কুলাউড়ার ছকাপনে নৌকার সমর্থনে বিশাল নির্বাচনী জনসভা উন্নয়নের মডেল ইউনিয়ন দেখতে চাইলে নৌকায় ভোট দিন-মেয়র ফজলুর রহমান 

বিশেষ প্রতিনিধি : যদি কাঙ্খিত উন্নয়ন পেতে চান। উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় নিজেদেরকে সামিল রাখতে চান। আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চান। তা হলে সেই ¯্রােতেই আপনাদেরকে গাঁ ভাসাতে হবে। এখন এই মহামূল্যবান সিন্ধান্ত আপনাদের। জাতির জনকের সুযোগ্য উত্তরসূরী দেশরতœ জননেত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী জাফর আহমদ গিলমানকে নৌকা প্রতীকে আপনাদের মহামূল্যবান ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন। কাঙ্খিত উন্নয়ন আপনাদের জন্য অপেক্ষা করছে। গতকাল রাতে কুলাউড়া উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নের ছকাপন বাজারে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জাফর আহমদ গিলমানের সমর্থনে আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মো: ফজলুর রহমান। তিনি ওই ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থীকে পরিচয় করিয়ে দিতে গিয়ে বলেন এলাকার উন্নয়নের জন্য একজন যোগ্য মানুষ জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হলে স্থানীয় জনগণ প্রকৃত সেবা ও উন্নয়ন পায়। সে ক্ষেত্রে জাফর আহমদ গিলমান ঐতিহ্যবাহী পরিবারের সন্তান। তার প্রয়াত বড় ভাই ছিলেন এই ইউনিয়নের জননন্দিত চেয়ারম্যান ও আরেক বড় ভাই যিনি কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান। এর আগে যিনি আপনাদের এই ইউনিয়নের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান ছিলেন। জাফর আহমদ গিলমানও জেলা কৃষকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সামাজিক,সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠক এবং জেলার একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তাকে নির্বাচিত করলে আমরা আপনাদেরকে এই সরকারের চলমান উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় শরীক রাখতে সুযোগ পাবো।
প্রধান বক্তা ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেণু। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, কাদিপুরে বিপুল ভোটে নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে ঐক্যবদ্ধভাবে ভোটের মাধ্যমে। এই ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের কোন ব্যক্তি চেয়ারম্যান না থাকায় গত ৫ বছর কোন দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। এবার যোগ্য প্রার্থী হিসেবে নৌকার প্রার্থী জাফর আহমদ গিলমানকে নৌকা মার্কায় বিজয়ী করতে হবে। তিনি ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ছালামের কর্মকান্ডের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয় হলো ইউনিয়নের মানুষের জন্য একটি চেহারা। সেই ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় গত ৫ পাঁচ বছর ধরে একটি নোংরা পরিবেশে কার্যক্রম চলছে। ইউনিয়নের ভেতরে কেউ প্রবেশ করলে দুর্গন্ধে সাধারণ লোকদের অনেক বেগ পেতে হয়। ইউনিয়নে বসার সুন্দর কোন স্থান নেই। তিনি আরো বলেন, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান সফি আহমদ সলমান যখন কাদিপুরে সাড়ে ১৮ বছর চেয়ারম্যান ছিলেন তখন ইউনিয়নের অনেক দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে এবং ইউনিয়নের মানুষ সুখে-শান্তিতে বসবাস করেছিল। গত পাঁচ বছরে এই ইউনিয়নের কোন উন্নয়ন হয়নি। গত পাঁচ বছরে এলজিএসপি, টিআর, কাবিখাসহ সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প থেকে প্রায় ১২ কোটি টাকার বরাদ্ধ দেয়া হয়। কিন্তু বর্তমান চেয়ারম্যান সেই টাকার পুরো উন্নয়ন কাজ করেননি। অনেক টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তাই ইউনিয়নের সামগ্রিক উন্নয়ন করতে হলে এবং উন্নয়নের স্বার্থে জাফর আহমদ গিলমানকে আগামী ২৮ নভেম্বর নৌকা মার্কায় বিজয়ী করতে সকল নেতাকর্মী ও ইউনিয়নবাসীর কাছে বিশেষভাবে আহবান জানান। যারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করে ইউনিয়নের মধ্যে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে চাচ্ছে তাদের আগামী ২৮ নভেম্বর ভোটের মাধ্যমে দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিতে হবে। এবং প্রমাণ করতে হবে কাদিপুর ইউনিয়ন কুলাউড়ার সবক’টি ইউনিয়নের মধ্যে একটি মর্যাদাশীল ইউনিয়ন। এছাড়া তিনি ২৩ নভেম্বর রাতে কাদিপুরে উপজেলা চেয়ারম্যানের পুত্র নাবিলসহ ৩টি ছেলেকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ একেএম সফি আহমদ সলমান। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ২৩ নভেম্বর রাতে আমার কনিষ্ঠ পুত্র নাবিলসহ আরো তিন ছেলেকে কাদিপুরের বর্তমান চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ছালাম, তাঁর ভাই মিজানুর রহমান আলমের নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে গুরুতর আহত করে।
তিনি বলেন, আমার ছেলেরা খবই শান্তিপ্রিয় স্বভাবের। তাঁরা সবাই দেশে পড়াশুনা করে এখন যুক্তরাজ্যে বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত রয়েছে। তাঁরা কখনো এলাকার কারো সাথে খারাপ আচরণ করেনি। দেশে এসেছে তাদের চাচার নির্বাচনী প্রচারণার জন্য। অথচ ক্ষমতায় বসার জন্য প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ছালামের নেতৃত্বে তাঁর ভাইসহ সন্ত্রাসী বাহিনী আমার ছেলের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালায়। আমি প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই এ হামলায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক। আমি আমার কাদিপুরবাসীর কাছে এই ঘটনার বিচার দিলাম। এলাকাবাসী এরকম বর্বোরোচিত হামলার বিচার করবেন। আমরা শান্তির পক্ষে চিরকাল ছিলাম আগামীতেও থাকবো।

তিনি আরো বলেন, কাদিপুর ইউনিয়নে আমি সাড়ে আটারো বছর চেয়ারম্যান ছিলাম, এর আগে আমার মরহুম বড় ভাই মোছাদ্দিক আহমদ নোমান এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। এখন নৌকার প্রার্থী হয়েছে আমার ছোট ভাই জাফর আহমদ গিলমান। আমার গোটা পরিবার আজীবন এই ইউনিয়নের মানুষের সেবার করেছেন আগামীতেও এই ধারা অব্যাহত রাখতে ২৮ নভেম্বর নৌকায় ভোট দেয়ার আহবান জানান। তিনি কাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ছালামের গত ৫ বছরের ফিরিস্তি তুলে ধরে বলেন, ৫ বছরে কাদিপুরে ইয়াবা ও ফেন্সিডিল ব্যবসার ব্যাপক প্রসার ঘটিয়েছেন চেয়ারম্যান ছালাম, তার সাঙ্গ পাঙ্গরা এমন কোন কুকর্ম নেই যার সাথে তারা জড়িত নহে। পুলিশের কাছে একাধিকবার ধরাও পড়েছে, করোনাকালীন সময়ে চেয়ারম্যান ও তার দোষররা চাল চুরি করে এই ইউয়িনের মর্যাদা ক্ষুন্ন করেছে। চেয়ারম্যান ছালামের কুকর্মে মানুষ অতিষ্ট হয়ে তাকে গণধোলাই পর্যন্ত দিয়েছে। নৌকার জোয়ার দেখে এখন সে নানা প্রকার অপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি এসব কথায় বিভ্রান্ত না হয়ে সবাইকে সজাগ থেকে নৌকার পক্ষে কাজ চালিয়ে যাবার অনুরোধ করেন।
নৌকার প্রার্থী জাফর আহমদ গিলমান তাঁর বক্তব্যে দলমতের উর্ধ্বে উঠে কাদিপুরের উন্নয়নের জন্য আগামী ২৮ নভেম্বর নৌকায় ভোট দেয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, কাদিপুরের ইউনিয়নের হারানো গৌরবকে ফিরিয়ে আনতে এলাকার মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। নৌকার গণজোয়ার দেখে বর্তমান চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ছালাম ও তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনী শান্ত কাদিপুরকে উত্তপ্ত করতে নানা ছলচাতুরী ও মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। আমি কাদিপুরের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে এই ইউনিয়নে চাউল চোর, মাদক ব্যবসায়ী এবং জুয়াখোরদের সমূলে বিনাশ করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। তিনি তাঁর কর্মী সমর্থকদের শান্তিশৃংখলা বজায় রেখে নির্বাচন কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ, কাদিপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আবুল খয়ের মাস্টার, কুলাউড়া উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি বদরুল ইসলাম বদর, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ময়নুল ইসলাম সবুজ,
উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি মোঃ আব্দুল কাদির, উপজেলা তাঁতীলীগের সভাপতি মোঃ খালেদ আহমদ, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিয়াজুল তায়েফ, সাধারণ সম্পাদক সম্পাদক আবু সায়হাম রুমেল, যুক্তরাজ্য প্রবাসী তরুণ কমিউনিটি লিডার ইমরান শফি রুমেল ও মো: আবুল মনসুর রাজনসহ এসময় আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও অঙ্গসহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় এলাকার প্রায় সহ¯্রাধিক লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
জেলা কৃষকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌকা প্রতীকে কাদিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী জাফর আহমদ গিলমান তাঁর বক্তব্যে বলেন আমি আপনাদের সন্তান আপনাদেরই স্বজন। আমাকে সুযোগ দিন আমি আমার জন্মমাটির মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও সার্বিক কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করতে চাই। কাদিপুর ইউনিয়নবাসীকে শান্তি ও উন্নয়নে সমৃদ্ধ রাখতে চাই। তিনি ভোটারদের কাছে বিচার চেয়ে বলেন আমার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী (হাবিবুর রহমান সালাম) আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটিয়ে তার দীর্ঘদিনের লালিত ও ভাড়াটে সন্ত্রাসীবাহিনী দিয়ে শান্ত কাদিপুরকে অশান্ত ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে নির্বাচনী ফায়দা হাসিল করতে মরিয়া হয়ে উঠেপড়ে লেগেছেন। যা আপনাদেরও দৃষ্টিগোচর হচ্ছে। গেল মঙ্গলবার রাতে নির্বাচনী প্রচারণা শেষে বাড়ি ফেরার পথে তার ভাতিজাসহ (উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম সফি আহমদ সলমান এর ছোট ছেলে) নাবিল, বিকাশ ও পলকসহ চারজনকে তার প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান সালাম,তার ভাই ও তার লালিত সন্ত্রাসীবাহিনী দিয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে। তাদের অতর্কিত হামলায় নিরাপরাধ ৪ টি তরুণ প্রাণ গুরুতরও আহত হয়ে আজ হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। তার সমর্থক গাড়ি চালক জয়নুলের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে লুটপাট করা হয়েছে। তারপর ওই প্রার্থী (সালাম) ফেসবুক লাইভে এসে মিথ্যার পলাপ করেছেন তা আপনারা নিশ্চয় দেখেছেন। এই বিচারের ভার আপনাদের কাছে ন্যাস্ত করলাম। তিনি চিকিৎসাধীন আহতদের সুস্থতার জন্য দোয়া চান। উল্লেখ্য ২৮ তারিখের নির্বাচনে ওই ইউনিয়নে ৫ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। ওই ইউনিয়নে মোট ভোটার ১৬,৩০৫ জন। ভোট কেন্দ্র ০৯টি।

কুলাউড়ার কাদিপুরে নির্বাচনী হামলায় নৌকার ৪ কর্মী আহত, গ্রেপ্তার ২

কাদিপুরে নৌকার প্রার্থী জাফর আহমদ গিলমানের বিশাল নির্বাচনী জনসভা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *