কুলাউড়ায় সালিস বৈঠকে অন্ত:সত্ত্বা নারীকে মারধরের অভিযোগ

কুলাউড়া প্রতিনিধি: কুলাউড়ায় একটি সালিস বৈঠকে মনোয়ারা বেগম (২৬) নামের অন্তসত্ত্বা এক নারীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। অসুস্থ অবন্থায় ওই নারীকে পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। গতকাল ২৯ ডিসেম্বর রোববার বিকেলে উপজেলার কৌলা এলাকায় বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের কার্যালয়ের সামনে ঘটে। এ ব্যাপারে ওই নারীর স্বজনদের পক্ষ থেকে কুলাউড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১০ মাস আগে কুলাউড়া পৌর শহরের গ্রাম শিবির সড়ক এলাকার বাসিন্দা ইকবাল হোসেনের সঙ্গে একই উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের মনরাজ গ্রামের মনোয়ারা বেগমের বিয়ে হয়। এরই মধ্যে তিনি অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়েন। পারিবারিক নানা বিষয়ে  তাঁদের মধ্যে কলহ চলছিল। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে সম্প্রতি মনোয়ারা বাবার বাড়িতে চলে যান। এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে তিনি সম্প্রতি ব্র্যাকের লিগ্যাল এইড বিভাগে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার বিকেলে ব্র্যাকের কার্যালয়ে সালিস বসে। সেখানে ব্র্যাকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। সালিসের শেষ পর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মনোয়ারার ননদ স্কুলশিক্ষিকা আনজুমা সুলতানা ও সুইটি আক্তার তাঁকে কিল-খুষি ও লাথি মারেন। এ সময় উপস্থিত লোকজন তাঁদের নিবৃত্ত করেন। রাতে মনোয়ারার ভাই ইয়ামিছ আলী বাদী হয়ে দুই ননদ, স্বামীসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেন। সালিসে অংশগ্রহনকারী কুলাউড়া পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর জহিরুল ইসলাম বলেন, সালিসের শেষ পর্যায়ে দু’পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি লেগে যায়। এ সময় মনোয়ারা আঘাত পান। জহিরুল ইসলাম বলেন, সালিসে মনোয়ারার স্বামী ইকবাল হোসেন স্ত্রীকে গ্রহন করতে রাজি নন বলে জানান। মনোয়ারা আট মাসের অন্ত:সত্ত্বা থাকায় স্বামীর পক্ষ থেকে প্রতি মাসে ভরণপোষণ বাবদ তাঁকে পাঁচ হাজার টাকা করে এবং সন্তান প্রসবে অর্ধেক খরচ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ব্র্যাকের লিগ্যাল এইডের কর্মকর্তা বিউটি রায় বলেন, তাঁদের কার্যালয়ের বাইরে ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে তিনি ৩০ ডিসেম্বর সোমবার সকালে মনোয়ারাকে দেখতে হাসপাতালে যান। অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে মনোয়ারার ননদ স্থানীয় কৌলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আনজুমা সুলতানা বলেন, তিনি ব্যস্ত। পরে এ বিষয়ে কথা বলবেন। এরপর আরও কয়েক দফা চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফেরদৌস আক্তার বলেন, মনোয়ারার বুক ও হাতে কিছু স্থানে আঘাত লেগেছে। তাঁর চিকিৎসা চলছে। অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: গোলাম আপছার বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *