মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
কুলাউড়ায় দীর্ঘ ৫০ বছর বেদখলে থাকা ৪৮ শতক কৃষি জমি প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ফিরে পেলেন সিরাজ মিয়া নামের এক ব্যক্তি। সাইনবোর্ড টানিয়ে তার জমি বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রশাসন। জীবনের শেষ সময়ে জমি ফিরে পেয়ে উপজেলা প্রশাসনসহ সেনাবাহিনীর প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন সিরাজ মিয়া। এরআগে গত ৩০ আগস্ট জমি উদ্ধারে কুলাউড়ায় সেনাবাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ২ সেপ্টেম্বর সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন সিরাজ মিয়ার ছেলে মুহিবুর রহমান। জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলার অহিয়াশংকর মৌজার জে. এল. নং ৫৯ আওতাধীন এস.এ খতিয়ান ১৪৭১, এস.এ দাগ ৫৭৮৬, আর.এস খতিয়ান ১৯৯৪, আর.এস ৫৯৭৭ দাগের ২৭ শতাংশ ও এস.এ খতিয়ান ১৪৭১, এস.এ দাগ ৫৭৭১, ৫৭৮২ আর.এস খতিয়ান ৫৪৮, আর.এস ৫৯৫৯,৫৯৭৩ দাগে ২১ শতকসহ মোট ৪৮ শতক কৃষি জমির প্রকৃত মালিক ছিলেন কুলাউড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের প্রতাবী গ্রামের বাসিন্দা মৃত আলা উদ্দিনের ছেলে সিরাজ মিয়া। ওই জমি দীর্ঘ ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জোরপূর্বক দখল করে ভোগ করছেন সদর ইউনিয়নের গুতগুতি গ্রামের আরশাদ আলীর ছেলে প্রভাবশালী রেজান মিয়া।
জমি ফিরে পাওয়া সিরাজ মিয়া জানান, আমার চাচা নওয়াজ ও ফয়জুল্ল্যার কাছ থেকে ১৯৬৩ সালে রেজান মিয়ার দাদা নজাত মিয়া একটি সংশোধনী দলিল প্রতারণা করে তৈরি করেন। সেই দলিলের ভিত্তিতে আমার মৌরসী ৪৮ শতক ভূমি রেজান মিয়া তার স্ত্রী ছইফার নামে কাবিননামায় দেন। ওইসময় আমার পিতা আলাউদ্দিন বাধা দিলে তারা প্রভাবখাটিয়ে তাকে হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক জায়গাটি দখলে নেন। কিন্তু ওই জমির সরকারি খাজনা প্রতিবছর আমি পরিশোধ করে আসছি। দীর্ঘ ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রভাশালী রেজান মিয়া জোরপূর্বক জমিটি অন্যায়ভাবে দখল করে ভোগ করে আসছে। স্থানীয়ভাবে চেয়ারম্যানসহ গণমান্যব্যক্তিদের কাছে একাধিকবার বিচার প্রার্থী হলেও রেজান মিয়া সালিশে বসতে রাজি হননি। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবরে জমি উদ্ধারের জন্য একটি আবেদন করলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আমার মৌরসী জমিটি ফিরে পাই। জীবনের শেষ সময়ে জমি ফিরে পাওয়ায় উপজেলা প্রশাসনসহ সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
জমি উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহরুল হোসেন বলেন, রেকর্ডীয় মালিক হওয়া সত্ত্বেও দখল বুঝে পাচ্ছিলেন না সিরাজ মিয়া। অভিযোগ পাওয়ার পর উভয় পক্ষের দলিলসহ প্রয়োজনীয় কাগজাদি যাচাই করে রেকর্ডীয় জমির যার যার অংশের দখল বুঝিয়ে দেয়া হয়। রেকর্ডীয় মালিক সিরাজ মিয়া ৪৮শতক জমির দখল বুঝে পেয়েছেন।