ডেস্ক রিপোর্ট : নিখোঁজের ৭ দিন পর মিলেছে সিলেটের কানাইঘাটের ৬ বছরের শিশু মুনতাহার লাশ। শিশুটির সাবেক গৃহশিক্ষিকা, শিক্ষিকার মা ও নানি তিনজন মিলে তাকে হত্যা করে মাটিতে পুঁতে ফেলে।
রোববার (১০ নভেম্বর) ভোরে মুনতাহার পুঁতে ফেলা মরদেহ তুলে পুকুরের পানিতে ফেলার সময় স্থানীয়রা গৃহশিক্ষিকার মা আলিফজান বিবিকে হাতেনাতে আটক করেন।
কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল আউয়াল জানান, মুনতাহার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতিবেশী মর্জিয়া আক্তার ও তার মা আলীফজান মিলে তাকে হত্যা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, মুনতাহাকে অপহরণের পর ওইদিনই তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ ঘরের পাশের একটি খালে কাদামাটিতে পুঁতে রাখা হয়। এরপর আলীফজান বেগম রোববার (১০ নভেম্বর) ভোরে লাশ সরানোর চেষ্টাকালে স্থানীয়রা দেখে ফেলেন। এ সময় স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় মর্জিয়া, তার মা ও নানিকে আটক করা হয়। এর মধ্যে আলীফজান ভিক্ষাবৃত্তি করতেন। তবে কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি।
এদিকে মুনতাহা নিখোঁজের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার ছবি শেয়ার করে অনেকেই সন্ধান চেয়েছেন। সেই কাতারে ছিলেন শোবিজের অনেক তারকা। তার মৃত্যুর খবর শুনে সবাই হতভম্ব। অনেকেই তার ছবিটি শেয়ার করে নিজেদের অনুভূতির কথা লিখছেন।
অভিনেত্রী এলিনা শাম্মী মুনতাহার একটি ছবি ও শেয়ার করে তার ফেসবুকে লিখেছেন তিনজন হত্যাকারীর ছবি পোস্ট করে নিজের ফেসবুকে লিখেন, এদেরকে কি মানুষ বলা যায়? এতটুকু শিশুকে যারা খুন করে তাদের কীভাবে মানুষ বলি! তাহলে তারা আসলে কি! একজন নারী, যিনি একজন মা, সে কীভাবে এত নিষ্ঠুর হয়। আহা ফুটফুটে মুনতাহা, এমন গোলাপ কলি ফুটতে দিলো না দৈত্যের দল। বেহেশতী ফুল তুমি সেখানেই ফুটে থেকো। তবে দুনিয়াতে তুমি তোমার বাবা-মায়ের কাছে যে দোজখের আগুন ফেলে গেলে সে আগুন কোনো সান্ত্বনায় নিভবে জানি না। আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে ধৈর্য ধারণ করার শক্তি দিন।
তিনি আরও বলেন, এই অপরাধীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। গায়ের জোড়ে, নিজের জিদ তেজ প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে যারা মানুষ খুন করে বা করতে চায় তারা মানষিক বিকারগ্রস্ত। তারা হিংস্র। হিংস্র প্রাণী যেমন লোকালয়ে রাখা যায় না, তাদের হয় জঙ্গলে অথবা লোহার সিকের বেষ্টনীতে রাখা হয়, এই মানুষদেরও আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি প্রদান করে আটকে রাখা উচিত। মাথাটা আউলা লাগছে, এই নিউজটা নেওয়া যাচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, রোববার (৩ নভেম্বর) সকালে মুনতাহাকে নিয়ে স্থানীয় একটি ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফেরেন তার বাবা। পরে শিশুটি প্রতিদিনের মতো আশপাশের বাড়িতে শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে যায়। বিকেল ৩টার পরও বাড়ি না ফেরায় পরিবার থেকে মুনতাহাকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। তারপর তাকে আর কোথাও পাওয়া যায়নি।