কুলাউড়ায় মৌরসী জমি ভোগদখল ও মামলী দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

কুলাউড়া প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় মৌরসী জমি ভোগদখল ও একাধিক মামলী দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন রুবেল আহমদ নামের এক ভুক্তভোগী। রোববার (৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পৌরসভার মনসুর এলাকায় নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন মৃত দুলাল মিয়া দলার ছেলে রুবেল আহমদ। লিখিত বক্তব্যে রুবেল আহমদ জানান, কুলাউড়া পৌর এলাকার উছলাপাড়া গ্রামে আলালপুর মৌজায় মৌরুসীসূত্রে প্রাপ্ত ২৩৩ ও ২৩৭ দাগে মোট ৪৬ শতক জমি জবর দখল করে রেখেছে উছলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা সুলতান মিয়া গং। ওই মৌরসী জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সুলতান গংয়ের সাথে বিরোধ চলে আসছে। সুলতান মিয়ার যোগসাজশে আমাদের ও আমার দুই ফুফাতো ভাই প্রবাসী মাহমুদ আলী ও আতির মিয়ার ৪৬ শতক জমি একটি ভূমি খেকোচক্র দীর্ঘ দুই দশক ধরে জোরপূর্বক ভোগ দখলে করে খাচ্ছেন। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে গত ৫ আগস্টের পর কুলাউড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সেনাবাহিনীর কুলাউড়া ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন বরাবরে পৃথক দুটি অভিযোগ করি। এরপর সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহুরুল হোসেন আমাদের ও প্রতিপক্ষকে সুলতান মিয়া গংকে নিয়ে তাঁর কার্যালয়ে শুনানী করেন। শুনানীতে সুলতান গংরা কোন বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) ৪৬ শতক জমির প্রকৃত মালিক আমি প্রবাসী রুবেল আহমদ ও প্রবাসী মাহমুদ আলীকে জমি বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। ওইসময় শুনানীতে সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও বাড়িতে এসে খুবই চতুর লোক সুলতান মিয়া এসিল্যান্ডের সিদ্বান্ত অমান্য করেন। আমরা জমি পরিমাপ এবং সাইনবোর্ড টাঙ্গানোর জন্য গেলে সুলতান মিয়ার নেতৃত্বে নারী পুরুষসহ ১২-১৩ সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করলে আমি আহত হই। এদিকে এসিল্যান্ডের নির্দেশনা না শুনে আমিসহ আমার আত্মীয় মাহমুদের উপর মৌলভীবাজার আদালতে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন সুলতান মিয়া। আদালত মিথ্যা মামলাটি একদিনের শুনানীতে খারিজ করে দেন। এরপরেও সুলতান গং বসে থাকেনি। একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করছে। স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিষয়টি নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিলেও সুলতান গংরা সমাধানে বসতে রাজি হননি। এদিকে গত ১২ নভেম্বর আমাদের জমিতে সবজি চাষাবাদ করতে গেলে সুলতান গং আমাদের বাধা দেয়। এসময় প্রতিবাদ করায় সুলতান মিয়া, সোলেমান মিয়া, আছকর মিয়া, আক্তার মিয়া,কাউসার মিয়া, দিলারা বেগম, লিজা বেগম, আমেনা খাতুন, আনিকা সুলতানা মৌ, লাইলী বেগম ও মিলি বেগমসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী আমার ওপর উপর হামলা চালানোর চেষ্টা করে। এসময় স্থানীয় লোকজন এসে আমাকে রক্ষা করে। সুলতান গং আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে আমাদের মৌরসী জমিতে যেতে দিবেনা বলে হুমকি দেয়। প্রতিপক্ষরা আমাদের মৌরসী জমিতে কাজ করতে আসলে আমার পরিবারের কেউ বাধা নিষেধ দিলে তারা যেকোন সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে। এসব বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে গত ১৮ নভেম্বর সুলতান গংয়ের বিরুদ্ধে কুলাউড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। অভিযোগের ভিত্তিতে কুলাউড়া থানার এএসআই মো. মানিক মিয়া তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে জমা দেন। পরবর্তীতে ওই অভিযোগের ভিত্তিতে সুলতান গংয়ের ১১ জন আসামী আদালতে হাজির হন এবং গত ৮ ডিসেম্বর দ্বিতীয় তারিখে আসামীরা আদালতে হাজির হলেও ১২ ডিসেম্বর ৯জন আসামী হাজির হন কিন্তু দুইজন আসামী হাজির না হওয়ায় আদালত আসামীদের মধ্যে সোলেমান মিয়া ও আনিকা সুলতানা মৌ এর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। পরে কুলাউড়া থানা পুলিশ তাদের আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করে। প্রতিপক্ষ সুলতান গং খুবই উগ্র, দাঙ্গাবাজ, পরধনলোভী,ভূমিখেকো ও খারাপ প্রকৃতির লোক। তারা আমাদের মৌরসী সম্পত্তি দখলে রেখে আমাদের প্রাপ্ত জমি থেকে বঞ্চিত করে রাখার নানা পায়তারা চালাচ্ছে। সুলতান গং কর্তৃক একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করে আমাকে হয়রানি করায় আমি প্রবাসে যেতে পারছি না। এতে আমার কয়েক লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। আমি প্রশাসনের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি, আমাদের মৌরসী সম্পত্তি উদ্ধারে যেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা প্রদান করা হয়। #

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *