আ. লীগ ছেড়ে দুধ দিয়ে গোসল করলেন ইউপি চেয়ারম্যান

কুমিল্লা প্রতিনিধি: কুমিল্লার দেবীদ্বারে কামরুজ্জামান মাসুদ নামের এক ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে দুধ দিয়ে গোসল করেছেন। শনিবার (১৭ আগস্ট) উপজেলার ফতেহাবাদ ইউপির চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামানের এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মাসুদ সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের অনুসারী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে দলীয় প্রভাব বিস্তারসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, নিজ বাড়ির ছাদে বসে দুধ দিয়ে গোসল করছেন চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মাসুদ। এ সময় তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডে আমি অতিষ্ঠ। তারা সন্ত্রাস বাহিনী ও পুলিশ দিয়ে নির্বিচারে নিরিহ ছাত্র ও সাধারণ মানুষ হত্যা করেছে। তারা আয়নাঘর বানিয়ে দিনের পর দিন নিরাপরাধ মানুষকে গুম করে রেখেছে।
আমি এই দল করে লজ্জিত। আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জনগণের ভোটে ফতেহাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি, দলীয় চেয়ারম্যান নয়।’

এর আগে দুপুরে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে দল ত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। এ সময় তিনি দাবি করেন, ‘আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে মামলা-হামলা ছাড়া কিছুই পাইনি।
সব কিছু থেকে বারবার বঞ্চিত হয়েছি। আমি সব সময় চেয়েছি আমার এ ফতেহাবাদ ইউনিয়নবাসীর পক্ষে থাকার। তারা আমাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘আমি এ ফতেহাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলাম, কিন্তু তারা আমাকে দেয়নি। সব সময় একই দলের অন্য নেতাকর্মীদের হাতে হামলার শিকার হয়েছি।
আমি স্বেচ্ছায়-সজ্ঞানে ফতেহাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করলাম। আমি আর আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নই। আমি সমাজসেবায় জড়িত থাকতে চাই।’

আওয়ামী লীগকে চোরের দল আখ্যা দিয়ে মাসুদ বলেন, ‘সন্ত্রাস-দুর্নীতিতে ভরপুর আওয়ামী লীগ। আমি এ দলকে ঘৃণা করি। আমি জীবনেও এই দলের নাম মুখে নেব না।’

তার বিরুদ্ধে ৪ আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কখনোই ছাত্র-জনতার বিপক্ষে যাইনি। গত ৪ আগস্ট দেবীদ্বার সদরে কী হবে, তা আমি জানতাম না। আমাকে দলের সিনিয়র নেতারা ভুল বুঝিয়ে বাড়ি থেকে নিয়ে গেছেন। তারা আমাকে বলেছেন, সারা দেশে যেসব ছাত্র-জনতা নিহত হয়েছেন তাদের স্মরণে শোকযাত্রা করা হবে। তাই দেবীদ্বার স্বাধীনতা চত্বরে শোকযাত্রা ও শোকসভার আয়োজন করা হয়। সেখানে গিয়ে দেখলাম ছাত্র-জনতার সঙ্গে তারা সংঘর্ষে জড়িয়েছে। আমি দুই গ্রুপের মাঝখানে পড়ে গিয়েছিলাম, আমি কাউকে ইটপাটকেল মারিনি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *