কুলাউড়া প্রতিনিধি : কুলাউড়ায় কাতার প্রবাসী স্বামীকে হত্যা করে দেশে লাশ পাঠিয়েছে তার সহযোগীরা। পরিকল্পিতভাবে তাকে কাতারে ঘরের ভিতর হত্যা করে হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে তাঁর রুমের সহযোগী কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের পূর্বভাগ গ্রামের বাসিন্দা আব্বাস আলীর চার পুত্র উজ্জল, খায়রুল, আজহারুল ইসলাম ও খছরু গংরা।
১০ জানুয়ারী সোমবার দুপুরে উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের পূর্বভাগ গ্রামের বাসিন্দা নিহত আমিরুল ইসলাম সিমু চৌধুরীর স্ত্রী অসহায় মোছাঃ রোজিনা আক্তার দুই সন্তান সাথে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এমন অভিযোগ করেন।
রোজিনা আক্তার লিখিত সংবাদ সম্মেলনে জানান, তার স্বামী কাতার প্রবাসী আমিরুল ইসলাম সিমু চৌধুরী দীর্ঘদিন কাতারে চাকরীতে কর্মরত ছিলেন। তিনি দোহায় যে বাসায় বসবাস করতেন সেখানে তার চার মামাতো ভাই উজ্জল, খায়রুল, আজহারুল ইসলাম ও খছরু একই সঙ্গে বসবাস করতেন। গত বছরের ৪ এপ্রিল উজ্জল সহ চার ভাই মিলে সিমু চৌধুরীকে পিটিয়ে আহত করে হত্যা করে। স্বামীর ফোন বন্ধ থাকায় তাঁর খোঁজ নিতে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেন রোজিনা। ঘটনার ৭দিন পর স্বামীর মৃতে্যুর সংবাদ ফোনে জানান উজ্জল গংরা। স্বামীর মৃত্যুর সংবাদ গোপন রেখে ৭ দিন পরে তাদেরকে জানানোর জন্য সিমুর পরিবার সন্দেহ করছেন চার ভাই মিলে তাকে হত্যা করে হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন। এমনতাবস্থায় স্বামীর লাশের আশায় সবকিছু চাপা দিয়ে তাদের সাথে কৌশলে যোগাযোগ করলে মৃত্যুর ৯দিন পর লাশ দেশে পঠিয়েছে নিহত সিমু চৌধুরীর মামাতো ভাইয়েরা। ১৩ এপ্রিল কাতার থেকে দশেে লাশ আসার পর আমরা লাশের ময়নাতদন্তের জন্য তাদেরকে অনুরুধ করলেও তারা তা ময়না তদন্ত করে দ্রুত লাশ দাপনের ব্যবস্থা করে ফেলে। বাড়িতে তিনি মেয়ে ও ছেলেকে নিয়ে একাকিত্বভাবে অসহায় অবস্থায় পড়ায় তাদের কোন কথা কর্নপাত করেনি উজ্জলের পরিবার। ওইদিন স্থানীয় চেয়ারম্যান জনাব আলী ও চানঁপুর গ্রামের নাসির উদ্দিনসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিগনের সম্মুখে একটি অঙ্গিকারনামা করে তার স্বামীর লাশ দাপনের ব্যবস্থা করেন। অঙ্গিকারনামায় লেখা ছিল মৃত্যুর ৪০দিন পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জনাব আলী ও ইউপি সদস্য মখদ্দুছ আলীসহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে উচিত বিচার করে দিবেন। পরে গত ২৩ জুলাই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জনাব আলীর সভপতিত্বে গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের উপস্থিতে বৈঠকে সিদ্বান্ত হয় তাদের বরণপোষন বাবত নগদ ৫ লক্ষ টাকা প্রদান করা হবে। কিন্তু আজঅবদি সেই টাকা পরিশোদ করেনি উজ্জলের পরিবাররা। কিছুদিন আগে উজ্জলদের নিকট আত্বীয় সরকারী চাকুরীজীবি কর্ণেল শায়েদ মিনহাজ সিদ্দিকী পল্লব ও নাসির উদ্দিন একলক্ষ টাকার চেক নিয়ে আসলে আমরা তা প্রত্যাক্ষান করে পুরো টাকার জন্য দাবী জানাই। বর্তমানে নাবালক দু’াট সন্তান ফাহমিদা আক্তার চৌধুরী(১৫) ও রিয়াদুল ইসলাম চৌধুরী (১০) কে নিয়ে বিধবা রোজিনা আক্তার অসহায়ত্ব দিনযাপন করছেন।
স্বামী হত্যার ঘটনায় সরকার ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা সহ প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তিনি।
এব্যাপরে প্রবাসী উজ্জলের চাচাতো নাসির উদ্দিন জানান, বিষয়টি আমাদের পারিবারিক। যারা এতিম হয়েছে সেই ছোট ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যৎ আমরা পর্যায়ক্রমে দেখবো। এনিয়ে কেউ যদি গেইম খেলে তাহলে আমাদের কিছু করার নেই।
এব্যাপারে শালিশি বৈঠকের মধস্থ্যকারী উভয় পক্ষের নিকট আত্বীয় কর্ণেল শায়েদ মিনহাজ সিদ্দিকী পল্লবে সাথে তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোন(০১৭৬৯০০৫১২৭) নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।