প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ : কমলগঞ্জ উপজেলায় পিপিআর রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় দুইশতাধিক ছাগলের মৃত্যু হয়েছে। গত এক মাসে এসব ছাগল মারা গেছে। ৯ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ আক্রান্ত এলাকায় ছাগলের মধ্যে ভ্যাক্সিন প্রদান শুরু করেছে।
জানা যায়, উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে পিপিআর রোগে আক্রান্ত হয়ে গত এক মাস যাবত বাচ্চাসহ ছাগলের মড়ক শুরু হয়। স্থানীয়ভাবে প্রাণি সম্পদ বিভাগের কোন চিকিৎসক নেই। ফলে চিকিৎসা সুবিধা বঞ্চিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্তরা কয়েক লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি গুণতে হয়েছে। তবে প্রাণি সম্পদ বিভাগ এটিকে ঠান্ডাজনিত ও পিপিআর রোগ বলে দাবি করছে।
মাধবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের খামারি আতাউর রহমানের ৩১টি, ছয়সিড়ি গ্রামের আব্দুল আলিমের ২টি, পারোয়াবিল গ্রামের কৃষক ছবুর মিয়ার ১৩টি, রাবেয়া বেগমের ১৪টি, একই এলাকার গোপাল নুনিয়ার ৬টি, ইসমাইল মিয়ার ৫টি, চা শ্রমিক অতুল নুনিযার ১০টি, রামচন্দ্র গড়ের ১০টি, সুমন দাসের ৫টি, শ্রীনাত ভরের ৩টি, শ্রীনাত দাসের ২টি, সঞ্জয় বীনের ১৩টি, গোপাল নুনিয়ার ৫টি, মাধবপুর চা বাগান ৮নম্বর লাইনের শ্রমিক সঞ্জয় দাসের ১৯টি, বাগানের রঞ্জু দাসের ১৭টি, মাধবপুর বাজারের ইকবার হোসেনের ২টি, রাম নারায়ণ যাদবের ২টি, কাটাবিল গ্রামের সুজিত কাহারের ৩টি, রাম দয়াল ভরের ৪টি, রুহিত লাল ভরের ২টি, বসন্ত কৈরীর ২টি, শ্রীরাম ভরের ২টি, ইসলামাবাদ গ্রামের কানু মিয়ার ২টি, সুবল মিয়ার ১৩টি ছাগল মারা গেছে। এছাড়াও পিপিআরে সংক্রমতি পার্শ¦বর্তী অন্যান্য গ্রামে আরও প্রায় শতাধিক ছাগল মারা গেছে এবং কয়েক শতাধিক আক্রান্ত হয়েছে।
চা শ্রমিক গোপাল নুনিয়া, সুবল মিয়াসহ অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, এতোগুলো ছাগল মারা যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছেন। তবে এ রোগ সম্পর্কে তাদের কোন ধারণাই নেই। স্থানীয় পশু চিকিৎসক রামভজন ভরকে এনে অসুস্থ ছাগলের চিকিৎসা করতে গিয়ে জানতে পারেন এটি পিপিআর রোগ।
মাধবপুর ইউপি চেয়ারম্যান পুস্প কুমার কানু সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি গত দু’তিন দিন ধরে এই সংবাদ শুনছি। তবে এতে মাধবপুর ইউনিয়নেই দুই থেকে আড়াই শতাধিক ছাগল মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হেদায়াত উল্যাহ বলেন, মাধবপুর ইউনিয়নের চা বাগানসহ কয়েকটি গ্রামে ছাগলের মৃত্যুর সংবাদ শুনে মঙ্গলবার দুপুরে ভ্যাটেনারী সার্জন শিমুল কান্তি মজুমদারের নেতৃত্বে একটি দল আক্রান্ত এলাকা তদন্ত করেন। অধিকাংশ ছাগল মারা গেছে পিপিআর রোগে। অন্য ছাগল ঠান্ডায় শ্বাসকষ্টে ভোগে মারা গেছে। তবে ঠিক কি পরিমাণ ছাগল মারা গেছে তা আরও তদন্ত শেষে বলা যাবে বলে তিনি জানান।