নারী এনজিও কর্মীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

চট্টগ্রামের রাউজানে সমবায় সমিতির (এনজিও) এক নারীকর্মীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৩১ মার্চ) বিকাল সাড়ে তিনটায় রাউজান পৌরসভার ২নম্বর ওয়ার্ডের মোবারকখীল গ্রামের মনো সারাং বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত জুবলি আকতার (২৮) ওই এলাকার আবদুস সালামের মেয়ে।

নিহতের পরিবারের দাবি, সমিতির আর্থিক লেনদেন ও চাকুরি নিয়ে বিরোধের জেরে জুবলি আক্তার আত্মহত্যা করেছে।

জানা যায়, তার লাশের সঙ্গে তিন পৃষ্ঠার একটি চিরকুট পেয়েছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৮ বছর আগে জুবলি আকতারের সঙ্গে কদলপুর ইউনিয়নের সোমবাইজ্জা হাট এলাকার জনৈক আজিজের বিয়ে হয়। পরে দাম্পত্য কলহে সে বিয়ে ভেঙ্গে যায়। পরে তার একটি ছেলে সন্তান হয়।

বেঁচে থাকার জন্য স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা বৈশাখী শ্রমজীবী সমবায় সমিতিতে হিসাব রক্ষকের চাকরিতে যোগদান করেন। তার ছেলে জিদানের বর্তমান বয়স ৮বছর।

তার লাশের সঙ্গে থাকা পুলিশ যে চিরকুট উদ্ধার করেছে সেখানে লেখ আছে- ‘স্যার ওবাইদুল হক (উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা), আসসালামু আলাইকুম। স্যার ওরা আমাকে এই পৃথিবীতে আর থাকতে দিল না। বৈশাখীর (সমবায় সমিতি) জন্য আমি এই পৃথিবী থেকে চলে যেতে বাধ্য হলাম। আপনার থেকে পাওনা ৪০,০০০ (চল্লিশ হাজার) টাকাগুলো মাকে দিয়ে দিবেন, প্লিজ স্যার। আমার মা যেন যারা টাকা পাবে তা পরিশোধ করতে পারে। আপনি দশ দিনের মধ্যে দিয়ে দিবেন স্যার প্লিজ।’

আরেক পৃষ্ঠায় লিখা আছে- আমি যদি মারা যাই তার একমাত্র দায় হল বৈশাখী অফিসের মালিক পপি, সাগর, অপুল ও পপির বাবা আবদুল কাইয়ুমের। ওরা সবাই মিলে আমার মাথায় মিথ্যা অপবাদ দেয়। পপির বরের সঙ্গে আমার সম্পর্ক আছে অপবাদ দিয়ে অফিস থেকে বের কর দেয়। আমি নিজে অফিস নিতে চাইলে সেখানে বাধা দেয়, অন্য অফিসে কাজ নেওয়ার পথও বন্ধ করে দেয়। ওরা আমার বেঁচে থাকার সমস্ত পথ বন্ধ করে দিয়েছে। আর কোনো উপায় না পেয়ে আমি নিজের জীবন দিয়ে গেলাম। আর এ রকম অমানুষের কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তির দাবি জানিয়ে গেলাম দেশের প্রচলিত আইন ও সরকারের কাছে। ইতি জুবলী।’

জুবলির টাকা পাওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে রাউজান উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা ওবাইদুল হক বলেন, ‘আমি তার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়েছিলাম। জিলান নামে সমবায় সমিতির রেজিস্ট্রেশনের জন্য দিয়েছিল। তিনি সেই ৫ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার কথা জানালেও ৪০ হাজার টাকা লেনদেন অস্বীকার করেন।’

এই প্রসঙ্গে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, ‘গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। চিরকুটে কি লিখা আছে তা তদন্ত সাপেক্ষ, আগেই কিছু বলা যাচ্ছে না।’

—-ইউএনবি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *