বিগত ১৭ বছর জনগণের জীবনে ছিলো দুঃসহ কালো রাত: জামায়াতের আমির

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বিগত ১৭ বছর বাংলাদেশের জনগণের জীবনে প্রতিটা রাত ছিলো দুঃসহ কালো রাত। মানুষ ছিলো বন্দি কারাগারে, কেউ মন খুলে কথা বলতে পারিনি। শেখ হাসিনা সেটাকে কালিমা হিসেবে জাতীর কপালে লেপে দিতে চেয়েছিলেন, জাতি এখন তার দিকে সেইটা ফিরিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নির্দেশে প্রত্যন্ত সারাদেশে লগি বৈঠার তাণ্ডব চালিয়ে মানুষকে হত্যা করেছে। ফ্যাসিস্টের সূত্রপাত শুরু হয় ওখান থেকেই।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইল শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যোনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ও নিহত পরিবারের সাথে জামায়াতের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াতের আমীর বলেন, টানা ১৭ বছর মানুষ ছিলো বন্দি, কেউ কথা বলতে পারে নাই, ভিক্ষুকদেরও চাঁদা দিতে হতো, ৩০ টাকার পেঁয়াজ ৩০০ টাকা দিয়ে কিনতে হতো, বাবা ও ছেলে দুজন একসাথে খাবার খাচ্ছে সে সময় ছেলেকে তুলে নেওয়া হতো। বিদেশে বসে সাংবাদিকরা প্রতিবাদ করলে তার পরিবারের সদস্যদের উপর অত্যাচার চালানো হয়েছে। এই ১৭ বছর মানুষের জন্য প্রতিটা রাত ছিলো কালো রাত।

বিডিআর বিদ্রোহ ঘটনা নিয়ে তিনি বলেন, পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে ৫৪ জন সামরিক অফিসারকে হত্যা করেছে। মহিলা সদস্যদের নির্যাতিত লাঞ্চিত এবং হত্যা করে ড্রেনে লাশ ভাসিয়ে দিয়েছে। সেই হত্যাকাণ্ডের বিচার আজও হয়নি। এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে সেনাবাহিনীদের কাজ করতে দেয়া হয়নি। অনেক যুবককে দেখেছি বিয়ে করে জেলে গিয়েছে তারপর আর ফিরে আসেনি। এদেশের শত্রুরা জানে জামায়াত ইসলামি ভাঙবে তবু মচকাবে না।

ডাঃ শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতের সিনিয়র নেতাদেরকে তারা সাজানো মামলা দিয়ে শীর্ষ স্থানীয় ১১ জন নেতাকে তারা হত্যা করেছে। ৪২ বছর যাদের বিরুদ্ধে কোন থানায় জিডি কিংবা মামলাও ছিলো না। ৪২ বছর পরে তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরাধী অপরাধে অভিযোগ আনা হলো। মিথ্যা মামলা ও সাজানো স্বাক্ষী দিয়ে একে একে শীর্ষ ১১ জনকে আমাদের বুক থেকে কেড়ে নেয়া হল।

তিনি আরো বলেন, কেউ কারও বিরুদ্ধে সামান্য কথা বললে ডিজিটাল আইনে তাদের ধরে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। এমনকি সাংবাদিকদেরও নির্যাতন করা হয়েছে।বাংলাদেশকে এমন মডেল বানালেন ও রাজপথ তৈরি করলেন গাড়ি দিয়ে রাজপথে যেতে পারলেন না। এমন রাজনীতি করলেন আপনাকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হল। জাতীকে ভাগে ভাগে বিভক্ত করেছেন।

অনুষ্ঠানে জেলা জামায়াতের আমীর আহসান হাবিব মাসুদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ইজ্জত উল্লাহ, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ড.মাও.খলিলুর রহমান, টাঙ্গাইল শহর শাখার সভাপতি মামুন আব্দুল্লাহ, টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মতিউল্লাহ প্রমুখ।

এসময় জামায়াতের নেতা-কর্মী, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমস্বয়ক ও নিহত পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *