মৌলভীবাজারে নতুন করে প্লাবিত  শতাধিক গ্রাম উৎকণ্ঠায় পানিবন্দী ৪ লক্ষাধিক মানুষ

মো: মছব্বির আলী, মৌলভীবাজার:

অবিরাম বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে মৌলভীবাজার জেলার মনু ও ধলাই নদীর ১৩টি স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে বন্যার পানি প্রবেশ করছে। পৃথকভাবে মনু প্রকল্পের দুটি স্থানে ভাঙ্গন দিয়েছে।

ঢলে এ পর্যন্ত জেলার প্রায় তিন শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। চতুর্থ ধাপের এ বন্যায় প্রায় চার লক্ষাধিক লোক পানি বন্ধি অবস্থায় আছে। অনেকেই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র, আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। বিশেষ করে নৌকা না থাকায় বন্যার্তদের উদ্ধার করতে পারছেন না স্বেচ্ছাসেবীরা। তবে বৃহস্পতিবার ও আজ শুক্রবার কোন বৃষ্টি না হওয়ায় মৌলভীবাজারের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।

মৌলভীবাজার জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছেন সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল চৌধুরী মোহাম্মদ আজিজুল হক হাজারী, ওএসপি (বার), এসজিপি, এনডিসি, পিএসসি, এমফিল।

তিনি শহরের মনু নদীর প্রতিরক্ষাবাঁধের ৪টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান, মনু ব্যারেজ, চাঁদনীঘাট ব্রিজ, পৌরসভার ওয়ার্কওয়ে, শাহŸন্দর এলাকা ও রাজনগর উপজেলার কদমহাটা এলাকার মনু নদীর বাঁধ ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে সিলেট বিভাগের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত ঊর্ধবতন এই সেনা কর্মকর্তা। এসময় মৌলভীবাজারের বিদায়ী জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালামসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলে দূর্যোগপূর্ণ সময়ে সেনাবাহিনী সবসময় জনগনের পাশে অতিথের মতো থাকবে। এসময় তিনি বানের পানিতে আটকে পড়াদের উদ্ধারে ৪টি স্পিডবোড প্রদান করার কথা বলেন। এছাড়া ত্রাণ বিতরণ ও ক্ষতিগ্রস্ত সকল বাঁধ মেরামতের আশ্বাশ দেন। মনু নদে পানি বেড়ে মৌলভীবাজার-শেরপুর-সিলেট আঞ্চলিক সড়কের দুটি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সড়কের বালিয়াকান্দি ও শাহবন্দর এই দুটি স্থানের বাঁধ যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। ভাঙনের এই ঝুঁকি এড়াতে সড়ক দিয়ে যান চলাচল সাময়িক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্যার পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সড়ক-সংলগ্ন মনু নদের শহর রক্ষা বাঁধটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। এমতাবস্থায় বন্যার পানি নেমে না যাওয়া পর্যন্ত সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। সংশিষ্ট সবাইকে প্রয়োজনে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

অপর দিকে রাজনগরের দুটি স্থানে মনু নদির বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় মৌলভীবাজার-কুলাউড়া সড়কের কদমহাটা এবং রাজনগর কলেজ এলাকায় সড়ক বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে। এতে মৌলভীবাজার-রাজনগর-ফেঞ্চুগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক সড়ক দিয়েও সিলেটে যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে। ধলাই নদীর বাধ ভেঙ্গে শিমূলতলা নামক স্থানে সড়ক পানিতে তলিয়ে গেলে মৌলভীবাজার-কমলগঞ্জ সড়কে ঝুকি নিয়ে যান চলাচল করছে।

সরকারিভাবে ৭ উপজেলায় চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২শ ৩৫ মেট্রিক টন। এরমধ্যে বড়লেখা উপজেলার ৪০ মেট্রিক টন, জুড়ী উপজেলায় ৩০ মেট্রিক টন, কুলাউড়া উপজেলায় ১৫ মেট্রিক টন, রাজনগর উপজেলায় ৩০ মেট্রিক টন, মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় ৫০ মেট্রিক টন, শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ২০ মেট্রিক টন, কমলগঞ্জ ৫০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ প্রদান করা হয়। নগদ অর্থ হিসেবে জেলার ৭ উপজেলায় ১২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রাসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক সামছুদ্দিন আহমদ জানান, আউশ ধানের ক্ষতির পাশাপাশি সদ্য রোপনকৃত ৭ উপজেলায় আমন ধান ও সবজির ক্ষতি হয়েছে। তবে এই মুহুর্থে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরুপন করা যায়নি। মনু ও ধলাই নদীর বাঁধ ভেঙ্গে মৌলভীবাজার জেলার ৭টি উপজেলার ৪৯ ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৭১৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ৪৭টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ১লক্ষ ৯৫ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জাবেদ ইকবাল জানান, শুক্রবার বেলা ৩ টায় মৌলভীবাজার শহরের কাছে মনু নদীর পানি চাঁদনীঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীতে ১১ সে.মি ও জুড়ী নদীতে বিপদসীমার ১৯৫ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

কুলাউড়া: কুলাউড়া উপজেলায় মনু নদীর ৩টি স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে টিলাগাঁও ইউনিয়ন প্লাবিত হবার পর নতুন করে আরো অর্ধ শতাধিক গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই নতুন করে মনু নদীর পানি উপজেলার  রাউৎগাঁও, ব্রাহ্মণবাজার, কাদিপুর ইউনিয়নের প্রায় অর্ধ শতাধিক গ্রামে প্রবেশ করেছে। এতে প্লাবিত হয় মানুষের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, কৃষি-জমি। এদিকে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ও জুড়ী নদীর পানিতে হাকালুকি হাওরে পানি ক্রমশই বাড়ছে৷ এতে উপজেলার ভূকশিমইল,  জয়চন্ডী,  কাদিপুর, ভাটেরা, বরমচাল ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হলে তৃতীয় বারের মতো বন্যা দেখা দেয়৷ এছাড়া কুলাউড়া পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে বন্যার পানি ঢুকেছে। এতে উপজেলা পরিষদ সড়কে হাঁটুপানি সমান পানি প্রবাহিত হচ্ছে।   সরেজমিনে দেখা গেছে, মনু নদীর বাঁধ ভাঙ্গায় বন্যার পানি ব্রাহ্মণবাজার-শমসেরনগর সড়কে ওপর প্রায় দুই ফুট, কুলাউড়া-মৌলভীবাজার সড়কের ওপর দিয়ে প্রায় একফুট পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে পানি যত সময় যাচ্ছে ততই নতুন করে বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রবেশ করছে। রাত পর্যন্ত উপজেলার বরমচাল, ভূকশিমইল, ভাটেরা ইউনিয়ন প্লাবিত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। যার কারণে নানা উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা নিয়ে সময় পার করছেন এতদ অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষ।

এদিকে টিলাগাঁও ইউনিয়নে পানিবন্দি মানুষ যারা বাড়িতে আটকা পড়েছিলেন তাদের উদ্ধারে কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, স্কাউটস, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা। মৌলভীবাজার পাউবো জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৯টার তথ্যানুযায়ী মনু নদীর পানি হাজীপুর ইউনিয়নে রেলব্রিজ এলাকায় বিপদসীমার ২৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও সন্ধ্যায় পানি ৩৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর পানি কিছুটা কমলেও ওই পানি উপজেলার নিম্নাঞ্চলের সব এলাকায় প্রবেশ করছে।

জানা যায়, গত মঙ্গলবার টিলাগাঁও ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামে প্রায় ৬ শত ফুট, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মিয়ারপাড়ায় প্রায় ৬০০ ফুট, সকাল সাতটায় চক সালন গ্রামে প্রায় দেড়শত ফুট জায়গা জুড়ে বাঁধ ভেঙে যায়। গত তিনদিন ওই বাঁধগুলো রক্ষায় স্থানীয় কয়েক শতাধিক লোকজন বালুর বস্তা ফেলে প্রাণপণ চেষ্টা চালালেও শেষমেশ রক্ষা করতে পারেননি বাঁধগুলো।  বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় পুরো টিলাগাঁও ইউনিয়নের প্রায় সবক’টি এলাকায় পানি প্রবেশ করে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। পানিবন্দি  মানুষদের উদ্ধারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো : মহি উদ্দিনের নেতৃত্বে ফায়ার সার্ভিস, জনপ্রতিনিধি, স্কাউটসসহ একটি দল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শুক্রবার পর্যন্ত উদ্ধার কাজ চালায়।

অন্যদিকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কুলাউড়া ক্যাম্পের একটি টিম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের সাথে নিয়ে দুর্গত মানুষদের উদ্ধারে বৃহস্পতিবার সারারাত থেকে এখন পর্যন্ত উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত উদ্ধারকৃত মানুষের সংখ্যা আনুমানিক সাত শতাধিক। মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে সৃষ্ট ভাঙনের খবর পেয়ে শুক্রবার বিকেল ৩টায় টিলাগাঁও ইউনিয়নে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম। এসময় তিনি বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে দুর্গত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন।

এছাড়া দুর্গত মানুষের পাশে  ত্রাণ সহায়তা ও রান্না করা খাবার বিতরণ করছে কুলাউড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ঠিকানা ফাউন্ডেশন,  কুলাউড়া উপজেলা স্কাউটস, স্টুডেন্টস মুভমেন্ট কুলাউড়া, হাজীপুর এভারগ্রীণ, কুলাউড়া মুক্ত স্কাউটসহ বিভিন্ন সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা। এদিকে রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিএনপি, ছাত্রদল ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠন, জামায়াতে ইসলাম, শিবির দুর্গত মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। এদিকে আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা মানুষদের সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে একটি মেডিকেল টিম।

কাদিপুর ইউনিয়নের উত্তর কৌলা গ্রামের আউয়াল মিয়া বলেন, মনু নদী ভাঙ্গার কারণে আমার বাড়ির উঠোনে পানি। পানি বাড়লে যেকোন সময় ঘরে প্রবেশ করবে। ২০০৪ এর পর এই প্রথম এবারের বন্যার পানি অনেক ভয়াবহ। টিলাগাঁও ইউপির মিয়ারপাড়া গ্রামের আসুক মিয়া জানান, বাঁধের নিচে আমার পাকার ঘর ছিল। নদীর ভাঙ্গনে আমার ঘরটি পানির স্রোতে পুরোটা ভেঙে নিয়ে যায়। ঘরের কোন জিনিসপত্র বের করতে পারিনি। ৯ সদস্যদের সংসারে কিছু সদস্য আমার আত্মীয়য়ের বাড়িতে আর কিছু সদস্য বাঁধের উপরে আশ্রয় নিয়েছেন। মহান আল্লাহ পাক আমাদের রক্ষা করুন। আমি ছাড়াও আরো ১০-১২ জনের ঘর ভেঙে গেছে। হাজীপুর গ্রামের কনাই মিয়া, পারভেজ মিয়া, জলাল মিয়া, ফয়জু মিয়া, ইন্তাজ মিয়া, ইন্তু মিয়া, মতলিব মিয়া, মন্তাজ আলী, রেনু মিয়া, লতিফ মিয়া ও বাতির মিয়া বলেন, মনু নদীর ভাঙ্গনে আমাদের ঘরবাড়ি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছি।

এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মহি উদ্দিন, সেনাবাহিনীর কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্ণেল সাজ্জাদুল আহসান, মেজর রিয়াদ, ক্যাপ্টেন আদনান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ মুহাম্মদ জহরুল হোসেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শিমুল আলী, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মো: মহসিন, টিলাগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আব্দুল মালিক ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে দুর্গত মানুষের পাশে থেকে উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

উদ্ধার কাজে অংশ নেয়া কুলাউড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ফরহাদ মাহমুদ জানান, গত দুই দিন থেকে আটকে থাকা একজন গর্ভবতী মহিলা,পুরুষ ও শিশুকে উদ্ধার করেছি। গতকাল একাধিক বার চেষ্টার পরেও উদ্বার করা যায়নি। পানির স্রোত অনেক বেশি ছিল। উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনীর সাথে সম্পৃক্ত থেকে আমরা প্রায় সাত শতাধিক মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দিয়েছি।

টিলাগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালিক জানান,  তিরদিনে আমার ইউনিয়নের তিনটি স্থানে মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সংখ্যা এখনো সঠিকভাবে নির্ণয় করা যায়নি। সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত ত্রাণ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। সেই ত্রাণ পরিষদের সদস্যসহ স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীদের সহযোগিতায় দুর্গত মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শিমুল আলী জানান, তাৎক্ষণিকভাবে ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের জন্য শুকনো খাবার ও ১০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যেসব লোকজন তাদের বাড়ি ছেড়ে আসতে চাচ্ছেন না তাদের বাড়িতে ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, মনু নদীর ভাঙ্গন ছাড়া সৃষ্ট বন্যায় কুলাউড়ার ৭টি ইউনিয়নের প্রায় ৭৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মহি উদ্দিন বলেন, ভাঙ্গনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম নিয়ে ছুঁটে যাই। পরে আমাদের সাথে যোগ দেয় সেনাবাহিনী, স্কাউটসসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা। পরে কয়েকটি নৌকা ব্যবস্থা করে ভাঙ্গন কবলিত টিলাগাঁও ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় সাত শতাধিক লোকদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নেয়া হয়েছে। আমাদের সাথে সেনাবাহিনীর একটি টিম পানিবন্দিদের উদ্ধারে কাজ করছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।  পরিস্থিতি মোকাবেলায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছি। মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক সামছুদ্দিন আহমদ জানান, আউশ ধানের ক্ষতির পাশাপাশি সদ্য রোপনকৃত ৭ উপজেলায় আমন ধান ও সবজির অনেক ক্ষতি হয়েছে। তবে এই মুহুর্তে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা যায়নি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ শিমুল আলী বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের জন্য শুকনো খাবার ও চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করার পর সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *