কুলাউড়ায় পূর্ব বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের পান গাছ কর্তনের অভিযোগ

কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি:

কুলাউড়ায় পূর্ব বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের পান জুমে দুই দফায় তান্ডব চালিয়ে প্রায় ৫ হাজার পান গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ ওঠেছে। গত ৪ ও ১৭ নভেম্বর উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের মনছড়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মাসুক মিয়া পান গাছ কর্তনের সাথে জড়িত সন্দেহে স্থানীয় ৪ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। পরে কুলাউড়া থানার এসআই মোহাম্মদ আলী ও মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পান গাছ কাটার সত্যতা পেয়েছেন।

অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের মনছড়া এলাকার বাসিন্দা মাসুক মিয়ার সাথে একটি মামলার স্বাক্ষ্য দেয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছে একই এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মালিকের ছেলে মো. আনফরের। ওই বিরোধের জেরে আনফরের নেতৃত্বে একই এলাকার চেরাগ আলীর ছেলে মো. জাকির, তমিজ মিয়ার ছেলে মো. আনছার ও মো. আমির আলীর ছেলে রইছ আলী মিলে গত ৪ নভেম্বর রাতে মনছড়া এলাকায় মাসুক মিয়ার পানজুমে প্রবেশ করে প্রায় ২৫০০ পান গাছ কর্তন করে। এতে মাসুক মিয়ার পানজুমে প্রায় ৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। এরপর এ ঘটনায় আনফর, জাকির, আনছার ও রইছের বিরুদ্বে কুলাউড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী মাসুক মিয়া। এই অভিযোগের পর গত ১৭ নভেম্বর মধ্যরাতে ফের মাসুক মিয়ার পানজুমে প্রবেশ করে আরো পান গাছ কর্তন করা হয়। দুই দফায় প্রায় ৫ হাজার পান গাছ কর্তন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মাসুক মিয়া। এতে মাসুক মিয়ার পানজুমের প্রায় ২০-২২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মাসুক মিয়া বলেন, কালিটি চা-বাগান থেকে লিজ নিয়ে মনছড়া এলাকায় আমিসহ অনেকেই পানজুম করেছি। দীর্ঘ ৯ বছর ধরে নিজের সন্তানের মতো পানজুমটি পরিচর্যা করেছি। বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে যখন পান বিক্রি করে লাভবান হবো ঠিক তখনই পূর্ব বিরোধের জেরে দুই দফায় আমার পানজুমে প্রবেশ করে মনছড়ার বাসিন্দা আনফর, জাকির, আনছার ও রইছের নেতৃত্বে পান গাছ কর্তনের তান্ডব চালানো হয়। এতে আমার প্রায় ২০-২২ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন হয়। পান বিক্রি করে যে আয় হয় তা দিয়ে ছেলে, মেয়ে স্ত্রীসহ সাত সদস্যের পরিবার চলে। তিনি আরো বলেন, মনছড়া এলাকায় অনেকের পানজুম থাকলেও প্রায় সময় আমার পান জুমের পান গাছ বিনষ্ট করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ওই চক্রটি। বর্তমানে বিবাদীরা আমাকে বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। আমি প্রশাসনের কাছে ন্যায় বিচার চাই।

পান গাছ কাটার বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্তদের মধ্যে মো. আনছার বলেন, আমরা পান গাছ কাটার সাথে জড়িত নই। ষড়যন্ত্র করে আমাদের ফাঁসানোর জন্য মাসুক মিয়া মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।

এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা কুলাউড়া থানার এসআই মোহাম্মদ আলী ও মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পান গাছ কাটার সত্যতা পাওয়া গেছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনায় মাসুক মিয়া পৃথক দুটি অভিযোগ দিয়েছেন। অন্যদিকে প্রতিপক্ষ আনফরও একটি অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত শেষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *