছ আলী বলেন, গত ২২ আগষ্ট রাত থেকে আমরা স্থানীয় লোকজন নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বেলরতল বাঁধকে মেরামত করে যাচ্ছি যাতে ভাঙ্গন দেখা না দেয়। এলাকাবাসীর কষ্টের কথা চিন্তা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা কাজ করছি এবং এই ভয়াবহ বন্যা থেকে এখন পর্যন্ত রক্ষা পেয়েছি। চিরস্থায়ী রক্ষার্থে বাঁধে সংস্কারের প্রয়োজন। ব্লক ও বস্তার প্রয়োজন। তাই আমরা এই বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *