‘হুমায়ূন আহমেদের কারণেই আমার আজকের জনপ্রিয়তা’-ফারুক আহমেদ

অপূর্ণ রুবেল: জনপ্রিয় অভিনেতা ফারুক আহমেদ। থিয়েটার ও টেলিভিশন মিলিয়ে অভিনয় জীবনের ৪০ বছর পার করেছেন আগেই। তবে ফারুক আহমেদ জনপ্রিয় হয়েছেন আরেক জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের নাটকে অভিনয় করে। আজ হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন।
তাকে নিয়ে কথা বলেছেন ফারুক আহমেদ।

আজ কোথায় আছেন? কেমন আছেন?

আমি আজ ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে আছি। একটা শুটিং করছি। কসবাতে আছি।
ভালোই লাগছে। ভালো আছি।

আপনি নিশ্চয়ই অবগত, আজ জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন। উনার সঙ্গে আপনার দারুণ সখ্যতা ছিল।
উনার অধিকাংশ নাটকে কাজ করেছেন আপনি। উনাকে নিয়ে নতুন কিছু শুনতে চাই।

তার সঙ্গে আমার সম্পর্ক কেমন ছিল, সেটা সবাই মোটমুটি জানেন। নতুন করে বলার কিছু নেই। উনার ছোট ভাই আহসান হাবিব আমার বন্ধু।
হুমায়ূন আহমেদের প্রথম বই প্রকাশের পরপরই তুমুল জনপ্রিয়তা পান। তারপর একদিন আমার বন্ধুর সঙ্গে তাদের বাড়িতে যাই তার বড় ভাই হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে দেখা করতে। সেদিন অবশ্য খুব বেশি আলাপ হয় নাই। তারপর আমি কিছুদিন পরে ঢাকা থিয়েটারে যোগ দিই। প্রায় ১০ বছর থিয়েটার চর্চার পর ঢাকা থিয়েটার থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে কাজের সুযোগ তৈরি হয়। প্রযোজক রিয়াজ উদ্দিন বাদশার মাধ্যমে তার নাটকে কাজের সুযোগ হয়। এর পর থেকে আর থামি নাই। উনার নিয়মিত শিল্পী তালিকায় ঢুকে যাই। উনার ‘অচিন বৃক্ষ’ নাটক থেকে শুরু আর উনার সর্বশেষ নির্মাণ ‘পিপীলিকা’য় করেছি।

ডা. এজাজুল ইসলাম, স্বাধীন খসরু ও আপনি আপনারা তিনজন মিলে উনার অনেক নাটকে অভিনয় করেছেন।

হ্যাঁ। আমাদের নিয়ে উনি অনেকগুলো নাটক করেছেন। তবে ওদের দুজনের চেয়ে আমি উনার নাটক বেশি করেছি। উনার কারণেই আমার আজকের জনপ্রিয়তা। বলতে পারেন আজকের ফারুক আহমেদ।

হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন নিয়ে একটু কথা বলি। উনি বেঁচে থাকতে কিভাবে জন্মদিন পালন করতেন?

আমরা সবাই জানি, উনি খুব আড্ডাপ্রিয় মানুষ ছিল। উনি খুব আনন্দ নিয়ে যে কারো জন্মদিন পালন করতেন। উনার জন্মদিনে উনার তো কিছু করার ছিল না। আমরা সবাই আনন্দ করতাম। তবে উনি আরেকটা কাজ করতেন, সেটা হলো নুহাশপল্লী বা উনার টিমের যে কারো জন্মদিন হলে তিনি সেটা খুব ঘটা করে পালন করতেন। শুধু উনার কানে যাওয়া দরকার ছিল, তাহলেই একটা হুলুস্থুল বাঁধিয়ে ফেলতেন। সেটা প্রডাকশনের কোনো ছেলের জন্মদিন হলেও। পুরো নুহাশ পল্লীজুড়ে মোমবাতি জ্বালাতেন। কেক কাটটেন। ব্যাপক খাওয়াদাওয়া হতো।

ফারুক আহমেদ ও হুমায়ূন আহমেদ

উনার দ্বিতীয় বিয়ের পরে কি আপনার সঙ্গে কোনো দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছিল? একেবারেই না। উনার সঙ্গে একই রকম সম্পর্ক ছিল আমার। উনি ক্যান্সার চিকিৎসা করে ১৫ দিনের জন্য দেশে এসেছিলেন। তখনই আমাকে ফোন করেছিলেন। তারপর ওই সময় করা ‘পিপীলিকা’ নাটকে আমি অভিনয় করেছি। বললাম না, উনার জীবনের শেষ নাটকেও আমার অভিনয় করা হয়েছে। এটা আমার সৌভাগ্য।

আপনি হুমায়ূন আহমেদ থেকে শুরু করে এই সময়ের পরিচালকের সঙ্গে কাজ করছেন। কাজের ধরন অনুযায়ী কোনো পার্থক্য খুঁজে পান?

আসলে সময়, গল্প, প্রযুক্তি এসবের সঙ্গে তো পার্থক্য থাকেই। তবে এই সময়ের অনেক পরিচালকই মেধাবী। তারা ভালো কাজ করছেন। হুমায়ূন আহমেদের কাজের একটা ধরন ছিল। সেভাবেই করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *