শেষ দিকে স্বামীর সাথে সম্পর্ক ভাল ছিল না রুহনুমার

রাজধানীর হাতিরঝিল লেক থেকে বেসরকারি গাজী টেলিভিশনের নিউজরুম এডিটর রাহনুমা সারাহর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম জানান, মো. সাগর নামে এক রেস্টুরেন্টের কর্মচারী লেকে ভাসমান অবস্থায় রাহনুমার লাশ দেখতে পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। রাত পৌনে ২টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার বখতিয়ার শিকদারের মেয়ে রাহনুমা (৩২) স্বামী সাঈদ শুভ্রর সঙ্গে ঢাকার কল্যাণপুরে ভাড়া বাসায় থাকতেন।

ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর জানা যাবে।

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

স্বামী শুভ্র গণমাধ্যমকে বলেন, সম্পর্কের মাধ্যমে পরিবারকে না জানিয়ে সাত বছর আগে বিয়ে করেন তারা।

মঙ্গলবার রাতে রাহনুমা অফিসে গিয়ে রাতে বাড়ি না ফিরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে এক ব্যক্তির মাধ্যমে বাসা ভাড়ার টাকা পাঠিয়ে দেন।

শুভ্র বলেন, “পরে আমি তাকে ফোন করে বলি, ‘রাতে বাসায় যদি না ফেরো, তাহলে অন্য কাউকে টাকা পাঠালে কেন? সে বলে, আমি ব্যস্ত আছি। বলে ফোন কেটে দেয়। পরে রাত ৩টার দিকে খবর পাই সে হাতিরঝিল লেকের পানিতে ঝাঁপ দিয়েছে।”

পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজে এসে রাহানুমার লাশ দেখতে পান শুভ্র।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মধ্যে ঝগড়া হয়নি, তবে আমার স্ত্রী বেশ কিছুদিন ধরে বিচ্ছেদ চাইছিলেন।’

বিবাহবিচ্ছেদের জন্য তারা স্থানীয় কাজী অফিসে গিয়েছিলেন জানিয়ে শুভ্র বলেন, ‘পরে দেশের এ অবস্থায় আর কাজী অফিসে যাওয়া সম্ভব হয়নি।’

এর আগে মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে রাহনুমা তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বাংলায় একটি পোস্ট আপলোড করেন, যেখানে তিনি লেখেন, ‘জীবন্মৃত হয়ে থাকার চাইতে মরে যাওয়াই ভালো।’

এরপর আরেকটা পোস্টে ফাহিম ফয়সাল নামের একজনকে ট্যাগ করে কয়েকটি ছবি শেয়ার করে ইংরেজিতে লেখেন, ‘তোমার মতো বন্ধু পেয়ে ভালো লাগছে। সৃষ্টিকর্তা তোমার মঙ্গল করুন। আশা করি তোমার সব স্বপ্ন তাড়াতাড়ি পূরণ হবে। আমি জানি আমাদের একসঙ্গে অনেক কিছুর পরিকল্পনা ছিল। দুঃখিত, সেসব পূরণ করতে পারছি না। সৃষ্টিকর্তা তোমাকে তোমার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সাফল্য দিক।’

—–ইউএনবি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *