জুড়ীতে ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে কৃষক গরুর খাবার হিসেবে তৈরি হচ্ছে সাইলেস

হারিস মোহাম্মদ: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার দিগন্ত জোড়া মাঠে ভুট্টার সবুজ পাতায় ছেয়ে গেছে। জমিতে জমিতে শীতের হিমেল হাওয়ায় দোল খাচ্ছে ভুট্টার সবুজ পাতা। জমির মাটি উর্বর ও চাষ উপযোগী হওয়ার পাশাপশি আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবারে ভালো ফলন হয়েছে। ভুট্টা গাছ দিয়ে গরুর খাদ্য হিসাবে তৈরী করা হচ্ছে সাইলেস। তবে অনেকেই ভুট্টা মাড়াই নিয়ে রয়েছেন শঙ্কায়।
জানা গেছে, পশু খাদ্য তৈরিতে ভুট্টার ব্যবহার বাড়ে যাওয়ায় বছরজুড়ে ভুট্টার ভালো চাহিদা থাকে। ফলে কৃষকেরা ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষে খরচ ও শ্রম কম দিতে হয়, তুলনামূলক লাভ হয় বেশি। আর এ কারণে ভুট্টা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়লেও ভুট্টা মাড়াই নিয়ে অনেকেই শঙ্কায় রয়েছেন। কারণ জুড়ী উপজেলায় ভুট্টার চাষ ভালো হলেও মাড়াইয়ের নেই কোন যন্ত্র। যারাই চাষ করছেন, তারা কঠোর পরিশ্রমে হাতে মাড়াইয়ের কাজ করতে হয়। ফলে জুড়ীতে ভুট্টা চাষের সম্ভাবনা ও কৃষকের আগ্রহ থাকলেও আবাদ বাড়ছে না।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যম সিলেট অঞ্চল কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প থেকে ভুট্টা মাড়াইয়ের মেশিন আনা হবে। তবে মেশিন কবে আনা হবে, এ ব্যাপরে কৃষিবিদরা নির্দিষ্ট কোন সময় বলতে পারছেন না।

হাকালুকি হাওরের কৃষি উদ্যোক্তা মো,আলমগীর বলেন, শিল্পপতি নাসির উদ্দিন আহমেদ মিঠুর অর্থায়নে এবছর হাকালুকি হাওরে ২০০’শ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। সময়মত কাজের লোক না পাওয়ায় মেশিন দিয়ে বীজ বপন করতে হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। বর্তমানে ভুট্টা কাটা শুরু হয়েছে। কর্তনকৃত ভুট্টা মেশিন দিয়ে কেটে গরুর খাবারের জন্য সাইলেস তৈরি করা হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সময় মত সার, কীটনাশক ও সেচ দেয়ার কারণে ফলন ভাল হয়েছে। ৫০ লাখ টাকা লাভের আশা করছেন।
আলগীরের চাষ পদ্ধতি দেখে আরও অনেকেই এ বছর ভুট্টা চাষ করছেন। চাষীরা জানান, অন্যান্য চাষাবাদের চেয়ে ভুট্টা চাষে খরচ ও শ্রম কম দিতে হয়, লাভও বেশি হয়। মাড়াইয়ের মেশিন না থাকায় হাতে মাড়াই দিতে হয়। ভুট্টা হাতে মাড়াই দেয়া খুবই কষ্টদায়ক।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ২৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আবহাওয়ার অনুকূলে থাকায় ২০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, জুড়ীতে ভুট্টা চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। ভুট্টা চাষে কৃষকরা আগ্রহ দেখাচ্ছে। তবে মাড়াই মেশিন আসলে চাষীরা আরও আগ্রহী হয়ে উঠবে। আমারা মাড়াই মেশিনের ব্যাপারে উর্ধ্বতন বিভাগে যোগাযোগ করেছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *