কুলাউড়া ও রাজনগরে অবাধে চলছে টিলাকাটা

ডেস্ক নিউজ : কুলাউড়া উপজেলার পশ্চিমে অবস্থিত ব্রাহ্মণবাজার, বরমচাল ও ভাটেরা ইউনিয়ন এবং রাজনগর উপজেলার টেংরা ও মুন্সীবাজার ইউনিয়ন নিয়ে বিশাল পাহাড়ী জনপদ। যেখানে ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা, চা বাগান ছাড়াও রয়েছে সরকারের রিজার্ভ ফরেস্ট। রিজার্ভ ফরেস্টের বেশিরভাগ জায়গা জবর দখল হয়ে গেছে। যার সিংহভাগ খাসিয়া গারো এবং কিছুটা বাঙালিদের দখলে। জবরদখলীয় পাহাড়ী টিলায় গড়ে উঠছে জনবসতি। আর জনবসতি গড়তেই অবাদে কাটা হচ্চে পাহাড় টিলা।

সরেজমিন কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মলবাজার ও রাজনগর উপজেলার মুন্সীবাজার ইউনিয়নের পাহাড়ী জনপদ ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন টিলা থেকে ট্রাক যোগে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। আবার অনেক স্থানে বাড়ি বানাতে জবরদখলকারীরা বিনা টাকায় মাটি দিচ্ছেন। শুধু ট্রাক ভাড়ায় মাটি নিয়ে নিম্নাঞ্চলের মানুষ তাদের ভিটেমাটি উচু করছেন।

কুলাউড়া উপজেলার হলিছড়া চা বাগানে টিলা কেটে রাস্তা নির্মাণ ও চা লাগানোর জন্য মেশিন দিয়ে টিলা কাটার অপরাধে পরিবেশ অধিদপ্তর জরিমানা করে। ফেব্রুয়ারি মাসে কুলাউড়া উপজেলার বাহ্মণবাজার ইউনিয়নের সিরাজনগর চা বাগান সংলগ্ন এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে টিলা কাটার অপরাধে ০৩ ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা করে সর্বমোট ১লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের নবীনগর গ্রামের আব্দুর জব্বারের পুত্র আজিজুল ইসলাম (৩০), পশ্চিম জালালাবাদ গ্রামের মৃত মদরিছ আলীর পুত্র আলিম উদ্দিন (২৮) ও মির্জাপুর গ্রামের আব্দুস সালামের পুত্র রুহেল মিয়া (৩৫)। কিন্তু তারপরও থেমে নেই মাটি কাটা। জরিমানার টাকা পুষিয়ে নিতে ওই চক্রটি যেন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, রাজনগর ইউনিযনের ইটা চা বাগান সংলগ্ন চেয়ারম্যানের টিলা থেকে প্রতিদিন অবাধে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। এই টিলার মালিক মুন্সীবাজার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। এলাকার প্রভাবশালী লোক এবং নিজের টিলা থেকে মাটি বিক্রি করছেন বলে স্থানীয় লোকজনের প্রতিবাদ করার ও কোন সুযোগ নেই।

এদিকে কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের পশ্চিম জালালাবাদ, নবী নগর ও মির্জাপুর এবং সিরাজনগর চা বাগানের পাশর্^বর্তী বরমচাল ইউনিয়নের পশ্চিম সিংগুর থেকে প্রতিদিন সকালে বিকেলে ট্রাক যোগে একটি সংঘবদ্ধচক্র মাটি বিক্রি করে থাকে। মাটি বিক্রিকারী ওই চক্রটি এলাকায় সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত হওয়া কেউ প্রতিবাদ করার সুযোগ পায় না।

মাটি কাটা প্রসঙ্গে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটিএম ফরহাদ চৌধুরী জানান, মাটি কাটার মূহুর্তে খবর পেলে অভিযান চালিয়ে জেল জরিমানা করা যায়। অনেক সময় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যেতে যেতে মাটি নিয়ে ট্রাক পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তারপরও প্রশাসন খবর পেলেই ঘটনাস্থলে গিয়ে টিলাকাটা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।#

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *