সিলেটে হ্যাটট্রিক জয়ী এমপি সামাদ হেরে গেলেন করোনার কাছে

মো. রেজাউল হক ডালিম : সিলেট-৩ আসনে হ্যাটট্রিক জয়ী মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস হেরে গেলেন করোনা নামক প্রাণঘাতি ভাইরাসের কাছে। ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১১  মার্চ) বেলা ২টা ৪০ মিনিটের সময় শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করে চলে যান না ফেরার দেশে।

মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিলো ৬৫ বছর। তিনি স্ত্রী ও ১ পালকপুত্র রেখে গেছেন।

মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী জুলহাস আহমদের বরাত দিয়ে দক্ষিণ সুরমা প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মুসিক সিলেটভিউ-কে জানান, তাঁকে গত রোববার রাতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তিনি সোমবার সকালে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। বিকালে ফলাফল পজিটিভ আসে। শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে এমপিকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিলো।

জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী এমপি। গত রোববার তিনি ঢাকা যাওয়ার পথে বিমানের মধ্যেই অসুস্থ অনুভব করায় সেখান থেকে সরাসরি তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

১০ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে এ সংসদ সদস্য করোনার টিকা নেন। তারপর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছিলো না।

কয়েক দিন আগেও তাঁর নির্বাচনি এলাকার দক্ষিণ সুরমা, বালাগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তিনি।

উল্লেখ্য, দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ নিয়ে সিলেট-৩ আসন গঠিত। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী বিগত তিন জাতীয় নির্বাচনে হ্যাটট্রিক জয়ী হন। তিনি সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন।

গত (২০১৮ সালের) নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৫৮৭ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির শফি আহমদ চৌধুরী পান ৮৩ হাজার ২৮৮ ভোট।

এর আগে ২০১৪ সালের নির্বাচনে মাহমুদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ৯৭ হাজার ৫৯৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির শফি আহমদ চৌধুরী ৫৪ হাজার ৯৫৫ ভোট পেয়েছিলেন। এ ছাড়া ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন।

টানা তৃতীয়বার জয়ের পর মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী সিলেটভিউ-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমি মানুষের কাছে চিরঋণী ও চিরকৃতজ্ঞ। কারণ তাঁরা টানা তিন বার আমার মনোনয়ন আনতেও সাহায্য করেছেন; নির্বাচিত করতেও সাহায্য করেছেন। আমি তাঁদের প্রত্যাশা বিগত দুটি মেয়াদে মোটামুটিভাবে সম্পন্ন করেছি। আর যেসব কাজ বাকি আছে, সেসব কাজ এই পাঁচ বছরে শেষ করে ফেলব। জনগণের প্রত্যাশা পূরণ এবং সন্তুষ্টির জন্যই আমি এলাকাবাসীর পরামর্শে সব সময় দায়িত্ব পালন করে যাব।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *