জনসাধারণের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করলেন বিজিবি সদস্য

বিশেষ প্রতিনিধি : পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার ৩ নং আমড়াগাছীয়া ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ময়দা গ্রামে এক বিজিবি সদস্যের বিরুদ্ধে গাছ লাগিয়ে শত বছরের পুরানো জনসাধারনের চলাচলের রাস্তা বন্ধের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে মির্জাগঞ্জ থানায় সেই বিজিবি সদস্যের বিরুদ্ধে ১লা অক্টোবর শনিবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা। মির্জাগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দুই মাসের ছুটিতে এসে ময়দা গ্রামের ভূইয়া বাড়ির বাসিন্দা মন্নান ভূইয়ার ছোট ছেলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে কর্মরত মোঃ মেহেদী হাসান সোহেল মেইন সড়ক হতে বাড়ি থেকে আসা ও যাওয়ার দড়জা ও বাড়ির ৭টি পরিবারের এবং সেই বাড়িতে অবস্থিত জামে মসজিদের মুসুল্লীদের চলাচলের একমাত্র সড়কে গায়ের জোরে কাউকে কিছু না জানিয়ে একাধিক মেহগনি গাছের চারা রোপন করে সড়কটি বন্ধ করে দেয়। এতে ভূইয়া বাড়ির কয়েকশত বাসিন্দাসহ মসজিদের মুসুল্লীদের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যার কারনে সেই বাড়ির বাসিন্দারা ও মসজিদের মুসুল্লীরা চলাচল করতে পারছেন না। উল্লেখ্য যে,মসজিদে যাবার বিকল্প কোন পথ না থাকায় মুসুল্লিদের যাবার রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারনে এলাকার জনসাধারণের মাঝে চাপা ক্ষোপ বিরাজ করছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভূইয়া বাড়ির দুই প্রবীন বাসিন্দা মোঃ ছত্তার ভূইয়া ও আতাহার ভূইয়া বলেন একবার রাসেল ও সোহেল দুই ভাই মিলে ইউসুফ ভূইয়ার জমিতে অবৈধভাবে বালু ভরাট করেছিল পরে ইউসুফ ভূইয়া থানায় মামলা করলে সেই জমি ইউসুফ ভূইয়াকে মাইপ্পা দিতে বাধ্য হয় এখন আবার ইউসুফ ভূইয়ার সেই জমির উপর দিয়ে আবার রাস্তা নেতে চায় যার কারনে পুরানো রাস্তায় আমাদের কাউকে কিছু না জানিয়ে মেহগুনি গাছ লাগাইয়া রাস্তা বন্ধ করছে, আমরা নতুন রাস্তা চাইনা আমরা আমাদের বাপ-দাদার তৈরী পুরানো রাস্তাই চাই। স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্য মোসা: বুলবুলির সাথে কথা বললে তিনি বলেন আমি জানতে পেরেছি যে, সোহেল রাস্তার মধ্যে গাছ লাগাইছে সে এটা ঠিক করে নাই এটা অবশ্যই আইন বহির্ভূত কাজ। স্থানীয় ইউপি সদস্য ইউসুফ আলীর সাথে এ বিষয়ে কথা বললে তিনি বলেন এটা ভূইয়া বাড়ির নিজস্ব কোন্দল শুকনার সিজনে এটা সমাধান হওয়ার কথা আছে, গাছ রোপন বেআইনী কিনা জানতে চাইলে তিনি স্পষ্ট কোন বক্তব্য দেন নি। অভিযুক্ত বিজিবি সদস্য মোঃ মেহেদী হাসান সোহেলের সাথে মোবাইল ফোনযোগে জনসাধারনের চলাচলের সড়কে গাছ রোপন করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি আমার বাবার জমিতে গাছ লাগাইছি এবং যে রাস্তায় গাছ লাগাইছি সেটা পরিত্যক্ত রাস্তা অন্য জায়গায় বালু ভরাট করে আরেকটি নতুন রাস্তা করা হয়েছে। নতুন রাস্তা অন্যের জমিতে করা হয়েছে মর্মে প্রতিবেদক সোহেলকে প্রশ্ন করলে সোহেল তার কোন স্বদত্তর দিতে পারে নি। মির্জাগঞ্জ থানার দায়ীত্বপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর এস.এম.আবুল কালাম আজাদ বলেন হ্যা আমি ঘটনাস্থল সরেজমিনে তদন্ত করে অভিযোগের শতভাগ সত্যতা পেয়েছি। বিজিবি সদস্য সোহেল নিজে স্বীকার করেছেন যে ঐ রাস্তায় তিনি গাছ লাগিয়েছেন যার ভিডিও রেকডিং আমার কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, তদন্ত কর্মকর্তা আরো বলেন আমরা প্রথমবার গিয়ে তার বাবা মার সাথে কথা বললে অনেক কথা-কাটা-কাটির পরে তার বয়োজোষ্ঠ বাবা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে তিনি নিজে লাগানো গাছগুলো উপরে ফেলে, পরে আমরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার ১৫-২০ মিনিট পরে পুনরায় সোহেল ও তার মা আবার গাছগুলো রোপন করেন। খবর পেয়ে ওসি স্যারের নির্দেশে আবার সেখানে গেলে সোহেল তার বাসার দড়জা বন্ধ করে আত্নগোপনে চলে যায়, পরে আমরা অনেক সময় ধরে অপেক্ষা করলে বাসার দড়জা না খুলে তিনি ও তার মা জানালা দিয়ে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করেন এবং তার ছোট বোন কলি আক্তার আমাদের চাকরি খেয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। সোহেলসহ তার পুরা পরিবার কাউকে পরোয়া করেনা কোন আইন-কানুন মানে না। মির্জাগঞ্জের উপজেলা চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিকী বলেন আমার কাছে এ বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ নিয়ে আসে নাই আসলে তদন্ত করে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবো। আর আমি যতটুকু জানি কোন ভূমিদস্যু মানুষের হাটার রাস্তা কোন ভাবেই বন্ধ করতে পারবে না এটা রাষ্টীয় আইন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *