কুলাউড়ায় পানি সংকট থাকলেও থেমে নেই বোরো আবাদে চাষিরা

স্টাফ রিপোর্টার : কুলাউড়া উপজেলায় অবস্থিত এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওরে বোরো ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। উষ্ণ শীত উপেক্ষা করে এখন দিনরাত জমিতে সেচ দেয়া, হালচাষসহ বোরো ধান চাষের নানা কাজে এখন ব্যস্ত রয়েছে তারা।
সরেজমিন দেখা যায়, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চারা সংগ্রহ, হালচাষ, রোপণ কাজে মাঠে থাকছেন চাষিরা। কনকনে শীত উপেক্ষা করে কৃষকরা বোরো আবাদের জমিতে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করছেন। কেউ জমিতে জৈব সার দিচ্ছেন আবার কেউ পানির পাম্প দিয়ে সেচ দিচ্ছেন। অনেকেই বীজতলা থেকে চারা তুলে জমিতে রোপণ করছেন। শীতে কৃষকরা ভোর বেলা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমিতে কাজ করে যাচ্ছেন। হালচাষে কৃষকদের পাওয়ার টিলার ব্যবহার করতে দেখা যায়। এছাড়াও জমিতে কৃষকরা সার প্রয়োগ করছেন।

তবে এবার বোরো ধান চাষে কৃষকরা পানি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। বিভিন্ন জায়গায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, হাকালুকি হাওরে যে ছোট বড় খাল রয়েছে সেখান থেকে পানি সেচ দেওয়া হচ্ছে। আবাদি জমির পরিমাণ বেশি হওয়ায় তুলনামূলক পানির জোগান নেই। পানির সংকট অতিরিক্ত মাত্রায় দেখা দিলে বোরো চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার মারাত্মক আশঙ্কা রয়েছে। কোনো কোনো জায়গায় খালে বাঁধ দিয়ে পানি আটকানো হয়েছে।
স্থানীয় কয়েকজন কৃষক জানান, বোরো ধান লাগাতে দিনরাত পরিশ্রম করতে হচ্ছে। এছাড়া বোরো আবাদ করতে খরচও বেশি হয়। ধান লাগানোর পর থেকে তিন-চার দিন পরপর সেচ দিতে হয়। আশা রাখি বোরো আবাদ হলে বেশি লাভমান হব।
স্থানীয় কিটনাশক বিক্রেতা মঈন উদ্দিন জানান, কৃষকরা বোরো ধান রোপণ করার কারণে এখন দোকানে সার বেশি বিক্রি হচ্ছে। প্রতিবছর ধানে পোকার আক্রমণ দেখা যায়। এজন্য পোকা দমনের কীটনাশক মজুদ করেছি।
কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এ বছরের বোরো ধান উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের হাইব্রিড টিয়া জাতের বীজ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও ২ বিঘা জমিতে বিশেষ ধানের বীজ ‘বঙ্গবন্ধু ১০০’ দুই জন কৃষককে দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোমিন জানান, এ বছরের বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার ২ শত হেক্টর। এরমধ্যে হাইব্রিড ১ হাজার হেক্টর, উপসী ৭ হাজার ১ শত ৮০ ও স্থানীয় জাত ২০ হেক্টর।উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৮ হাজার ৫ শত ৮৫ মেট্রিক টন। গত বছর ৭ হাজার ৯ শত ১২ হেক্টরের লক্ষ্যমাত্রায় ধান উৎপাদন হয়েছে ৪৬ হাজার ৯ শত ৩৮ মেট্রিক টন।
তিনি আরও জানান, বোরো ধান উৎপাদনে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রায় উৎপাদনে উপজেলা কৃষি অফিস কৃষকদের সহযোগিতা করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *