জুড়ীতে সেহরীর পূর্বে দু পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৭

হারিস মোহাম্মদ: মৌলভীবাজার জেলার জুড়ীতে সেহরীর পূর্বে দু-পক্ষের সংঘর্ষে ৭ জন আহত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) রাত দেড়টায় উপজেলার পূর্বজুড়ী ইউনিয়নের নয়াবাজার এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায়
স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সহ ৭ জন  আহত হলে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। আহতদের মধ্যে ৫ জনের  অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় দুজনকে পুলিশ আটক করেছে।
জানা যায়, উপজেলার পূর্ব-জুড়ী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ওবায়দুল ইসলাম রুয়েল ও পূর্ব বড়ধামাই গ্রামের ছায়াদ আহমদের মধ্যে  দীর্ঘ দিনের বিরোধ চলে আসছিল। গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকে কিছু লোক মোটরসাইকেল চুরির চেষ্টার অভিযোগে ছায়াদের ছেলে দেলোয়ার হোসেনকে (২১) মারধর করে ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে টহল পুলিশের দল সেখানে গিয়ে দেলোয়ারকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান।
এঘটনার পর ইউপি চেয়ারম্যান রুয়েল উদ্দিন জুড়ীতে আসার পথে নয়াবাজার এলাকায় ছায়াদ আহমদ ও ইউপি চেয়ারম্যান রুয়েল উদ্দিনের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষ উভয় পক্ষের ৭ জন আহত হয়। আহতরা হলেন- পূর্ব বড়ধামাই গ্রামের ছায়াদ আহমদের ছেলে  দেলোয়ার হোসেন (২১), সুরমান আলীর ছেলে মারুফ আহমদ (২০), মোস্তফা উদ্দিনের ছেলে রায়হান আহমদ (২০), সেলিম উদ্দিনের ছেলে সাইফুদ্দিন (২০), মোবারক আলীর ছেলে আনসার আলী (৫৫), সায়াদ উদ্দিনের ছেলে জায়েদ (২০), মোবারক আলীর ছেলে সায়াদ উদ্দিন (৪৮)। এ ঘটনায় সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এখনো থানায় কোন মামলা হয়নি‌। তবে উভয় পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ ৫৪ ধারায় পূর্ব বড়ধামাই গ্রামের ছায়াদ আহমদের ছেলে দেলোয়ার হোসেন অরফে জুনেদ (২১) ও বড়ধামাই গ্রামের সুরমান আলীর ছেলে মারুফ আহমদ রুমান (২১) কে গ্রেফতার দেখিয়ে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেন। পরে মারুফ জামিনে ছাড়া পান।
সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত ছায়াদ আহমদ রাতে পুলিশ ও কর্তব্যরত ডাক্তারের উপস্থিতিতে জানান, পূর্ব জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রুয়েল উদ্দিন, তাঁর ভাই খালেদ, জাবেদ সহ তাঁর পক্ষের বেশ কয়েকজন আমাদের উপর হামলা করেছে।
এ ব্যাপারে পূর্ব জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রুয়েল উদ্দিন বলেন, পূর্ব বড়ধামাই গ্রামের সায়েদ আহমদের ছেলে দেলোয়ার হোসেন  জুনেদ নয়াবাজার এলাকা থেকে একটি মটরসাইকেল চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় এরালিগুল এলাকা থেকে তাকে আটক করে আমার বাড়ীতে নিয়ে যাই। এরপর পুলিশকে খবর দিলে থানার এসআই সিরাজুল ইসলাম তাকে থানায় নিয়ে যায়। পরে এ ঘটনার বিষয় জানতে জুড়ী থানায় যাওয়ার পথে নয়াবাজার এলাকায় সায়েদসহ বেশ কয়েকজন আমাকে হত্যা হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে। পরে আমাকে বাঁচাতে আমার  সাথের লোকজন এগিয়ে আসলে  সায়েদের পক্ষের  লোকদের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
আলাপকালে থানার ওসি (তদন্ত) হুমায়ূন কবির জানান, সংঘর্ষের বিষয়ে কোন পক্ষই থানায় মামলা করেন নি। তবে এ ঘটনায় ৫৪ ধারায় পূর্ব বড়ধামাই গ্রামের সায়েদ আহমদের ছেলে দেলোয়ার হোসেন অরফে জুনেদ (২১) ও বড়ধামাই গ্রামের সুরমান আলীর ছেলে মারুফ আহমদ রুমান (২১) কে গ্রেফতার দেখিয়ে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *