কুলাউড়া প্রতিনিধি : কুলাউড়া পৌরসভার আগামী ১৬ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী মেয়র ও কাউন্সিলরসহ ২৩ প্রার্থীকে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মোট ৯৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এরমধ্যে বর্তমান মেয়রসহ ৪ জন মেয়র প্রার্থী ও ১৯ জন কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন।
৭ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার রাতে বিভিন্ন প্রার্থী নির্বাচনী প্রচারণায় আচরণবিধি লংঘন করায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রুহুল আমিনের নেতৃত্বে এবং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মোঃ আহসান ইকবালসহ কুলাউড়া থানা পুলিশের সহযোগিতায় পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে মোবাইল কোর্টের অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে অতিরিক্ত সাইজের পোস্টার ব্যবহার, দেয়ালে পোস্টার ও ষ্টীকার লাগানো, বিলবোর্ড লাগানোর অপরাধে ৭ জন কাউন্সিলার প্রার্থীকে মোট ১৮ হাজার টাকা অর্থদন্ড করে জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
যাদের বিরুদ্ধে অর্থদন্ড করা হয়েছে তারা হলেন ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলার প্রার্থী মস্তফা সালেহ আহমদ ৩ হাজার টাকা ও কামাল আহমদ ৪ হাজার টাকা, ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলার প্রার্থী জহির খান ৩ হাজার টাকা, ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলার প্রার্থী জয়নাল আবেদীন বাচ্চু ৩ হাজার টাকা, মাসুক মিয়া ৩ হাজার টাকা, ইশ্রাব আলী ১ হাজার টাকা ও সংরক্ষিত ২ নং ওয়ার্ডের প্রার্থী আনোয়ারা বেগম ১ হাজার টাকাসহ মোট ৭জন প্রার্থীকে ১৮ হাজার টাকা অর্থদন্ড করা হয়।
৪ জানুয়ারী সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নেজারত (ডেপুটি কালেক্টর) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আচরণবিধি ভঙ্গ করায় ২ জন মেয়র প্রার্থী ও ৩ জন কাউন্সিলর প্রার্থীকে জরিমানা করা হয়। উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মোঃ আহসান ইকবাল ও অফিস সহকারী কাজী মোঃ আনোয়ার হোসেনসহ কুলাউড়া থানা পুলিশের সহযোগিতায় পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে মোবাইল কোর্টের অভিযান পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর হোসেন ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আরিফুল ইসলাম। সোমবারের অভিযানকালে বর্তমান মেয়র ও আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শফি আলম ইউনুছ (নারিকেল গাছ) কে নারিকেল গাছের জীবন্ত প্রতীক ব্যবহার করে তাঁর কর্মী সমর্থকরা প্রচারণা চালাচ্ছেন ও তাঁর নির্বাচনী ক্যাম্পে জীবন্ত প্রতীক রাখার অভিযোগে ১০ হাজার টাকা, বিএনপির প্রার্থী ও সাবেক মেয়র কামাল উদ্দিন আহমদ জুনেদ (ধান) কে ধানের জীবন্ত প্রতীক দিয়ে সিএনজি অটোরিক্শা দিয়ে প্রচারণা চালানোর অভিযোগে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আব্দুল কুদ্দুস (উটপাখি) কে দেয়ালে পোস্টার সাঁটানো ও ককশিট দিয়ে উটপাখির প্রতীকে আলোকসজ্জার অভিযোগে ৪ হাজার টাকা, ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর মোঃ হারুনুর রশীদ (পানির বোতল) কে গাছে অবাধে পোস্টার সাঁটানো ও নির্বাচনী ক্যাম্পে পোস্টার সাঁটানোর অভিযোগে ৫ হাজার টাকা ও অহিদ বখ্শ মান্না (গাজর) কে তাঁর প্রতীকে আলোকসজ্জা করার অভিযোগে ৫ হাজার টাকাসহ মোট ৫ জন প্রার্থীকে ৩৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
৩ জানুয়ারী রোববার রাতে একই গাড়িতে একাধিক মাইক ব্যবহার, বিভিন্ন স্থানে নির্দিষ্ট সাইজের চেয়ে অতিরিক্ত সাইজের পোস্টার ব্যবহার ও দোকানপাটসহ বিভিন্নস্থানে স্টিকার লাগানোর অপরাধে দুই জন মেয়র প্রার্থী ও ৯ জন কাউন্সিলর প্রার্থীকে মোট ৪৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। যাদের বিরুদ্ধে জরিমানা করা হয়েছে তাঁরা হলেন, মেয়র প্রার্থী সিপার উদ্দিন আহমদ (নৌকা) ৮ হাজার টাকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শাজান মিয়া (জগ) ৮ হাজার টাকা, ১নং সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী সুফিয়া বেগম চৌধুরী ৩ হাজার টাকা, ২নং সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী রাজিয়া সুলতানা চৌধুরী ৩ হাজার টাকা ও রেহানা পারভিন ২ হাজার টাকা, ৩নং সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী নার্গিস আক্তার ২ হাজার টাকা ও সুমাইয়া রহমান ৩ হাজার টাকা, ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী কামাল আহমদ ৩ হাজার টাকা, ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী জহির খান ৩ হাজার টাকা ও হারুনুর রশীদ ভূঁইয়া ৫ হাজার টাকা এবং ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী জহিরুল ইসলাম খান ৩ হাজার টাকাসহ মোট ১১ জন প্রার্থীকে ৪৩ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মোঃ আহসান ইকবাল বলেন, মনোনয়ন জমাকালীন সময় ও প্রতীক বরাদ্দের দিন সকল প্রার্থীকে আচরণবিধি মেনে চলার বিষয়ে কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তুু অনেক প্রার্থী আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন। তাই মোবাইল কোর্টের অভিযান পরিচালনা করা করে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।