হাওর থেকে শালুক শাপলা ভ্যাট সংগ্রহ করে বিক্রি হচ্ছে শহরে এভাবেই চলছে শতাধিক সংসার

তানভীর চৌধুরী : মৌলভীবাজারের হাওরে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে শালুক উৎপাদন। হাওরে দীর্ঘদিন পানি থাকায় বছরের এই তিন মাস হাওরের পাড়ের অনেক মানুষ শালুক তুলে বাজারে বিক্রি করছেন। বাজারে শালুকের চাহিদা থাকায় আগ্রহ নিয়ে ক্রেতারা শালুক কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

জেলার শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া, রাজনগর, সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন উপজেলায় হাকালুকি, হাইল হাওরসহ বিভিন্ন হাওর রয়েছে। এসব হাওরে মাছের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ শালুক পাওয়া যায়। অনেক কৃষক বছরের তিন মাস শালুক বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। বর্ষাকালে হাওরে পানি থাকলেও শীত মৌসুমে পানি কমায় শাপলা, শালুক, পানিফলসহ ব্যাপক পাওয়া যায়।
জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের আব্দুল বাসিত বলেন, ‘আমরা হাইল হাওর থেকে শালুক, শাপলা, ভ্যাট সংগ্রহ করে মৌলভীবাজার জেলা শহরে এনে বিক্রি করি। দুই দিনে প্রায় ৮০ কেজি শালুক বিক্রি করার জন্য সংগ্রহ করা যায়। হাওর থেকে সবচেয়ে বেশি শালুক সংগ্রহ করি। বাজারে শালুক সিদ্ধ ও কাচা বিক্রি করা যায়। প্রতি কেজি শালুক ৬০ টাকা, ভ্যাট ৫০ টাকা ও শাপলা ২০ টাকা করে আঁটি বিক্রি করি। প্রায় ২০ বছর ধরে হাওর থেকে বছরে তিন মাস শালুক সংগ্রহ করি। আমার মতো আরও অনেকে শালুক বিক্রি করে সংসার চালান।’
মৌলভীবাজার শহরে শালুকের ক্রেতা শাহজাহান আলী বলেন, ‘আমি শহরে শালুক দেখে বাড়ির জন্য কিনলাম। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। একটা সময় বাজারে প্রচুর শালুক পাওয়া গেলেও এখন হঠাৎ পাওয়া যায়।
একেকটি শালুক গড়ে ৫০ গ্রাম ওজন হয়। এটি কাঁচা ও সিদ্ধ করে খাওয়া যায়। শালুক আলুর মতো ক্ষুধা নিবারণের জন্য শরীরে পর্যাপ্ত শক্তিও জোগায় বলে জানা গেছে। তবে প্রচুর আয়রন থাকায় অনেকের কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে বলে জানান চিকিৎসকেরা।
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, এ জেলায় বৃহৎ অঞ্চল হাওর থাকায় অনেক শাপলা শালুক পাওয়া যায়। হাওরের অনেক মানুষ শালুক সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করেন। প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো শালুক বিনা মূল্যে সংগ্রহ করে খাওয়ার পাশাপাশি অনেকেই বাজারে বিক্রি করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *