জুড়ীতে প্রবাসী পরিবারকে একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানি প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগীদের সংবাদ সম্মেলন

জুড়ী প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের পশ্চিম বটুলী গ্রামের এক প্রবাসী পরিবারের ৬ সদস্যের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (৫ মার্চ) সন্ধ্যায় প্রতিকার চেয়ে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করে প্রবাসী মঈন উদ্দিন বলেন, ‘একই গ্রামের আব্দুল মালিক ও তার দুই ছেলে সন্ত্রাসী প্রকৃতির মানুষ। এলাকায় তাদের অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ট। তাদের দাপটে মানুষজন চরম আতংকের মধ্যে বসবাস করতে হচ্ছে। জুলুমবাজ আব্দুল মালিক ও তার ছেলে আব্দুস শহীদ (২৮) জাকির হোসেন (২২) সম্প্রতি আমাদের রান্না ঘরের পার্শে^ টয়লেটের ট্যাংকি নির্মাণ করে প্রতিবন্ধিকতা তৈরি করেন। কাঁচা এই টয়লেটের ট্যাংকির র্দুগন্ধে আমাদের রান্না ঘরে রান্না করা থেকে শুরু করে বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে। বিষয়টি ফুলতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম সেলু এবং পঞ্চায়েতের মুরব্বিগনকে জানালে তারা একটি শালিস বৈঠক করেন। শালিস বৈঠকে চেয়ারম্যান ও পঞ্চায়েতের মুরব্বিগন টয়লেটের ট্যাংকিটি সরানোর জন্য আব্দুল মালিককে বলেন। আব্দুল মালিক শালিস বৈঠকের সিদ্বান্ত মানলেও অনেক দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও তিনি টয়লেটের কাঁচা ট্যাংকিটি সরাননি। উল্টো এ বিষয়ে কথা বললে মইন উদ্দিনের পরিবারকে বিভিন্নভাবে নাজেহালের চেষ্টা করেন।’
প্রবাসী মইন উদ্দিন আরো বলেন,‘ জুলুমবাজ আব্দুল মালিক ও তার দুই পুত্র আমার মালিকানাধীন বাঁশ কেটে নিয়ে যেতে চাইলে তাতে বাধা দিলে সন্ত্রাসী আব্দুস শহীদ ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমাকে আমার মাথার তালুতে ২ টি কুপ মারেন এবং শহীদের ছোট ভাই সন্ত্রাসী জাকির হোসেন আমার মাথায় ছেদ দিলে আমার মাথায় ৮ টি সেলাই লাগে এবং নাকে আঘাত করলে সেখানেও ৪ সেলাই লাগে। তখন আমার চিৎকারে আমার পিতা বৃদ্ধ মখলিছ আলী (৭০), মাতা হাফিজুন্নেছা ও স্ত্রী রাহেলা আক্তার এগিয়ে এসে আমাকে সন্ত্রাসীদের কবল থেকে রক্ষার চেষ্টা করলে সন্ত্রাসীরা আমার বৃদ্ধ পিতাকে ও স্ত্রীকে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারাতœক জখম করে। আমার পিতার মাথায় ৩ টি কুপ মারে তাতে ৯ টি সেলাই লাগে। হাতে কুপ দিলে তাতে ৪ টি সেলাই লাগে। আমার স্ত্রীকে মারধর করে এবং আমার মাতাকেও মারধর করে জখম করে। আমি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশে থানায় মামলা দিলে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে একের পর এক আমি আমার পরিবারের ৬ সদস্যের বিরুদ্ধে থানা ও আদালতে ৩ টি মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদেরকে হয়রানি করছে। আমাদের বিরুদ্ধে ছিনতাই, ডাকাতির মতো গুরুতর অপরাধের সাথে জড়ানোর অপ্রচেষ্টায় হয়রানি করার জন্য এসব মামলা দিচ্ছে। আমরা এই অন্যায় জুলুমবাজের বিচার চাই। ’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত পশ্চিম বটুলী পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি রকিব উদ্দিন, ফুলতলা বস্তি পঞ্চায়েতের মুরব্বি আব্দুর রহমান, মুরব্বি মোক্তাদির, আজিজুর রহমান, রজব আলী, লিয়াকত আলী জানান, আব্দুল মালিক,তার স্ত্রী ও পুত্ররা পঞ্চায়েতের মুরব্বি থেকে শুরু করে চেয়ারম্যান মেম্বারদের কথা না শুনে সম্পূর্ণ শক্তির জোরে মঈন উদ্দিনের পরিবারের সাথে অন্যায় করে যাচ্ছে। টয়লেটের ট্যাংকিটিও বসিয়েছে মঈন উদ্দিনের রান্না ঘরের একেবারে পাশে। এর পরে জোরর্পূবক বাঁশ কেটে নিয়ে গেছে। এমনকি মঈন উদ্দিনের ভাই, পিতা মাতাও স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে রক্তাত্ত করেছে। নিরীহ মঈন উদ্দিনের পরিবারের পুরুষ-মহিলাসহ ৬ সদস্যের বিরুদ্ধে উল্টো ৩ টি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। আমরা ২ পঞ্চায়েতের মানুষজন শান্তি চাই এবং আব্দুল মালিকের বিচার চাই।
এ ব্যাপারে ফুলতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম সেলু জানান, আব্দুল মালিক পক্ষ টয়লটেরে ট্যাংকি বসানোর ফলে মইন উদ্দিন গংরা আপত্তি করেছেন। এবং মইন উদ্দিনের পক্ষের লোকজন ট্যাংকির পাইপ কেটে ফেলেছেন এ ধরনের অভিযোগ পেয়ে দু’পক্ষকে নিয়ে শালিস বৈঠক করেছি। কিন্তু আব্দুল মালিক পক্ষের অসহযোগিতার কারণে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়নি। ওই বিরোধের জেরে হামলার ঘটনাও ঘটেছে। উভয় পক্ষ মামলা মোকদ্দমাও করেছেন।
ছবি ক্যাপশনঃ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন প্রবাসী মঈন উদ্দিন। পাশে বসা দুই পঞ্চায়েতের মুরব্বিগন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *