শ্রীমঙ্গলে তামিম রিসোর্টে দম্পতির রাত্রিযাপন : গোপনে অন্তরঙ্গ দৃশ্য ধারণ করে টাকা দাবী

এ ঘটনায় শ্রীমঙ্গল থানায় ১০ ফেব্রুয়ারী বুধবার রাতে ভিকটিম কুলাউড়া কালা রায়ের চর এলাকার মুক্তিযোদ্ধা সোহাগ মিয়ার ছেলে রিয়াজউদ্দিন পর্নোগ্রাফী নিয়ন্ত্রণ আইনে দুই অভিযুক্তকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। এমন স্পর্শকাতর ঘটনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্রীমঙ্গল থানার এসআই আল আমিন এর নেতৃতে একদল পুলিশ মামলা দায়েরের ২৪ ঘন্টার ভিতরে কানাইঘাট উপজেলা থেকে রেজোয়ান ও শহরের বিরাইমপুর এলাকা থেকে খালেদকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তারা সিলেট জেলার কানাইঘাট উপজেলার চড়িপারা এলাকার আবুল কালামের ছেলে রেজোয়ান (২৩) ও শহরের বিরাইমপুর এলাকার মৃত শফিক মিয়ার ছেলে খালেদ মিয়া (২৭) বলে জানা যায়।

শ্রীমঙ্গল থানা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৯ জুলাই শ্রীমঙ্গলে কুলাউড়া থেকে বেড়াতে আসেন ওই দম্পতি। রাত্রিযাপনে তারা ওঠেন উপজেলার মৌলভীবাজার সড়কের তামিম রিসোর্টে। রিসোর্টের দুই কর্মচারী টিস্যু বক্সের ভিতরে গোপন ক্যামেরা স্থাপন করে দম্পতির শারীরিক মেলামেশার দৃশ্য ধারণ করে। ঘটনার কিছু দিন পর একটা মোবাইল ফোনে মামলার বাদী রিয়াজ উদ্দিনের ইমু নাম্বারে ফোন করে রেজোয়ান জানায় তাদের নোংরা ছবি ও ভিডিও আছে এবং ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করতে বলে ফোনের লাইন কেটে দেয়। তারপর তারা গত বছরের ২১ অক্টোবর ‘নাদিরা আক্তার রুমি’ নামক একটা ফেইক আইডি থেকে ফেইসবুক ম্যাসেঞ্জারে রিয়াজ উদ্দিন এর নিকট তাদের গোপন মেলামেশার দৃশ্যের ছবি পাঠায়। পরবর্তীতে ওই নাম্বার থেকে বাদীর ইমু নাম্বারে কল করে হুমকি দিয়ে জানায় এই ছবি ও ভিডিও ফেরত পেতে হলে ৫০ হাজার টাকা তাদের দিতে হবে। যদি টাকা না দেয়া হয় তাহলে তাদের এই ভিডিও ও ছবি ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দিবে বলে হুমকি দিতে থাকে। এদিকে এমন স্পর্শকাতর ঘটনায় রিয়াজ উদ্দিন দম্পতি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।
তিনি তাদের সাথে আপসের চেষ্টা চালিয়ে যান। পাশাপাশি আইনের আশ্রয় নিবেন কিনা চিন্তা করতে থাকেন। বাদীর নিকট থেকে কোন সাড়া না পেয়ে ইতিমধ্যে তারা ফেইসবুকে তাদের বন্ধু ও আত্মীয় স্বজনের কমেন্ট ও ম্যাসেঞ্জারে তাদের নোংড়া ছবি ও ভিডিও পোস্ট করতে থাকে। শেষমেষ এই দম্পতি শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের শরণাপন্ন হন। ফলে পুলিশ দ্রুত তাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এ সময় তাদের নিকট থেকে দুটি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ উদ্বার করে এর মধ্যে দম্পতির বিভিন্ন শারীরিক মেলামেশার ছবি ও ভিডিও পাওয়া যায় বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আল আমিন জানান। প্রাথমিকভাবে আসামীদ্বয় পুলিশের নিকট তাদের অপকর্মের কথা স্বীকারোক্তি দেয় বলে জানা যায়।

এ ঘটনায় তামিম রিসোর্টের স্বত্ত্বাধীকারী হারুন মিয়ার নিকট তার দায় কতটুকু রয়েছে জানতে চাইলে তিনি জানান,কর্মচারীরা কি করেছে তা আমার জানা নেই। তারা একসময় আমার এখানে ছিল,এখন নাই। খালেদ এস কে ডি আমার বাড়ী রিসোর্টে এখন চাকরী করে আর রেজোয়ান শুনেছি তার বাড়ীতে চলে গেছে। এ ঘটনায় তার কোন দায় নেই বলে অস্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল থানার ওসি তদন্ত হুমায়ুন কবির জানান, অভিযোগ পাবার পর আমরা দ্রুত মূল দুইজন আসামীদের গ্রেফতার করি। তাদের নিকট থেকে মোবাইল ফোন ও ল্যাবটপ জব্দ করা হয়। আসামিদের রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে। এ ঘটনায় মালিক পক্ষের কোন সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা তা তদন্ত করে বের করা হবে বলে তিনি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *