কুলাউড়ায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে প্রশাসনের মোমবাতি প্রজ্জলন

কুলাউড়া প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে স্বাধীনতা সৌধ চত্বরে মোমবাতি প্রজ্জলন করেছে উপজেলা প্রশাসন। সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬ টা ০১ মিনিটে স্বাধীনতা সৌধ চত্বরে মোমবাতি প্রজ্জলন কর্মসূচী পালন করা হয়। উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবি ব্যক্তিরা একত্রে এই মোমবাতি প্রজ্জলন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে স্বাধীনতা সৌধ চত্বরে উপজেলা স্কাউটস’র সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমদের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সফি আহমদ সলমান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী, কুলাউড়া থানার অফিসার ইনর্চাজ বিনয় ভূষণ রায়, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ নুরুল হক, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ আব্দুল কাদির, শিক্ষক খায়রুল আলম কয়ছর, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিয়াজুল ইসলাম তায়েফ, ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জাহেদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন নবীন চন্দ্র সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আমির হোসেন, উপজেলা প্রকৌশলী খোয়াজুর রহমান, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সেলিনা ইয়াছমিন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ শিমুল আলী, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ ইব্রাহিম, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন, উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মোঃ মহসিন, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা শাহানারা পারভীন, মহতোছিন আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফয়জুর রহমান ছুরুক, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমীক সুপারভাইজার শফিকুল ইসলাম, জেলা সাংবাদিক ফোরামের সহ-সভাপতি এম মছব্বির আলী, সীমান্তের ডাকের বার্তা সম্পাদক শাহ সুমন, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক কাবুল পাল, উপজেলা শ্রমিকলীগের যুগ্ম আহবায়ক আহবাব হোসেন রাসেল, কালের কন্ঠ প্রতিনিধি মাহফুজ শাকিল, নিউজ টুডের কুলাউড়া প্রতিনিধি শাকির আহমদ, মুক্ত স্কাউট গ্র“পের সাধারন সম্পাদক সামছুদ্দিন বাবু প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সফি আহমদ সলমান বলেন, দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পর লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে এদেশ আমরা পেয়েছি। দেশে এখনো স্বাধীনতা বিরোধীরা সক্রিয়ভাবে ষড়যন্ত্র করে আসছে। তাদের কোন অবস্থাতেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেয়া যাবে না। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়টুকুতেই পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের জ্ঞানী-গুণী ও মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের হত্যা করা হয়েছে। ১৯৭১ এর ডিসেম্বর মাসে স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এসে পাকিস্তানি বাহিনী যখন বুঝতে শুরু করে যে তাদের পক্ষে যুদ্ধে জেতা সম্ভব না, তখন তারা নবগঠিত দেশকে সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও শিক্ষাগত দিক থেকে দুর্বল এবং পঙ্গু করে দেয়ার জন্য নীল নকশা তৈরি করতে থাকে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ ডিসেম্বর রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও আল শামছ বাহিনীর সহায়তায় দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নিজ নিজ গৃহ হতে তুলে এনে নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করে। এই পরিকল্পিত গণহত্যাটি বাংলাদেশের ইতিহাসে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড নামে পরিচিত। বন্দী অবস্থায় বুদ্ধিজীবীদের বিভিন্ন বধ্যভূমিতে হত্যা করা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাদের ক্ষত-বিক্ষত ও বিকৃত লাশ রায়েরবাজার এবং মিরপুর বধ্যভূমিতে পাওয়া যায়। অনেকের লাশ শনাক্তও করা যায়নি, পাওয়া যায়নি বহু লাশ। ১৯৭১ এর ১৪ ডিসেম্বরের নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করে প্রতিবছর সারা দেশের ন্যায় কুলাউড়ায়ও ১৪ ডিসেম্বর পালিত হয়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *