যুদ্ধাপরাধ: আমৃত্যু সাজাপ্রাপ্ত আসা‌মি ৮ বছর পর গ্রেপ্তার

হারিস মোহাম্মদ: মানবতা বিরোধী অপরাধে সরাসরি সম্পৃক্ত যুদ্ধাপরাধী এবং বাংলাদে‌শের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর দেয়া আমৃত্যু কারাদন্ড সাজাপ্রাপ্ত দীর্ঘ ৮ বছরের পলাতক আসামী খন্দকার গোলাম রব্বানীকে (৭১) গ্রেপ্তার ক‌রে‌ছে র‌্যাব।
শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ৮০ মৌলভীবাজার জেলার সদর থানার সোনার বাংলা আবাসিক হোটেল থে‌কে র‌্যাব-৯ এর সহ‌যোগীতায় তা‌কে গ্রেপ্তার ক‌রে র‌্যাব-২। গ্রেপ্তার গোলাম রাব্বানী মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ময়মনসিংহ এলাকার কুখ্যাত রাজাকার এবং পাকিস্তানিদের দোসর, অপহরণ, পাশবিক নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, নৃশংস হত্যাকান্ড ও গুমসহ নানা মানবতা বিরোধী অপরাধে সরাসরি সম্পৃক্ত।
র‌্যাব-২ এর সিনিয়র এএসপি সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. ফজলুল হক ব‌লেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ময়মনসিংহ এলাকায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে খন্দকার গোলাম রব্বানীসহ অন্যান্য যুদ্ধাপরাধী রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা অপহরণ, পাশবিক নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, নৃশংস হত্যাকান্ড ও গুমসহ নানা মানবতা বিরোধী অপরাধে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন। একাত্তরের ২৩ ও ২৪ এপ্রিল ময়মনসিংহের গোলকিবাডি বাইলেনের বিখ্যাত ভাস্কর আব্দুর রশিদকে অপহরণ, নির্যাতনের পর দড়ি দিয়ে জিপের পেছনে টেনে নিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা ও মরদেহ গুম এবং একাত্তরের ২ আগস্ট ত্রিশাল থানার বৈলর হিন্দুপল্লী ও মুন্সীপাড়ায় অগ্নিসংযোগ, সেন্টুকে গুলি করে হত্যা ও দুইজন হিন্দুকে গুলি করে আহত, শহীদ আ. রহমানের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় রাজাকার বাহিনীর সক্রিয় সদস্য হিসেবে গ্রেপ্তার খন্দকার গোলাম রব্বানী মানবতাবিরোধী কাজে সরাসরি অভিযুক্ত।
এছাড়াও তিনি যুদ্ধকালীন সময়ে জামায়াত ইসলামীর সক্রিয় সদস্য ছিলেন। ২০১৫ সালের ১৯ মে ময়মনসিংহের আদালতে ত্রিশালের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহমানের স্ত্রী রহিমা খাতুন এ মামলা করেন। ময়মনসিংহের ১ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক এজাহারটি গ্রহণ করে ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তার বিরুদ্ধে ৫টি পৃথক অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল খন্দকার গোলাম রব্বানীর বিরু‌দ্ধে গ্রেপ্তা‌রি পরোয়ানা জারি করেন।
দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রমের পর গত ২০ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাল খন্দকার গোলাম রব্বানীর বিরুদ্ধে আমৃত্যু কারাদন্ড সাজা প্রদান করেন। গোলাম রব্বানী মামলার দায়েরের পর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজর এড়িয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিলেন।
র‌্যাব কর্মকর্তা ব‌লেন, রায় ঘোষণার পর হতে র‌্যাব-২ এর বিশেষ গোয়েন্দা দল বিভিন্ন তথ্য পর্যালোচনা করে অভিযান শুরু করে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যুদ্ধাপরাধী গোলাম রাব্বানী এর অবস্থান মৌলভীবাজারে নিশ্চিত হয়ে র‌্যাব-২ ও র‌্যাব-৯ যৌথ অভিযান চা‌লি‌য়ে তা‌কে গ্রেপ্তার ক‌রে। তার বিরু‌দ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে  জানা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *